ট্রাইগ্লিসারাইডের বেড়ে যাওয়া শরীরের পক্ষে ভাল নয় মোটেই
Triglyceride

খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তনই ওষুধ

সেডেন্টারি লাইফস্টাইলে ট্রাইগ্লিসারাইডস বেড়ে যাওয়ার ঘটনা বেশি দেখা যায়। শরীরের জন্য তা মোটেও কাম্য নয়।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০২১ ০৯:১৭
Share:

—প্রতীকী চিত্র

শরীরে বিভিন্ন ধরনের ফ্যাটের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। কোলেস্টেরল (এইচডিএল, এলডিএল)-এর মতোই ট্রাইগ্লিসারাইডেরও চাহিদা রয়েছে। মস্তিষ্ক, নার্ভের গঠনে এর ভূমিকা রয়েছে। কিন্তু সেডেন্টারি লাইফস্টাইলে ট্রাইগ্লিসারাইডস বেড়ে যাওয়ার ঘটনা বেশি দেখা যায়। শরীরের জন্য তা মোটেও কাম্য নয়।

Advertisement

ট্রাইগ্লিসারাইড বেড়ে গিয়েছে, বুঝবেন কী করে?

লিপিড টেস্ট করালেই ট্রাইগ্লিসারাইডের পরিমাণ জানা যায়। সাধারণত শরীরের ওজন অস্বাভাবিক বাড়লেই দেখা যায় ট্রাইগ্লিসারাইডের পরিমাণও বেড়েছে। স্থূলকায় ব্যক্তিদের শরীরে এর পরিমাণ রোগা ব্যক্তিদের তুলনায় বেশি থাকে। শরীরের মধ্যপ্রদেশ ভারী হতে থাকলে বা ভুঁড়ি দেখা দিলে, তা ট্রাইগ্লিসারাইড বাড়ার লক্ষণ হতে পারে।

Advertisement

কী কী ক্ষতি হতে পারে?

শরীরের রক্তবহনকারী নালির দেওয়ালে ট্রাইগ্লিসারাইড জমতে থাকে। এর ফলে ওই নালিগুলি সরু হতে হতে, রক্ত চলাচলও বন্ধ হয়ে যেতে পারে। হার্ট, ব্রেনে যে কোনও ধরনের স্ট্রোকের মূলে থাকতে পারে রক্তনালিতে অতিরিক্ত ট্রাইগ্লিসারাইডের জমে যাওয়া। কিডনির ক্ষতিও হতে পারে এই কারণে। এ ছাড়া পেটের মধ্যে প্যানক্রিয়াসের পাশে ট্রাইগ্লিসারাইড জমে ক্ষতি করতে পারে।

কোন কোন খাবার বর্জনীয়?

অনেকের ধারণা, চর্বিজাতীয় খাবার বেশি খেলেই ট্রাইগ্লিসারাইড বাড়ে। আসলে কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার বেশি খেলেই তা লিভারে রূপান্তরিত হয়ে ট্রাইগ্লিসারাইড তৈরি হয়। কার্বোহাইড্রেটের মধ্যে সুক্রোজ় জাতীয় খাবার, যেমন ভাত, আলু অতিরিক্ত খাওয়ার ফলেই এটা হয়।

এ ছাড়া অতিরিক্ত মদ্যপান, কফি খাওয়ার ফলেও ট্রাইগ্লিসারাইড বাড়তে পারে।

কোন কোন খাবারে কমে?

ট্রাইগ্লিসারাইড কমানোর জন্য গ্রিন টি বেশ উপকারী। এ ছাড়া টুনা, সার্ডিন, সামন জাতীয় মাছের গায়ের যে তেল থাকে, তা ট্রাইগ্লিসারাইড কমাতে সাহায্য করে।

ট্রাইগ্লিসারাইড কমানোর উপায়

ওজন কোনও ভাবেই বাড়তে দেওয়া চলবে না। সে ক্ষেত্রে কায়িক পরিশ্রম বাড়াতে হবে। শরীরের চাহিদা অনুযায়ী কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ বেঁধে দিতে হবে। সবুজ শাক, ফলমূল খেয়ে পেট ভরাতে হবে। অ্যালকোহল, কফি বর্জন করলেই ভাল। সঙ্গে ধূমপানের অভ্যেসও।

খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাপনের ধরন বদলালেই এই সমস্যা অনেকটা কমানো যায়। এর পরেও ট্রাইগ্লিসারাইডের পরিমাণ না কমলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। তখন ওষুধ দিয়ে ট্রাইগ্লিসারাইড উৎপাদন কমানো হয়।

ট্রাইগ্লিসারাইড কম থাকলে কি ক্ষতি হয়?

কয়েকটি বিরল জিনঘটিত রোগে ট্রাইগ্লিসারাইড শরীরে প্রয়োজনের তুলনায় কম থাকতে পারে। কিন্তু তাতে ভয়ের কোনও কারণ নেই। সাধারণ ভাবে এতে কোনও সমস্যা হয় না। ব্যক্তি কোনও রকম অনুশাসনের মধ্যে থাকবেন না। প্রয়োজনে খাদ্যাভ্যাসের বদল করে ট্রাইগ্লিসারাইড বাড়ানোর চেষ্টা করতে পারেন।

অন্য রোগকে দূরে রাখার জন্য রক্তে ট্রাইগ্লিসারাইডের পরিমাণের উপরে নজর রাখুন।

তথ্য সহায়তা: ডা. অরুণাংশু তালুকদার

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement