দেশে বছরে প্রায় ৫৮ হাজার মানুষ সর্পাঘাতে মারা যান। ফাইল ছবি
সাপে কাটা রোগীদের চিকিৎসায় সাহায্য করতে ‘অ্যাপ’ আনল রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর।
সোমবার রাত থেকে ‘স্নেকবাইট প্রিভেনশন অ্যান্ড রেসকিউ’ নামের ওই অ্যাপটি চালু হয়েছে। পাঁচটি বিভাগে সাজানো ওই অ্যাপ রয়েছে বাংলা ও ইংরেজি ভাষায়। অ্যাপ তৈরির পরামর্শদাতা তথা আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ফরেন্সিক মেডিসিন বিভাগের প্রধান চিকিৎসকসোমনাথ দাস বললেন, ‘‘এই অ্যাপ সচেতন ভাবে ব্যবহার করলে সর্পাঘাতে মৃত্যুর সংখ্যা কমানো যাবে।’’ তিনি জানান, দেশে বছরে প্রায় ৫৮ হাজার মানুষ সর্পাঘাতে মারা যান। তালিকায় প্রথমের দিকেই পশ্চিমবঙ্গ।
অ্যাপের ‘প্রাথমিক চিকিৎসা’ বিভাগে জানানো হয়েছে, দংশনের অঙ্গ নাড়ানো যাবে না। মোটা শাড়ির পাড় বা গজ দিয়ে ব্যান্ডেজ করে রক্তপাত বন্ধ করতে হবে। ওই অঙ্গের পিছনে লম্বা লাঠি দিয়ে দুই প্রান্তকে শক্ত করে বাঁধতে হবে। যাতে দংশনের অংশের উপর ও নীচের অস্থিসন্ধি লাঠি ছাড়িয়ে নড়াচড়া করতে না-পারে। এ ভাবেই দ্রুত স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ‘অ্যান্টিস্নেক ভেনম সিরাম’ (এভিএস) দিতে হবে। ক্ষতস্থান দড়ি দিয়ে বাঁধা ক্ষতিকর-সহ কী কী করা যাবে না, তা-ও বলা হয়েছে।
বিষধর ও বিষহীন ১৮ প্রজাতির সাপের পরিচিতি ও সর্পদংশন থেকে রক্ষা পেতে কী করণীয়, তা-ও আছে অ্যাপে। ‘স্বাস্থ্য কেন্দ্র ও এভিএস স্টক’-এ ক্লিক করলেই ১-১০ কিলোমিটারের মধ্যে কোন হাসপাতাল বা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে সেই মুহূর্তে কত ‘এভিএস’ রয়েছে, জানা যাবে। দংশনের স্থান বা সাপের ছবি তুলে আপলোড করলে, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে প্রয়োজনীয় বিষয় জানিয়ে দেবে আর জি কর মেডিক্যাল কলেজের ‘পয়জ়ন ইনফরমেশন সেন্টার’।
অ্যাপে ২৩টি জেলার সর্প-বন্ধুর নাম, ফোন নম্বর রয়েছে। আইসিএমআর-এর সর্প-দংশন প্রশিক্ষণের টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজ়র তথা স্বাস্থ্য দফতরের প্রশিক্ষণ কমিটির প্রশিক্ষক দয়ালবন্ধু মজুমদার বলেন, ‘‘ঘরে সাপ ঢুকেছে, কী ভাবে বার করব জানতে চেয়ে ফোন আসে। এই তালিকা থেকে উদ্ধারকারীর সন্ধান মিলবে।’’ তাঁর মতে, ‘‘ওঝার কাছে না গিয়ে, মানুষকে নিকটবর্তী হাসপাতালে যেতে হবে। সেটাই গুরুত্বপূর্ণ।’’