নেট বাজারের নতুন বাজি স্কুল পড়ুয়ার দল। যাদের রেস্ত, জমে ওঠা ‘পকেট মানি’, উপহার হিসেবে পাওয়া এবং বাবা-মায়ের দেওয়া টাকা।
আর, সেই সঙ্গে রয়েছে প্রযুক্তির সঙ্গে নবীন প্রজন্মের সখ্য। নেট দুনিয়ায় স্বচ্ছন্দ বিচরণ। ছোট পরিবারে ছোটদের মতের বেশি গুরুত্ব। সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, এই তিন সুবিধার কারণেই স্কুল পড়ুয়াদের হাত ধরে খুলে যাচ্ছে নেট বাজারের নতুন পথ।
আর এই বাজার যে ভবিষ্যতেও স্থায়ী ক্রেতা পাওয়ার পাকা জায়গা, তা পরিসংখ্যানেই স্পষ্ট। দেশের ১৫টি শহরে ১২-১৮ বছরের স্কুল পড়ুয়াদের নিয়ে সমীক্ষা করেছে তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা টিসিএস। সেখানেই উঠে এসেছে নেট বাজারে নতুন প্রজন্মের ক্রেতাদের পছন্দের দিশা। ৮০ শতাংশের বেশি পড়ুয়া জানিয়েছে, তারা অনলাইনে কেনাকাটা করতে অভ্যস্ত।
১৯৯৫ সালের পরে জন্মানো এই প্রজন্মের নাম ‘জেনারেশন জেড’। ‘জেন এক্স’ ও ‘জেন ওয়াই ’ পেরিয়ে ‘জেন জে়ড’ বড়দের হাত ধরে শপিং মলে যায়। আবার প্রবল উৎসাহে কেনে অনলাইনেও। কেনাকাটার তালিকায় শীর্ষে বৈদ্যুতিন ‘গ্যাজেট’ বা যন্ত্র। দ্বিতীয় ও তৃতীয় যথাক্রমে বই ও জামাকাপড়।
সমীক্ষার এই সার্বিক প্রবণতা স্পষ্ট কলকাতার ‘জেন জে়ড’-এর ক্ষেত্রেও। এ শহরের ৮৫% স্কুল পড়ুয়া নেটে কেনাকাটা করে। প্রায় ৫১% বৈদ্যুতিন যন্ত্র কেনে। ৪৯% বই। আর ৩৪% জামাকাপড়। তারা সমান তালে পাল্লা দিচ্ছে দিল্লি, মুম্বই, বেঙ্গালুরুর পড়ুয়াদের সঙ্গে। বস্তুত, অন্য শহরের সঙ্গে তুলনায় বড়দের পেছনে ফেলেছে কলকাতার ছোটরা।
এই সংক্রান্ত আরও খবর...
একলা হয়ে পড়ছে না তো খুদে, ছোট্ট মনের খেয়াল রাখুন
অ্যাসোচ্যাম-এর সমীক্ষা বলছে গত অক্টোবরের উৎসবের মরসুমে নেট বাজারে ‘বিগ বিলিয়নস ডে সেল’-এর ছাড়ের সুযোগ নিতে ঝাঁপিয়েছে সব শহরই। দিল্লি, মুম্বই, আমদাবাদ, বেঙ্গালুরু, হায়দরাবাদ, চেন্নাই ও কলকাতায় এই কেনাকাটার বহর মেপেছে বণিকসভাটি। দেখা গিয়েছে সবচেয়ে পিছিয়ে কলকাতা। ৮২% ক্রেতা পেয়ে শীর্ষে দিল্লি। এর পরে মুম্বই। ৮০ শতাংশের বেশি মুম্বইবাসী নেটে কেনাকাটা করেছেন। তৃতীয় আমদাবাদ। চতুর্থ ও পঞ্চমে বেঙ্গালুরু এবং হায়দরাবাদ।
ছোটরা কিন্তু এই বিভেদ ঘুচিয়েছে। দিল্লি, মুম্বইয়ের সঙ্গে টক্কর দিয়েই নেট বাজারে কেনাকাটা সারছে কলকাতার পড়ুয়ারা। টিসিএসের গ্লোবাল কমিউনিকেশন্সের প্রধান প্রদীপ্ত বাগচী বলেন, ‘‘প্রযুক্তির নিত্যনতুন মুখের সঙ্গে পরিচিত কলকাতার জেন জেড। সত্যিই তারা ডিজিটাল দুনিয়ার বাসিন্দা।’’
ক্রয়ক্ষমতা ও জিনিস বাছাইয়ের ক্ষেত্রে ছোটদের মতামতের কথা মাথায় রাখছে অ্যামাজন, ফ্লিপকার্ট, স্ন্যাপডিল, ই-বে, সকলেই। ফ্লিপকার্টের অন্যতম কর্তা অঙ্কিত নাগোরির দাবি, সংস্থার ৭০% ক্রেতার বয়স ১৫-৩৪। আর লাফিয়ে বাড়ছে ১৫ থেকে ১৮-র ক্রেতা সংখ্যা। অ্যামাজন ও ই-বে এ বিষয়ে মুখ না-খুললেও ওয়েবসাইটের নিত্যনতুন বদল যে-কমবয়সিদের নজর কাড়তেই, তা নিয়ে নিশ্চিত সংশ্লিষ্ট শিল্পমহল।
তথ্য অনুযায়ী, ২০১৪ সালে নেট বাজারের সাড়ে তিন লক্ষ ক্রেতার সংখ্যা ২০২০ সালে ছাড়াবে ২১ কোটি। যার মূলে আছে জেন জে়ডের পছন্দের গুরুত্ব।