গ্রীষ্মে সুস্থ থাকতে রোজই পাতে রাখুন একটি করে আম। ছবি: শাটারস্টক।
গাছে আমের মুকুল ধরতে না ধরতেই আম নিয়ে স্বপ্ন শুরু হয়ে যায় খাদ্যরসিকদের। আর একটু গরম পড়তেই বাজারে বাজারে বাহারি আমের দরদামে লেগে পড়েনতাঁরা। গ্রীষ্মে প্যাচপেচে গরম-আর্দ্রতার অস্বস্তি সত্ত্বেও যে কারণগুলো এই ঋতুকে কিছুটা হলেই সহনীয় করে তুলেছে, তার অন্যতম এই সময়ের ফলের বাজার।
আর এই ফলের বাজারে জনপ্রিয়তা ও স্বাদে সকলের থেকে এগিয়ে থাকে আম। কাঁচা হোক বা পাকা, সব রকমের আমই রসনাতৃপ্তিতে ব্যবহার করে বাঙালি। কাঁচা আম দিয়ে আম-তেল, আম ডাল, আমের আচার কত কী হয়! আর কাঁচামিঠে আমের তো কদরই আলদা। পাকা আমের তো জুড়ি মেলা ভার।
তবে শুধুই কি স্বাদ! গুণের দিক থেকেও কিন্তু অন্যান্য ফলকে রীতিমতো টেক্কা দিতে পারে আম। পেট থেকে ত্বক-চুল বিভিন্ন সমস্যা মেটানোর জন্য আমের ভূমিকা অস্বীকার করা যায় না। পুষ্টিবিদদের মতে, আমের শাঁস থেকে আঁটি পুরোটা থেকেই কিছু না কিছু উপকার মেলে। পরিমিত পরিমাণে আম খেলে শরীরের অনেক উপকার হয়। জানেন কি, আপনার শরীর সুস্থ রাখার ক্ষেত্রে আম কতটা সদর্থক ভূমিকা পালন করতে পারে?
আরও পড়ুন: ভাত খেলেও বাড়বে না মেদ, কী ভাবে আর কতটুকু খাবেন জানেন?
আমে রয়েছে উচ্চ পরিমাণে ভিটামিন সি, সেই সঙ্গে ফাইবার। রক্তে উপস্থিত খারাপ কোলেস্টরল-এর মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। তাই পরিমাণ বুঝে নিয়মিত আম খান। আমে রয়েছে দরকারি উৎসেচক, যা শরীরের প্রোটিন অণুগুলো ভেঙে ফেলতে সাহায্য করে এবং হজমশক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। ত্বকের যত্নেও ভূমিকা রয়েছে আমের। আমের আঁশে থাকা ভিটামিন সি ত্বকের উজ্জ্বলতা ফেরায়।আম বাটা মাখলেও ত্বকে রোমের মুখগুলো খুলে গিয়ে ত্বক পরিষ্কার থাকে। আম চোখের জন্যও উপকারী। মানুষের শরীরে প্রয়োজনীয় ভিটামিন ‘এ’-এর চাহিদার প্রায় পঁচিশ শতাংশের যোগান দিতে পারে আম। ভিটামিন এ চোখের জন্য খুবই উপকারী। দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি এবং রাতকানা রোগ থেকে রক্ষা করে। এছাড়াও আমে রয়েছে প্রায় ২৫ রকমের বিভিন্ন কেরাটিনোইডস যা আপনার ইমিউন সিস্টেমকে রাখবে সুস্থ ও সবল।
আরও পড়ুন: শ্বেতী হানা দিতে পারে যখন তখন, যে কারও শরীরে! আজ থেকেই মেনে চলুন এ সব
আমের শাঁস থেকে আঁটি পুরোটা থেকেই কিছু না কিছু উপকার মেলে।
আমে পাওয়া যায় টারটারিক অ্যাসিড, ম্যালিক অ্যাসিড ও সাইট্রিক অ্যাসিড যা শরীরে অ্যালকালাই বা ক্ষার ধরে রাখতে সাহায্য করে। আমের মধ্যে আছে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট যা ক্যানসার প্রতিরোধে সাহায্য করে। যাঁরা অপুষ্টি জনিত সমস্যায় ভোগেন, তাঁরাও গরমে রোজ একটা করে আম খেতে পারেন। শরীরে শক্তি জোগান দিতে আমের জুড়ি মেলা ভার।
তবে পুষ্টিবিদদের মতে, কার্বাইডে পাকানো আম কেনার চেয়ে গাছপাকা আমের সন্ধানে থাকুন কিংবা একটু কাঁচা থাকলেও তাকে বাড়িতে এনে চালের ড্রামে রেখে পাকিয়ে নিন। কারণ প্রাকৃতিক উপায়ে পাকানো আমে যতটা উপকার মেলে, কার্বাইডে পাকানো আমে ততটা মেলে না। কাজেই আম কিনুন বেছে।