আধুনিক জীবনযাত্রায় প্রযুক্তিগত নানা কারণে বেঁচে থাকা যেমন সহজ হয়েছে, তেমনই এর হাত ধরে প্রতারণাও কম হয় না। পিন ও কার্ড নম্বর নকল করে ব্যাঙ্ক জালিয়াতি তো আকছার হচ্ছে, এ বার সেই ভয়কেই আরও উস্কে দিল হোয়াটসঅ্যাপ সংক্রান্ত একটি প্রচার।
একটি মাত্র ভিডিয়ো মেসেজ। আর তার মাধ্যমেই হ্যাক হতে পারে আপনার ফোন। ফোনের সূত্র ধরেই আপনার যাবতীয় ব্যক্তিগত তথ্যও পৌঁছে যাবে হ্যাকারদের হাতে। কেবল ব্যাঙ্ক ডিটেলসই নয়, ফোনে থাকা সব নম্বর, এসএমএস, হোয়াটসঅ্যাপ, ছবি সবই চলে যাবে হ্যাকারদের জিম্মায়। হোয়াটসঅ্যাপ গোল্ড নিয়ে ছড়ানো প্রচারের মূল কথা এগুলিই।
২০১৬-য় এই প্রতারণার ভিডিয়ো প্রথম বারের জন্য প্রকাশ্যে আসে। প্রায় তিন বছর পর আবার এই প্রতারণা ফিরে এসেছে বলে একটি প্রচার ছড়িয়ে পড়ে। একাধিক সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টেও এই প্রতারণা সম্পর্কে জানিয়েছেন অনেকেই। কিন্তু এমন কি আদৌ হয়েছে? বিশেষজ্ঞদের মতে, এটা আদতে একটা গুজব ছাড়া আর কিছুই নয়।
ভাইরাল হওয়া ওই গুজবে বলা হয়েছে, একটি ভিডিয়োও দেখা যাচ্ছে। তাতে বলা হচ্ছে: রেডিয়োতে হোয়াটসঅ্যাপ গোল্ডের কথা আজ বলছিল, এটা সত্যি। আগামিকাল হোয়াটসঅ্যাপে একটি ভিডিয়ো লঞ্চ হবে। তার নাম ‘মার্টিনেলি’। এই ভিডিয়ো ক্লিক করলেই সর্বনাশ!
২০১৬-য় ছড়ানো মেসেজটির সূত্রপাত স্পেনে। হোয়াটসঅ্যাপ গোল্ড নামের একটি ভুয়ো অ্যাপ ইনস্টল করে আপডেট করতে বাধ্য করে এই মেসেজ। যার হাত ধরেই ব্যবহারকারীর ফোনে ম্যালওয়্যার পৌঁছে যায়। এ বার সেই ঘটনা আবার ফিরে এসেছে বলে ভুয়ো আশঙ্কা ছড়ানো হচ্ছে।
এই মেসেজটি অনেকেই পেয়েছেন ও তা শেয়ার করে সর্বস্বান্ত হয়েছেন এমন কথাও বলে বেড়াচ্ছেন এক শ্রেণির মানুষ।
সাইবার সুরক্ষা বিশেষজ্ঞরাও এই হোয়াটসঅ্যাপ গোল্ডের গুজব নিয়ে সরব হয়েছেন। এই ধরনের ভুয়ো প্রচার থেকে দূরে থাকার পক্ষপাতী তাঁরাও। এ ছাড়াও কোনও মেসেজের আদৌ অস্তিত্ব আছে কি না, তা যাচাই না করেই তা নিয়ে ভয় পেতেও নিষেধ করেন তাঁরা।
এই প্রচারে কান দেওয়ারই দরকার নেই বলে মত বিশেষজ্ঞদের। তাঁদের মতে, ভুয়ো প্রচারে বলা হচ্ছে মার্টিনেলি একটা ম্যালওয়ার। যা ফোনে ইনস্টল হলে ফোনের তথ্য হ্যাক হবে। কিন্তু বাস্তবে মার্টিনেলি নামের কোনও ম্যালওয়ারের অস্তিত্ব নেই। এই বার্তাটি নেহাতই ভয় ছড়ানোর জন্য।