সন্তান বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তার নিজস্ব একটা জগৎ তৈরি হয়। বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আপনি যা যা তাকে শেখাচ্ছেন, সে সবের বহিঃপ্রকাশই তার স্বভাবে জায়গা পায়। যে কোনও সুঅভ্যাসই তাই গড়ে ওঠে বাড়ি থেকে।
বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটানোই হোক বা কোনও পরিচিত মানুষের বাড়িতে নিমন্ত্রণরক্ষা সবেতেই খাওয়াদাওয়া একটা মূল বিষয় তো বটেই। এই খাওয়াদাওয়ার পাঠ শিশুকে শেখান একেবারে ছোটবেলা থেকেই। কেবলমাত্র সবরকমের খাবার খেতে শেখা ও নিজে হাতে খেতে পারাটাই কিন্তু খাবার টেবিলের সহবত নয়।
বরং ছোট থেকেই রপ্ত করান এমন কিছু অভ্যাস, যাতে পরবর্তী কালে খাওয়ার কোনও ম্যানার্স নিয়ে বাইরের জগতে তাকে কোনও সমস্যায় পড়তে না হয়। সেটাও কিন্তু শিশুর যত্নের অন্যতম একটি অধ্যায়। জানেন সে সব কী কী?
আরও পড়ুন: ব্রেকফাস্টে চা-কফি? ক্ষতি এড়াতে তার বদলে খান এ সব পানীয়
তাকে খাওয়াতে খাওয়াতে খাবার সম্পর্কে পরিচয় করান গল্পের ছলে।
টেবিলে বসান: একটু বড় হওয়ার পর থেকে আর আলাদা করে, আলাদা ঘরে খাওয়া নয়। প্রথম থেকেই বাড়ির সকলের সঙ্গে তাকে টেবিলে বসতে শেখান। খুব উঁচু খাবার টেবিলে বসতে ওর অসুবিধা হলে খেয়াল রাখুন সে দিকে। প্রয়োজনে ওর জন্য ব্যবহৃত চেয়ারকে বিশেষ উপায়ে বানিয়ে দিন। যদি মেঝেতে বসে খাওয়ার চল থাকে, তবে সকলের সঙ্গে বসে খাওয়ার অভ্যাস করান।
সব রান্না খাওয়ান: বাড়িতে শিশু থাকলে তার মতো করেই রান্না করুন। রান্নায় এমন কোনও তেল-মশলা দেবেন না, যাতে কোনও একটি পদ সে খেতে না পারে। শারীরিক কারণে বারণ না হলে সব রান্নাই একটু একটু করে খাওয়ান তাকে। এতে কোন পদের পর কী খেতে হয়, সন্তান তা বুঝতে শিখবে। দরকারে তাকে খাওয়াতে খাওয়াতে সেই পদগুলি সম্পর্কেও পরিচয় করান গল্পের ছলে।
খাওয়ার উপকরণ: টেবিলে থাকা থালা-বাসন, কাঁটাচামচ এ সবের ব্যবহার প্রথম থেকেই শেখান ওকে। কোন পদে কী ধরনের চামচ ব্যবহার করতে হয়, মিষ্টি কেন আলাদা পাত্রে খেতে হয়, এ সব ছোট ছোট বিষয় শেখান প্রথম থেকেই। এতে রেস্তরাঁ ম্যানার্সের কিছুটাও শেখা হয়ে যাবে তার।
আরও পড়ুন: এ সব অভ্যাস রপ্ত করলে বুদ্ধি তো বাড়বেই, স্মৃতিশক্তিও হবে মজবুত
শিশুকে শেখান ভাল রান্না খেলে কী ভাবে প্রশংসা করতে হয়।
পরিবেশন: একটু বড় হলে ছেলে হোক বা মেয়ে, তাকে পরিবেশনের কাজে সাহায্য করতে বলুন। বাড়ির কোনও কাজই লিঙ্গভিত্তিক হয় না। তাই সন্তান মাত্রই স্বাবলম্বী করে তোলার চেষ্টা করুন।
প্রশংসা: রান্না ভাল লাগলে শিশুকে শেখান কী ভাবে প্রশংসা করতে হয়। এতে তার মধ্যে সৌজন্যবোধ যেমন বাড়বে, তেমনই পাবিরাবিক বন্ধনগুলিকে দৃঢ় করতে শিখবে সে।
খেয়ে উঠে: খাওয়ার পর অন্যের ভরসায় নিজের থালা-বাসন ফেলে উঠে যাওয়া অত্যন্ত খারাপ অভ্যাস। সন্তান ছেলে হোক বা মেয়ে, তাকে ভবিষ্যতে বাইরে পড়তে যেতে হতে পারে, পেশার কারণেও তাকে বাইরে থাকতে হতে পারে। তাই টেবিল পরিস্কারটুকু নিজের জন্য রাখলেও, ওর থালাবাটি তুলে সিঙ্কে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব ওকেই দিন। একবারে না পারলে দু’বারে। দরকারে সাহায্য করুন কিন্তু এি কাজটায় অব্যস্ত করান।