কারও ওজন ২৪৪ কিলোগ্রাম, কারও ২৭২, কারও আবার ৩২১ কিলোগ্রাম! ওবেসিটিতে ভোগা এই বিশালদেহীরাই আজ মেদ ঝরিয়ে ছিপছিপে। কী করে সম্ভব হল এই অসাধ্যসাধন? মাই সিক্স হান্ড্রেড পাউন্ড লাইফ নামে একটি টিভি সিরিজে নিজেদের সেই গল্প শেয়ার করেছেন ক্রিশ্চিনা, মার্লারা।
আট ফুট দূরত্ব পর্যন্ত এক টানা হাঁটতে পারতেন না ২৪ বছরের মার্কিন ক্রিশ্চিনা ফিলিপস। তখন তাঁর ওজন ছিল ৩২১ কিলোগ্রাম। ভেবেছিলেন বাঁচবেন না। সব কাজের উৎসাহ শেষ হয়ে গিয়েছিল ওজন বাড়তে বাড়তে।
অস্ত্রোপচার, ডায়েট এবং শরীরচর্চায় ২৪৪ কিলোগ্রাম ওজন কমিয়েছেন তিনি। ক্রিশ্চিনা এখন ৮৫ কিলোগ্রাম। ইনস্টাগ্রাম পেজে তার ফলোয়ারও বেড়েছে প্রচুর।
তিন বছর কঠোর ডায়েট আর পরিশ্রমের পর গ্যাস্ট্রিক বাইপাস সার্জারি। প্রায় ১৮২ কিলোগ্রাম ওজন কমিয়েছেন মার্কিন তরুণী অ্যাম্বার রাচডি।
তিন বছর কঠোর ডায়েট আর পরিশ্রমের পর গ্যাস্ট্রিক বাইপাস সার্জারি। প্রায় ১৮২ কিলোগ্রাম ওজন কমিয়েছেন তিনি।
৪৬ বছরের মার্লা ম্যাককান্টসের গল্পটা অন্যরকম। বাড়ি থেকে না বেরোতে বেরোতে প্রায় ৩১৮ কিলোগ্রাম ওজন হয়ে গিয়েছিল মার্লার। তিন সন্তানের মা মার্লা একা হাঁটতে চলতেই আর পারতেন না। বাঁচার আশাও ফুরিয়ে গিয়েছিল এই মার্কিন মহিলার।
অস্ত্রোপচারের আগে কঠোর ডায়েট শুরু করেন মার্লা। ওজন দাঁড়ায় ২৪২ কিলোগ্রামে। এরপর অস্ত্রোপচার। ওজন হয় ১৩৬ কিলোগ্রাম। হাল ছাড়েননি তিনি। চলছে আরও ওজন কমানোর চেষ্টা। স্কিন রিমুভাল সার্জারিও করতে চান তিনি।
আমেরিকার ডোনাল্ড শেল্টনের গল্পটা হল ২৭২ কিলোগ্রাম থেকে ৯০ কিলোগ্রাম ওজনে ফিরে আসার।
গ্যাস্ট্রিক বাইপাস সার্জারির পর তিনি যদিও অসু্স্থ হয়ে পড়েছিলেন। হুইলচেয়ারও ব্যবহার করতে হয়েছে। কিন্তু আশা ছাড়েননি। এখন তিনি রীতিমতো হ্যান্ডসাম হাঙ্ক।
মেলিসা ডি মরিস ২২৭ কিলোগ্রাম ওজন কমাতে সক্ষম হয়েছেন। তবে জার্নিটা কিন্তু এত সহজ ছিল না। সন্তান হওয়ার সম্ভাবনাই ছিল না মার্কিন তরুণী মেলিসার। ভেঙে পড়েছিলেন তিনি।
গ্যাস্ট্রিক সার্জারির পর ডাক্তারের চেম্বারে স্বেচ্ছাসেবী হিসাবে কাজ শুরু করেন মেলিসা। ডায়েটের কারণে রেফ্রিজারেটরের উপরেও ঝুলিয়ে রাখতেন নিষেধাজ্ঞা। ওজন কমার চার বছর পর জন্মায় তাঁর প্রথম সন্তান।
২০৬ কিলোগ্রাম ওজন কমিয়েছেন আরকানসাসের বাসিন্দা নিকি। গ্যাস্ট্রিক স্লিভ সার্জারির পর এক ধাক্কায় ওজন কমেছিল প্রায় ১০০ কিলোগ্রাম।
বছর চৌত্রিশের নিকি সবচেয়ে খুশি হন প্রথম জিনস কিনে। প্রথম ডেটিংও গিয়েছিলেন ওজন কমানোর পরে। স্কিন রিমুভাল সার্জারিও করেছেন তিনি।
চরম হতাশা থেকেই ওবেসিটি গ্রাস করেছিল চাক টার্নারকে। টেক্সাসের এই বাসিন্দা প্রায় ১৯৬ কিলো ওজন কমিয়েছেন। আগে তাঁর ওজন ছিল ৩১৪ কিলোগ্রাম।
দ্বিতীয় স্ত্রী নিজার সঙ্গে বিচ্ছেদ হয়েছিল তাঁর এই ওজনের কারণেই। গ্যাস্ট্রিক বাইপাস সার্জারির পর নিজের ট্রাকের ব্যবসা নিজেই সামলাচ্ছেন। দৌড়ঝাঁপও শুরু করেছেন। ওজন কমে দাঁড়িয়েছে ১১৭ কিলোগ্রামে।
লরা পেরেজ অক্সিজেন ট্যাঙ্ক আর হুইলচেয়ার নিয়ে ঘুরতেন। বাকিদের মতো টেক্সাসের এক চিকিৎসকের কাছে গ্যাস্ট্রিক বাইপাস সার্জারি করান তিনিও।
২৪৫ কিলোগ্রাম ওজন থেকে সার্জারি ও ডায়েটের পর তাঁর ওজন দাঁড়ায় ৮২ কিলোগ্রামে। কেরিয়ার গড়ার কথা ভাবতে শুরু করেছেন লরা। আতঙ্কের সময় পেরিয়ে এসে, সম্পর্কের টানাপড়েনকে জয় করে লরা এখনও নিজেও উপদেষ্টার কাজ করছেন।
বেটি জো এলমোরের ওজন ছিল ২৯৬ কিলোগ্রাম। গ্যাস্ট্রিক বাইপাস সার্জারির পর ওজন কমে দাঁড়ায় ১৮১ কিলোগ্রামে। তখন তিনি অন্তঃসত্ত্বা।
সুস্থ সন্তানের জন্ম দেওয়াটাও ছিল বিরাট ঝুঁকি। সাত মাসের গর্ভাবস্থায় দিনে মাত্র একবার বিছানা ছেড়ে উঠতে পারতেন তিনি। মেরুদণ্ডে তৈরি হয় অতিরিক্ত মাংসপিণ্ড। চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে থাকায় সুস্থ ছেলের জন্ম দেন মার্কিন তরুণী জো। পরবর্তীতে ওজন কমেছে আরও বেশ খানিকটা।
পরিচিতদের মধ্যেও কেউ কেউ এই অসাধ্য সাধন করেছেন। পাকিস্তানি গায়ক আদনান সামি ১১ মাসে ১৩০ কিলোগ্রাম ওজন কমিয়ে খবরের শিরোনামে এসেছিলেন।
মুকেশ অম্বানীর ছোট ছেলে অনন্ত ১৮ মাসে প্রায় ১০৮ কিলোগ্রাম ওজন কমিয়েছিলেন। সংবাদের শিরোনামে এসেছিলেন তিনিও।