স্মার্টফোন শুভেচ্ছায় ফিকে গ্রিটিংস কার্ড

শুধুমাত্র এসএমএস-এর মাধ্যমেই নয়, বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়ার হাজারো অ্যাপ, ফেসবুক- হোয়াটসআ্যাপে পাঠানো চলছে এই শুভেচ্ছাবার্তা। অনেকেই আগাম শুভেচ্ছাবার্তা পাঠিয়ে দিচ্ছেন। আর তার জেরে কার্ড বিক্রির ব্যবসায় আকাল দেখা দিয়েছে ক্রমশই।

Advertisement

সন্দীপ পাল

কালীগঞ্জ শেষ আপডেট: ২৬ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৩:৪৭
Share:

প্রতীকী ছবি।

আধুনিক সময়ে মোবাইল ফোনের বোতাম টিপতেই প্রেমিক-প্রেমিকার কাছে এক মুহূর্তে পৌঁছে যাচ্ছে নতুন বছরের শুভেচ্ছাবার্তা। আর সেই কারণেই বর্তমানে প্রায় হারিয়েই যাচ্ছে কাগজে ছাপা নিউ ইয়ারের শুভেচ্ছা-কার্ড।

Advertisement

শুধুমাত্র এসএমএস-এর মাধ্যমেই নয়, বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়ার হাজারো অ্যাপ, ফেসবুক- হোয়াটসআ্যাপে পাঠানো চলছে এই শুভেচ্ছাবার্তা। অনেকেই আগাম শুভেচ্ছাবার্তা পাঠিয়ে দিচ্ছেন। আর তার জেরে কার্ড বিক্রির ব্যবসায় আকাল দেখা দিয়েছে ক্রমশই।

উৎসব পালনে বাঙালি এখন সর্বজনীন। তাই বড়দিন বা ইংরেজি নববর্ষ পালনকে নিজস্ব সংস্কৃতির উৎসব করে নিতে বাঙালি খুব বেশি দেরি করেনি। ইংরেজি নববর্ষ পালনে বহুদিন ধরেই ব্যবহার হয়ে আসছে নানা ধরনের শুভেচ্ছাবার্তা লেখা কার্ডের বিনিময়। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নিয়ম বদলেছে। আগে নতুন বছরে শুভেচ্ছা জানাতে এক প্রকার অবধারিত উপহার ছিল নানা ধরনের গ্রিটিংস কার্ড। এই সময়ে ইন্টারনেট ও স্মার্টফোনের দৌরাত্ম্যে যা এখন বিলুপ্তপ্রায় হওয়ার পথে!

Advertisement

কার্ড-ব্যবসার সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মী-মালিকেরা জানাচ্ছেন, শুভেচ্ছা বার্তা পাঠানোর পর্বটি এখন মোবাইলের মাধ্যমেই সেরে নিতে পছন্দ করছেন অধিকাংশ মানুষ। এখন আর আগের মতো নতুন বছরের গ্রিটিংস কার্ড বিক্রি হয় না। আরও জানা গেল, সাত থেকে আট বছর আগেও প্রেমিক-প্রেমিকা বা বন্ধু-সহকর্মীরা নতুন বছরে শুভেচ্ছা বিনিময়ের জন্য গ্রিটিংস কার্ড কিনতে আসতেন। বর্তমানে তেমন ক্রেতার দেখাই মেলে না।

এক কার্ড বিক্রেতার আক্ষেপ— ‘‘আগে ডিসেম্বরের ২০ তারিখ পেরোলেই দোকানের সামনে গ্রিটিংস কার্ড ঝোলানো শুরু হত। আর সেই কার্ড বেছে কেনার জন্য ছেলেমেয়েদের ভিড় জমে যেত দোকানের সামনে!’’

স্থানীয় এক কলেজ পড়ুয়া স্মৃতিচারণ করে বলেন, ‘‘কিছুদিন আগে পর্যন্তও হাতে-বানানো কার্ডের রেওয়াজ ছিল। স্কুলে পড়ার সময়ে বন্ধুদের জন্য হাতে এঁকে কার্ড বানাতাম। আজ সে সবই অতীত।’’

পলাশির আবৃত্তিশিল্পী মধুমিতা গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমাদের ছাত্র জীবনের সময়ে আমরা আর্টপেপার কিনে কার্ড বানাতাম। সেই কার্ড দিয়েই সকলকে শুভেচ্ছাবার্তা জানাতাম। পুরো বিষয়টাই আনন্দের ছিল। দোকান থেকে কিনেও বন্ধুবান্ধবদের দিয়েছি।’’ তাঁর আফসোস, এই আনন্দ থেকে নতুন প্রজন্ম বঞ্চিত হচ্ছে। তবে তাঁর মতে, অতীতকে ভোলার যেমন দুঃখ আছে, তেমন নতুনকে পাওয়ার মধ্যেও আনন্দ আছে।

বর্তমান প্রজন্ম কিন্তু এ সব নিয়ে ভাবতে নারাজ। কৃষ্ণনগরের তরুণী দেবারতি বিশ্বাস বলেন, ‘‘অতীতে কার্ডে শুভেচ্ছা জানানোর মধ্যে একটা ভালবাসার ছোঁয়া, আন্তরিকতা ছিল ঠিকই। তবে এসএমএস-এ চটজলদি বাইরে থাকা বা দূরের কোনও বন্ধুকেও শুভেচ্ছা জানানো যায়।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement