নিয়মিত ব্যায়াম করলে শরীরে শ্বেতকণিকার সংখ্যা বাড়ে অর্থাৎ জীবাণুর বিরুদ্ধে লড়াই করার ক্ষমতা বাড়ে। ছবি: শাটারস্টক
জিম যেতে অনেকেই ভয় পাচ্ছেন এখনও।অনেকের এই মুহূর্তে সাধ্য নেই জিমে যাওয়ার কারণ অন্য খরচ বেড়ে গিয়েছে।এ ছাড়া বার বার স্যানিটাইজ করার যে নিয়ম চালু হয়েছে, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য যে ভাবে সময় ভাগাভাগি করা হয়েছে, যে ভাবে সদস্য সংখ্যায় রাশ টানা হয়েছে, তাতে জিমের খরচ অনেক বেড়ে যাওয়ার কথা।সাঁতার কাটাও এখন বন্ধ।শরীরচর্চা বন্ধ থাকায় বিপদ বাড়ছে আরও।
অর্থোপেডিক সার্জেন গৌতম সাহা বলেন, “ব্যায়াম যেন বন্ধ না হয় কারণ এই ভাইরাস তো এখনই বিদায় নিচ্ছে না, তাকে ঠেকাতে গেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ঠিকঠাক রাখতে হবে, যার অন্যতম মাধ্যম ব্যায়াম। অন্য রোগ ঠেকাতেও এর কোনও জুড়ি নেই।অতএব ব্যায়াম করতেই হবে।”
কীভাবে? আসুন, দেখে নেওয়া যাক
নিজে ব্যায়াম করলে
• দল বেঁধে বা প্রশিক্ষকের তত্ত্বাবধানে ব্যায়াম করার অভ্যাস হলে ঘরে একা শরীরচর্চা করতে ভাল না-ও লাগতে পারে।সে ক্ষেত্রে সকালে উঠে মাঠে বা পার্কে চলে যান।লোকজনের ভিড় থাকলে এখানেও বজায় রাখুন ৬ ফুটের সামাজিক দূরত্ব।
আরও পড়ুন: কোভিডের উপসর্গে জ্বরের দোসর হাত-পা ব্যথা? কী খেয়াল রাখতেই হবে?
• এমন ব্যায়াম করুন যাতে একাধারে পেশির জোর ও হৃদস্পন্দন বাড়ে।প্রথমে দু-এক পাক দৌড়ে নিন বা জোরকদমে হাঁটুন।অভ্যাস থাকলে স্কিপিং করতে পারেন।ঘর থেকে মাঠে সাইকেল চালিয়েও যেতে পারেন।
• এরপর সার্কিট ট্রেনিংয়ের মতো করে পর পর প্লাঙ্কস, পুশ আপ, স্কোয়াট, লেগ লিফ্ট, বার্পিস করুন।
• ২০-৩০ মিনিটে সারা শরীরের ওয়ার্কআউট খুব ভাল ভাবে হয়ে যাবে।ক্ষমতা বাড়বে হৃদযন্ত্র ও ফুসফুসের।এই ব্যায়ামগুলি ঘরেও করতে পারেন।
মেডিসিনের চিকিৎসক সুকুমার মুখোপাধ্যায়ের কথায়, “যাঁদের ব্যায়ামের অভ্যাস নেই, তাঁরাও এ সময় হালকা হাঁটাহাটি, যোগা বা শ্বাসের ব্যায়াম করুন।কমবে মানসিক চাপ।জীবাণুর বিরুদ্ধে লড়াই করার শক্তি বাড়বে।”
জিম যাওয়ার পরিকল্পনা থাকলে
• জিম কর্মী ও অন্য ব্যবহারকারীদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নিয়ে যেন যথাযথ প্রশিক্ষণ থাকে, দেখে নিতে হবে।
• পর্যাপ্ত পরিমাণে ডিসপোজেবল গ্লাভস, মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার জিমে আছে কি না দেখতে হবে।নিজের স্যানিটাইজার নিয়ে যেতে হবে।
জিমে যেতে সমস্যা হলে বাড়িতেই অভ্যাস করুন ব্যায়াম। ছবি: শাটারস্টক
• প্রতিটি যন্ত্র, ডাম্বেল, বারবেল, প্রতিটি সুইচ-হাতল, মাদুর, মেঝে, টয়লেট-সিট জীবাণুনাশক দিয়ে ঘণ্টায় ঘণ্টায় পরিষ্কার করা হয় কি না খোঁজ নিতে হবে।
• সংক্রমণের আশঙ্কা কমাতে সীমিত সংখ্যক ব্যবহারকারী যেন এক সময়ে ব্যায়াম করেন, সে বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে।
• ৬ ফুট দূরত্ব বজায় রেখে ব্যায়ামের ব্যবস্থা রয়েছে কি না দেখা প্রয়োজন।কারণ মাস্ক পরে ব্যায়াম করা ঠিক নয়।
• ঘরে এসে প্রথমেই স্যানিটাইজ করে স্নান করে নিন।
• জিমের জামা-কাপড় সাবান জলে ধুয়ে রোদে শুকিয়ে নিন।
• নিয়ম মেনে জুতোও পরিষ্কার করে নিতে হবে বাইরে থেকে ঘরে প্রবেশের আগে।
আরও পড়ুন: নাক ডাকার সমস্যায় নাজেহাল? রেহাই পেতে এই বিষয়গুলি জেনে রাখুন
করোনা আবহে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বা ইমিউনিটির উপরে। শরীরচর্চা করলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়, অ্যান্টিবডি অনেক বেশি কার্যকর থাকে। তাই বাড়িতে থাকলেও শরীরচর্চায় ফাঁকি দেওয়া যাবে না।