আমাদের দেশের বেশির ভাগ মহিলাই এখন ঘরে-বাইরে দু’দিকে সামাল দিচ্ছেন। ফলে নিজেদের জন্য সময় কমে যাচ্ছে অনেকটাই। তাতে ফিটনেস রেজিম চলে যাচ্ছে সকলের শেষে। অনেক সময়ে তা বাদও পড়ছে রোজকার রুটিন থেকে। কিন্তু কাজে টিকে থাকতে গেলে সুস্থ শরীর অপরিহার্য। তাই ফিটনেসকে নিয়ে আসতে হবে রোজকার রুটিনের একেবারে উপরে। যত সকাল-সকাল ব্যায়াম সেরে ফেলতে পারেন, ততই ভাল। এর উপকার দু’টি। এক, কাজ শুরুর আগেই ব্যায়াম করে নিলে আর কাজের মধ্য থেকে সময় বার করার দরকার পড়বে না। দুই, ব্যায়াম দিয়ে দিন শুরু করলে মন ও শরীর দুই-ই প্রস্তুত হয়ে যাবে গোটা দিনের চাপ নেওয়ার জন্য।
একান্তই যদি সকালে সময় বার করতে না পারেন, তা হলে সারা দিনের কাজের মাঝখানে যেটুকু সময় পাবেন, তখনই ভাগ করে করে ব্যায়াম সেরে নিতে পারেন।
কী-কী করতে পারেন
•সকালের দিকেই শারীরচর্চা সেরে নেওয়ার অভ্যেস তৈরি করা জরুরি। প্রথম দিকে সপ্তাহে দু’দিন সকালে ঘুম থেকে উঠেই হাঁটতে বেরিয়ে যেতে পারেন। হাঁটতে ভাল না লাগলে, দৌড়নো, সাইক্লিং, সাঁতার কাটার মধ্যে যা পছন্দ সেটাই করতে পারেন। এক্সারসাইজ় উপভোগ না করলে তার উপকারও পুরোপুরি পাওয়া যায় না। তাই এমন ব্যায়াম বা শারীরচর্চা বাছতে হবে, যা আপনি এনজয় করেন।
• ওয়ার্ক ডেস্কে দীর্ঘ সময়ে টানা কাজ করতে হলে মাঝে মাঝে সেখানেই স্ট্রেচিং সেরে নিতে পারেন। হাত-পা ঘোরানোর মতো ব্যায়াম করে নেওয়া যায়। ঘাড়ের ব্যায়ামও সেরে নিতে পারেন সহজেই।
• কোথাও লাইনে অনেকক্ষণ দাঁড়াতে হলে খানিকক্ষণ বাঁ পায়ের উপরে দাঁড়ান, খানিকক্ষণ ডান পায়ের উপরে। এ ভাবে ব্যালান্সিংয়ে আপনার পায়ের পেশির গঠন মজবুত হবে।
• ফোনে কথা বলার সময়ে বসে না থেকে হাঁটতে-হাঁটতে কথা বলুন।
• রান্না করার সময়েও ভাত বসিয়ে বা চা বসিয়ে কয়েকটা ওয়াল পুশআপ বা কাফ স্ট্রেচ সেরে নিতে পারেন।
• দাঁত মাজতে মাজতে ১০-১২টা স্কোয়াট করে নিন।
• টিভি দেখতে দেখতেও ট্রেডমিলে হেঁটে নিতে পারেন বা প্যাডলিং করে নিতে পারেন। ফ্রি-হ্যান্ড কিছু ব্যায়াম, কাউচ পুশআপস, স্টার জাম্পও করে নেওয়া যায়।
টুকরো টিপস
• একা প্ল্যান করলে বেশির ভাগ সময়েই তা আর হয়ে ওঠে না। তাই পাড়ার কোনও বন্ধু বা প্রতিবেশীকে শামিল করতে পারেন আপনার ফিটনেস রুটিনে। একসঙ্গে মর্নিং ওয়াকে বা দৌড়তে যাওয়ার পরিকল্পনা করুন। এতে আর একজন সঙ্গে থাকায় প্ল্যান বাতিল হবে না চট করে।
• রোজকার রুটিন ডায়েরিতে লিখে রাখুন। আর সেখানেই কখন কী ব্যায়াম করবেন তাও লিখে রাখুন। তা হলে সেটা রিমাইন্ডার হিসেবে কাজ করবে।
• কিছু ব্যায়ামের তালিকা তৈরি করে নিন, যেগুলি খালি হাতে বসে বা দাঁড়িয়ে করা যায়। একটু ফাঁক পেলেই হাঁটুন বা হালকা এক্সারসাইজ় করুন।
• বাড়িতে সব সময়ে মজুত রাখুন আমন্ড। অফিসে বা বাইরে কোথাও গেলে টিফিন বক্সে করে নিয়ে যান। যেহেতু সারা দিনের পরিশ্রমে অনেকটাই এনার্জি চলে যায়, তাই ক্লান্ত লাগলে তিন-চারটে আমন্ড মুখে দিতে পারেন। দুধের মধ্যে আমন্ড গুঁড়ো মিশিয়েও খেতে পারেন।
আসল উদ্দেশ্য ফিট থাকা। কারণ সুস্থ থাকলেই কিন্তু কাজ করতে পারবেন পুরোদমে। তাই রোজ যতই কাজ থাকুক, তার মধ্যে সময় বার করতে হবে নিজেকে সক্ষম রাখতে।