মোবাইলে আসক্তি কাটাবেন কী করে? ছবি: সংগৃহীত।
খুদের বয়স সবে এক বছর। এর মধ্যেই ফোনের আওয়াজ শুনলেই সে হাত-পা নাড়তে থাকে। চোখের সামনে ফোন না ধরলে নাওয়া, খাওয়া, ঘুমোনো কোনও কিছুই সময় মতো হয় না। মোবাইল হাতে ধরিয়ে দিলে কিছু ক্ষণের জন্য অভিভাবকেরাও নিশ্চিন্ত থাকেন। খুদেকে ভুলিয়ে রেখে বাড়ির কাজ সামলে নেওয়া যায়। তুলনায় একটু বড় খুদেদের তো আরও মজা। কারণ, তাদের পড়াশোনার অনেকটাই কম্পিউটার কিংবা মোবাইল নির্ভর। তাই চাইলেও বাবা-মায়েরা বেশি ক্ষণ এই যন্ত্রটি ছাড়া থাকতে বলতে পারেন না। বাইরে গিয়ে মাঠে-ঘাটে হাত-পা কেটে ছড়ে আসার চেয়ে তো ভাল! তবে সমস্যাও আছে। অত্যধিক মোবাইল-আসক্তির কারণে অনিদ্রা, চোখের সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে তারা। কায়িক পরিশ্রমহীন অলস জীবনযাপনে অভ্যস্ত হয়ে পড়ছে। ফলে অল্প বয়সেই স্থূলত্বের মতো সমস্যা গ্রাস করছে তাদের। ডিজিটাল ডিভাইসে মুখ গুঁজে বসে থাকার অভ্যাস খুদেদের মনোযোগ কমিয়ে দিচ্ছে। কোনও কোনও সময় শিশুরা অনেক বেশি হিংসাত্মক আচরণ করে— এর পিছনেও অনেক ক্ষেত্রেই ডিজিটাল-আসক্তিই দায়ী। এই আসক্তি কাটাতে মোবাইল ব্যবহারে লাগাম রাখতে হবে খুদের মা-বাবার হাতেই।
কী ভাবে কাটাবেন এই আসক্তি?
১) যখন-তখন নয়, একটি নির্দিষ্ট সময়ে শিশুকে স্মার্টফোন ব্যবহার করার অনুমতি দিন। তবে তখন শিশু স্মার্ট ফোনে কী করছে বা কী দেখছে, সে দিকে নজর রাখতে হবে। খেলাধুলো, নাচ, গান যে বিষয়ে শিশুর আগ্রহ আছে, সে সব বিষয়ে মন দিতে উৎসাহী করে তুলুন খুদেকে।
২) শিশু যদি অনলাইনে ক্লাস করে, তা হলে ইন্টারনেট সংযোগ দিয়ে সে কী করছে, তা খেয়াল রাখতে হবে। এ ছাড়া স্মার্টফোন থেকে আপত্তিকর ওয়েবসাইটগুলিকেও নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
৩) শিশুর স্মার্টফোনের আসক্তি কাটাতে আপনাকে ওর জন্য সময় বার করে নিতে হবে। ওর জন্য দিনের একটা নির্দিষ্ট সময় বরাদ্দ রাখুন। তখন শিশুর মনের কথা শুনুন, শিশুর সঙ্গে খেলুন, ওর সঙ্গে গল্প করুন।
একটি নির্দিষ্ট সময়ে শিশুকে স্মার্টফোন ব্যবহার করার অনুমতি দিন। ছবি: সংগৃহীত।
৪) আপনি নিজে যদি খুব বেশি মাত্রায় প্রযুক্তিতে আসক্ত হন, তা হলে স্বাভাবিক ভাবে আপনার সন্তানের মধ্যেও সেই সমস্যা দেখা যাবে। তাই আগে আপনার নিজের আসক্তি দূর করুন।
৫) ঘুমোনোর ঘণ্টাখানেক আগে শিশুকে ফোন, ট্যাব কিংবা ল্যাপটপ ব্যবহার করতে মানা করুন। প্রয়োজনে শাসন করুন।