দীর্ঘক্ষণ রোদে কাজ করতে হলে, তাঁদের ত্বকে সরাসরি প্রভাব ফেলে সূর্যালোক। অতিবেগুনি রশ্মির দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব চিরস্থায়ী ক্ষতি করতে পারে ত্বকের। এর ফলে সময়ের আগেই বয়সের ছাপ পড়ে যায় ত্বকে, হতে পারে আরও গভীর ক্ষতি। একেই বলে ফোটোএজিং বা ডার্মাটোহেলিয়োসিস। মাঠে-ঘাটে-রাস্তায় ঘুরে কাজ করেন যাঁরা, তাঁদের সকলের ত্বকেই এই ফোটোএজিং চোখে পড়ে সবচেয়ে বেশি।
ডার্মাটোলজিস্ট সন্দীপন ধর জানালেন, সাধারণত ষাট বছর বয়সের পরে যেখানে চামড়ায় ভাঁজ বা বলিরেখা আসার কথা, অনেক সময়েই দেখা যায় তা আগেই চলে এসেছে। এর জন্য ত্বকে সূর্যালোকের প্রভাবকে প্রত্যক্ষ ভাবেই দায়ী করা যায়। ‘‘ইউভি এ এবং বি থেকে ফোটোইনডিউজ়ড ড্যামেজ অনেক সময়ে ত্বকের ক্যানসারের আশঙ্কা বাড়িয়ে দেয়। রোদ তো বটেই, এ ছাড়া যাঁরা কৃত্রিম চড়া আলোর সামনে অনেকক্ষণ কাজ করেন, যেমন অভিনেতারা, তাঁদের ত্বকেও ফোটোএজিং দেখা যায়,’’ বললেন ডা. ধর। সমুদ্র বা পাহাড়ে দীর্ঘক্ষণ রোদে উন্মুক্ত দেহে থাকলেও ত্বকের পরিবর্তন হয় দ্রুত।
কী ধরনের ক্ষতি হয়?
ফোটোএজিংয়ে যে সমস্যাগুলি প্রত্যক্ষ ভাবে দেখা যায়, তা হল—
ডায়াবিটিস কিংবা থাইরয়েডের মতো অসুখ এই ফোটোএজিং আরও বাড়িয়ে তোলে। পলিমরফাস লাইট ইরাপশন হয় অনেকের ত্বকে, অর্থাৎ রোদে গেলেই ত্বকে অ্যালার্জি হয়। এ ছাড়া যাঁরা রোদের মধ্যে গাছ নিয়ে পরিচর্যা করেন, তাঁদের ফাইটোফোটোডার্মাটাইটিস হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এতে ত্বকে ফোস্কার মতো বা পোড়া ভাব দেখা দিতে পারে।
প্রতিকার কী?
রোদের হাত থেকে ত্বককে বাঁচিয়ে চলাই এর একমাত্র সমাধান। তবে যাঁদের কাজের সূত্রে রোদে দীর্ঘক্ষণ থাকতেই হয়, তাঁরা প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিতে পারেন, যেমন—
ডা. ধরের মতে, ফোটোএজিংয়ের চিকিৎসায় অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টসের ব্যবহার রয়েছে। গ্লাইকোলিক অ্যাসিড, ভিটামিন সি এবং ই সমৃদ্ধ খাবার ও সাপ্লিমেন্টস দরকার। তাঁর কথায়, ‘‘রেটিনয়েডও ফোটোএজিংকে প্রতিরোধ করে। কখনও ক্রিম, কখনও বা ওষুধের মাধ্যমে এটা দেওয়া হয়।” এ ছাড়া সবুজ আনাজ, ফল খেতে হবে, যা ত্বককে ভিতর থেকে রক্ষা করবে। এই সাবধানতা মেনে চললে উপকার পাওয়া যাবে।