অনেকে মনে করেন, মাছ রাখার সব থেকে বড় ঝক্কি অ্যাকোয়ারিয়াম বা ট্যাঙ্ক পরিষ্কার করা। বড় ট্যাঙ্ক হলে কিছুটা সমস্যা হতে পারে, এটা ঠিক। তবে কিছু সহজ উপায় মাথায় রাখলে ট্যাঙ্ক পরিষ্কার কখনওই সমস্যার মনে হবে না।
১। প্রথমে পুরনো কিছুটা জল (ছোট ট্যাঙ্ক হলে আধ বালতি আর বড় হলে এক বালতি) মাছ-সহ সরিয়ে রাখুন। পুরনো জলেই আনুযঙ্গিক জিনিস (পাথর, ফিল্টার) পরিষ্কার করুন।
২। কাঁচে শ্যাওলা বা দাগ পড়লে ভিজে কাপড় দিয়ে মুছে দিন। কিন্তু কোনওভাবে নোংরা বা দাগ পরিষ্কারের জন্য ডিটারজেন্ট, ফিনাইল, অ্যাসিড এমনকী লিকুইড সোপ ব্যবহার করবেন না।
৩। ভুলেও সাবান দিয়ে পাথর পরিষ্কার করবেন না। জলে ঘষে পরিষ্কার করুন।
৪। মাছকে কেঁচো খেতে দিলে পাথরের খাঁজে কেঁচোর দেহাবশেষ জমে থাকে। অবশ্যই সাকশন পাইপ দিয়ে টেনে নেবেন ওই নোংরা। এই পাইপ যে কোনও অ্যাকোয়ারিয়ামের দোকানে পাওয়া যায়।
৫। যে ফিল্টারই ব্যবহার করুন না কেন (স্পঞ্জ, ক্যানিস্টার, বেড, পাওয়ার ফিল্টার) সেগুলো সাবান দিয়ে বা খুব বেশি ঘষে পরিষ্কার করবেন না। কারণ এই ফিল্টারের মধ্যে কিছু ব্যাকটিরিয়া তৈরি হয়, যা জলের বাস্তুতন্দ্রের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।
৬। অ্যাকোয়ারিয়াম পরিষ্কারের পরে যে বালতিতে পুরনো জল ও মাছ রেখেছিলেন সেই জল ট্যাঙ্কে ঢেলে দিন। মাছগুলোকেও আস্তে আস্তে ওই জলে ছেড়ে দিন। এ বার ধীরে ধীরে নতুন জল ঢালতে থাকুন। তবে শুধু নতুন জলে মাছ ছাড়বেন না। হঠাৎ নতুন জলে মাছ ছাড়লে অনেক সময় মাছ অসুস্থ হয়ে পড়ে।
৭। অবশ্যই নতুন জলে সৈন্ধব লবণ (প্রতি পঞ্চাশ লিটারে দুচা চামচ)মিশিয়ে দেবেন। এই লবণের ব্যবহারে নতুন পরিবেশে মাছেদের সংক্রমণ বা নতুন জলবাহিত ব্যাকেরিয়ার প্রকোপ কমে। যদি আঁশবিহীন মাছ থাকে তা হলে লবণ না দেওয়াই ভাল। আর যদি আঁশবিহীন ও আঁশযুক্ত-এই দু’রকমই মাছ থাকে তা হলে অ্যাকোয়ারিয়ামের দোকানে গিয়ে চাইলেই নতুন জলে মাছ ছাড়ার উপযোগী মিশ্রণ পেয়ে যাবেন।
৮। যেদিন নতুন জল দেবেন সেদিন আলো না জ্বালানোই ভাল। সেদিন মাছকে নাও খেতে দিতে পারেন। পরিমিত আহার দিন। বেশি দিলে দ্রুত জল নোংরা করে ফেলে মাছ।
৯। ঘন ঘন অ্যাকোয়ারিয়াম পরিষ্কারের প্রয়োজন নেই। গরমকালে প্রতি দে়ড় মাসে একবার, শীতকালে আড়াই মাসে এক বার পরিষ্কার করলেই যথেষ্ট।
১০। অ্যাকোয়ারিয়ামের জল যদি মাসে অন্তত দুবার পাল্টাতে পারেন তাহলে যেমন আপনার পরিশ্রম বাঁচবে, তেমই অ্যাকোয়ারিয়ামও পরিষ্কার থাকবে। আর এর ফলে সুস্থ থাকবে আপনার মাছ।