Board exams 2023

উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা নিয়ে চিন্তিত সন্তান? কী ভাবে তাকে সাহায্য করবেন?

বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ে উদ্বেগে ভোগে অধিকাংশই। যেটুকু সময় বাকি আছে, ভয়ের চোটে তা-ও নষ্ট হয়। সমাধান কোন পথে?

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৫:০০
Share:

পরীক্ষার্থী এই সময় অতিরিক্ত মানসিক চাপ ও উদ্বেগে ভুগলে কিন্তু পরীক্ষার ফল আশনুরূপ হবে না। ছবি: শাটারস্টক।

চলছে মাধ্যমিক পরীক্ষা, সামনেই আবার উচ্চমাধ্যমিক। আর সন্তানের পরীক্ষা মানেই উদ্বেগ থেকে প্রস্তুতি, সব যেন আপনারও! খুদেদের ছোট বয়স থেকেই এখন পড়াশোনার চাপ, কেরিয়ারের ভাবনা শুরু করে দেন অভিভাবকদের একাংশ।

Advertisement

আর এই ভাবনা আর ভয় থেকেই কোনও কোনও শিশুর ক্ষেত্রে দেখা যায় পরীক্ষাভীতি। বিশেষ করে বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ে উদ্বেগে ভোগে অধিকাংশই। আর এই ভয়ের জেরে ফলাফল আরও খারাপ হয়। যেটুকু সময় বাকি আছে, ভয়ের চোটে তা-ও ব্যবহার করা হয়ে ওঠে না। সিলেবাস শেষ হয়নি বা তেমন করে মন দেওয়া হয়নি সারা বছর, এমন সমস্যাও নতুন নয়।

কোনও ভাবে যদি আপনার সন্তানও এমন সমস্যায় পড়ে, তা হলে সেই ভয় কী ভাবে দূর করবেন? হাতে যেটুকু সময় আছে, মন দিয়ে ও বুদ্ধি খাটিয়ে সেটুকু সময়কে কাজে লাগাতে পারলে কিন্তু অনেকটাই সামলানো যায়৷ অভিভাবক হিসাবে কী ভাবে সাহায্য করবেন সন্তানদের?

Advertisement

১) বোর্ডের পরীক্ষার আগে কিংবা পরীক্ষা চলকালীন রুটিন মেনে চলাটা ভীষণ জরুরি। কত ক্ষণ পড়বে, স্নান–খাওয়া–ঘুমে কত সময় লাগবে, সব হিসাব করে নিন। তবে হ্যাঁ, ঘুমের সময় যেন খুব একটা কাটছাঁট না করে, সেই দিকে নজর দিতে হবে আপনাকেই। কারণ ঠিক মতো না ঘুমলে পড়ায় মন বসবে না। পড়া মনে রাখতেও অসুবিধে হবে৷ আধ ঘণ্টা রাখুন আড্ডা, বেড়ানো, গান শোনা ইত্যাদির জন্য৷ পড়া মনে রাখতে গেলে এটুকুর দরকার আছে।

২) এই সময়ে পরিকল্পনা করে পড়াশোনা করতে হবে। সন্তান কী ভাবে পড়বে, তার প্ল্যান করে দিতে পারেন আপনি। যে যে বিষয়ে সে দুর্বল, সেগুলি বেশি করে পড়তে হবে। দরকারে কয়েক বছরের প্রশ্ন ঘেঁটে একটা সাজেশন করে নিতে হবে। সাজেশন ভিত্তিক পড়াশোনার অভ্যাস ভাল নয়, তবু কঠিন সময়ে কিছুটা কাজে আসবে। গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ও বার বার পড়া চাই। একটা অধ্যায় শেষ করার জন্য সময় বেঁধে দিন।

৩) পরীক্ষার্থী এই সময় অতিরিক্ত মানসিক চাপ ও উদ্বেগে ভুগলে কিন্তু পরীক্ষার ফল আশনুরূপ হবে না। অনেক সময়ে বাবা-মা সন্তানের থেকে মাত্রাতিরিক্ত প্রত্যাশা করেন। ভাল ফলের জন্য অতিরিক্ত চাপ দেন। তাঁদের বুঝতে হবে, সব শিশুর মেধা এক নয়। কিন্তু তা না-বুঝে সন্তানের সামনে বাবা-মা 'টার্গেট' ঝুলিয়ে দিলে সন্তান সমস্যায় পড়ে যায়। অন্য কারও সঙ্গে নিজের সন্তানের তুলনা করবেন না।

যে কোনও ঘরোয়া অশান্তি পাশ কাটিয়ে যান৷ একাগ্রতা বাড়াতে ডিপ ব্রিদিং, মেডিটেশন, যোগাসনের কোনও জুড়ি নেই৷ ছবি: শাটারস্টক।

৪) উদ্বেগে ভুগলে অভাবে প্রথম দিকে মন বসাতে অসুবিধা হবে৷ কাজেই উত্তেজক কোনও ব্যাপার থেকে সন্তানকে দূরে রাখুন৷ ঝগড়া–বিবাদের মধ্যে রাখবেন না তাকে৷ যে কোনও ঘরোয়া অশান্তি পাশ কাটিয়ে যান৷ একাগ্রতা বাড়াতে ডিপ ব্রিদিং, মেডিটেশন, যোগাসনের কোনও জুড়ি নেই৷ অভ্যাস করিয়ে দেখতে পারেন৷ চাপ কমাতে খাওয়াদাওয়ার দু’-চারটে নিয়ম মেনে চলতে বলুন সন্তানকে৷ তাকে কফি বেশি খেতে দেবেন না৷ কোল্ড ড্রিঙ্কও না খাওয়াই ভাল৷ ভেষজ চা দিতে পারেন৷ হালকা খাবার আর দিনে অন্তত ৭–৮ গ্লাস জল খাওয়ার অভ্যাস করতে বলুন খুদেকে।

৫) চেষ্টা করেও তার মানসিক চাপ না কমলে হাত–পা কাঁপা, বুক ধড়ফড়, ঘেমে যাওয়ার মতো উপসর্গ শুরু হলে এবং তার জেরে পড়াশোনা এবং জীবনযাত্রা যদি ব্যাহত হয়, দেরি না করে মনোরোগের চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে৷ প্রয়োজনে ওষুধ খেতে হতে পারে৷ চাপ কাটাতে আর বন্ধুদের পাল্লায় পড়ে উঁচু ক্লাসে অনেকে নেশা করতে শুরু করে, ভাবে এতে পড়ার সুবিধা হবে। কিন্তু হয় উল্টো বিপত্তি৷ কাজেই এ সব পথে যেন সন্তান একেবারেই না হাঁটে, সে দিকে খেয়াল রাখুন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement