সন্তানের জন্মের পর থেকেই তাকে ঠিক উপায়ে বড় করে তোলাই অভিভাবকদের মূল লক্ষ্য। কিন্তু অনেক সময় সন্তান-পালনে এমন কিছু ঘাটতি থেকে যায়, যার রেশ ধরে সন্তান মনের মতো হয়ে উঠতে পারে না। অথচ, তার বেড়ে ওঠার সময় কিছু নিয়ম মানলেই সন্তান হয়ে ওঠে বুদ্ধিমান ও চটপটে। জানেন সে সব কী কী? ছবি: পিক্সঅ্যাবে।
সন্তানের মধ্যে সৃজনশীলতা বাড়াতে তাকে যতটা সম্ভব টেলিভিশন থেকে দূরে রাখুন। শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ অম্লান দত্তর মতে, শিশুরা টিভি দেখতে পছন্দ করে বলে আমরাও তাদের সে দিকে ঠেলে দিই। কিন্তু এর চেয়ে যে কোনও ছড়ার বা গল্পের বই তাদের মনে অনেক প্রভাব ফেলে। কল্পনাশক্তি বাড়ায়। নতুন শব্দ শিখতে সাহায্য করে। ছবি: পিক্সঅ্যাবে।
চিকিৎসাবিজ্ঞানের মতে, শিশুর মানসিক বিকাশে সবচেয়ে বেশি কার্যকর মা-বাবার সঙ্গ। তাকে সক্রিয় ও চটপটে করে তুলতে ঘন ঘন তার সঙ্গে যোগাযোগ বাড়ান। তাকে পর্যাপ্ত সঙ্গ দিন। ছোট থেকেই খেলার ছলে মজার ছড়া, নামতা, প্রচলিত গল্প, গান ইত্যাদি শোনাতে থাকুন। এতে মস্তিষ্ক সক্রিয় হয়ে তার স্মৃতিশক্তি বাড়বে। ছবি: পিক্সঅ্যাবে।
মাতৃদুগ্ধ শিশুর বিকাশ ও উন্নয়নের চাবিকাঠি। তাই জন্মের পর যত দ্রুত সম্ভব তাকে ঘন হলুদ দুধ (কলোস্ট্রাম) পান করান। এ ছাড়াও অন্তত দু’ বছর মাতৃদুগ্ধকে তার খাদ্যতালিকায় সবচেয়ে উপরের সারিতে রাখুন। শরীরে রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বাড়াতে, শিশুর বুদ্ধির বিকাশে মাতৃদুগ্ধের ভূমিকা অপরিসীম। ছবি: শাটারস্টক।
দিনের একটা সময় শিশুকে হালকা গান শোনান। যে কোনও হালকা গান শিশুর হাইপোথ্যালামাসকে শান্ত করে, তাকে ভাবুক করে তোলে। চিকিৎসাবিজ্ঞান বলছে, গান শিশুর মনঃসংযোগ বাড়ায়। স্মৃতিশক্তি সতেজ রাখে। তাই সন্তানকে ছোট থেকেই গান বা বাদ্যযন্ত্রের তালিম দিন। তাতে তার সৃজনশীলতাও বৃদ্ধি পাবে। ছবি: পিক্সঅ্যাবে।
সন্তানের যদি আগ্রহ থাকে, তবে বছর চারেক বয়স হলেই তাকে দাবা শিখতে ভর্তি করে দিন। দাবা এমন এক খেলা, যা শিখতে হলে ধীর-স্থির ও বুদ্ধিমান হতে হয়। এই খেলার সংস্পর্শে এলে শিশুর মনের বিকাশ হয়, স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পায় ও একাগ্রতা আসে। ছবি: পিক্সঅ্যাবে।
সন্তানের শব্দের সংগ্রহ বাড়ানোর দিকে নজর দিন ছেলেবেলা থেকেই। ইংরেজির সঙ্গে তার মাতৃভাষার প্রতিও আগ্রহ তৈরি করুন। ওয়ার্ড বুক সে ক্ষেত্রে কাজে আসবে। পড়তে না শেখা অবধি আপনিই তার সামনে সঠিক উচ্চারণে সে সব পড়ুন। শিশুর কান নতুন নতুন শব্দ শিখতে আগ্রহী হয়। উচ্চারণ শিখতেও এই উপায় অত্যন্ত কার্যকর। ছবি: পিক্সঅ্যাবে।
শিশুর বিকাশে কিন্তু অত্যন্ত জরুরি ভূমিকা পালন করে তার চারপাশের প্রকৃতি। মানুষ ছাডা়ও গাছপালা, পশু-পাখির সঙ্গে মিশতে দিন তাকে। বাড়িতে যদি পোষ্য না-ও থাকে, সন্তানকে নির্ভয়ে মিশতে দিন চারপাশের পশু-পাখির সঙ্গে। পশু-পাখিদের প্রতি মমত্ব, তাদের সঙ্গে খেলা— এ সব তাকে সুন্দর মনের অধিকারী করবে। ছবি: পিক্সঅ্যাবে।
আত্মকেন্দ্রিকতা নয়, সন্তানকে ছোট থেকেই উপকারী হয়ে উঠতে শেখান। পাড়া-প্রতিবেশী থেকে বন্ধুবান্ধব— সকলের প্রতিই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিক সে। আর এই বিষয়ে আপনিই হয়ে উঠতে পারেন ওর দৃষ্টান্ত। নিঃস্বার্থ ভাবে অন্যের উপকারের সুফল ওকে শেখান ছোট থেকেই। এতে শিশু বড় মনের অধিকারী হবে সহজেই। ছবি: শাটারস্টক।