কর্মজীবনের এই প্রবল চাপ প্রভাব ফেলে ব্যক্তিগত ও সাংসারিক জীবনের উপরেও। ছবি: শাটারস্টক।
দশটা-পাঁচটার সরকারি অফিস হোক বা কর্পোরেট সেক্টরের টানা ন’-দশ ঘণ্টার টানা শিফ্ট, দিনের বেশির ভাগ সময়টাই আমাদের কেটে যায় অফিসে। তাই ধকল, উদ্বেগ আর দুশ্চিন্তা জীবনের সঙ্গে না চাইতেও জড়িয়ে পড়েছে। কাজের চাপে রাতের পর রাত ঘুম আসে না। কর্মজীবনের এই প্রবল চাপ প্রভাব ফেলে ব্যক্তিগত ও সাংসারিক জীবনের উপরেও। ছোট-বড় যে কোনও সংস্থাতেই কাজের চাপ থাকবেই। আমরা অনেক ক্ষেত্রেই ঠিক ‘টাইম ম্যানেজমেন্ট’ করে উঠতে পারি না। আর তার প্রভাবও অনেকটা পড়ে কাজের ক্ষেত্রে।
তবে কিছু সহজ উপায় মানলে এই চাপ কিন্তু অনেকটা কাটিয়ে ওঠা যায়। এমনকি, অফিসের কাজ বরাদ্দ সময়ের মধ্যেই সেরে ফেলবেন কী করে, রইল তার হদিস।
১) দিনের শুরুতেই ঠিক করে নিন কোন সময় ঠিক কোন কাজটা করবেন। তবে দিন গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে হাতে একাধিক নতুন কাজ আসতেই থাকে। এক এক করে নোট করে রাখুন সেই সব কাজের তালিকা। কাজের গুরুত্ব অনুযায়ী ঠিক করে নিন কোনটা আগে সারবেন।
২) জমে থাকা অতিরিক্ত কাজের পাহাড়ই আপনার দুশ্চিন্তার মূল কারণ। প্রতি দিনের কাজ সে দিনই সেরে ফেলার চেষ্টা করুন। অহেতুক কাজ জমিয়ে রেখে দেবেন না। আর খুব বেশি প্রয়োজন না থাকলে অফিসের কাজ বাড়ি বয়ে নিয়ে যাবেন না। বাড়িতে যেটুকু সময় পাচ্ছেন, তা একান্তই পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কাটান।
কাজ চলাকালীন টুকটাক হাসি-মশকরা-আড্ডা সব অফিসেই হয়।
৩) কর্মক্ষেত্রে আপনার সহকর্মী এবং বসের সঙ্গে আপনার সম্পর্ক কেমন, তার উপরেও কিন্তু মানসিক চাপ হবে কি না, তা নির্ভর করে। চেষ্টা করুন সকলের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে চলতে। যে কোনও কাজ মিলেমিশে ভাগ করে নিলে কাজটা শেষ করতে খুব বেশি সময় লাগে না। তবে কোনও কোনও সহকর্মী সুসম্পর্কের সুযোগ নিয়ে আপনার উপর অতিরিক্ত কাজের ভার চাপাচ্ছেন কি না, সে সম্পর্কে সচেতন থাকুন। প্রয়োজনে খোলাখুলি কথা হলতেও দ্বিধাবোধ করবেন না।
৪) কাজ চলাকালীন টুকটাক হাসি-মশকরা-আড্ডা সব অফিসেই হয়। তবে কত ক্ষণ কোন আড্ডায় যোগ দেবেন, এই হিসেবটা কাজের চাপের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই ঠিক করুন। অফিসে মোবাইল ব্যবহারের ক্ষেত্রেও সচেতন হোন। মোবাইলে বেশি মন দিতে গিয়েও অনেকখানি সময় অজান্তেই ব্যয় হয়।
৫) অনেকেই ভাবেন, একটানা বসে কাজ করে গেলেই বোধ হয় কাজ তাড়াতাড়ি শেষ হবে। এই ধারণায় কিন্তু সায় নেই মনোবিদদের। বরং তাঁদের মতে, এক-দু’ঘণ্টা অন্তর জায়গা ছেড়ে উঠুন। সহকর্মীদের সঙ্গে কথাবার্তা বলুন, কয়েক পা হেঁটে আসুন। এই অভ্যাস শরীর ও মন দুই-ই ভাল রাখার ক্ষেত্রে বেশ লাভজনক।