বিদ্যৎস্পৃষ্ট হওয়া থেকে বাঁচতে মেনে চলুন কিছু বিশেষ নিয়ম। ছবি: শাটারস্টক।
উৎসবের মরসুমে উচ্ছ্বাসের সঙ্গে ব্যস্ততাও যোগ হয়। আর তাই সাধারণ কিছু কাজে অসাবধানতা বা খতিয়ে না দেখার বিপদ তাড়া করতেই পারে। যেমন বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়া। এমনিতেই দীপাবলির শেষে ভাইফোঁটা মিটলেই বাড়িতে লাগানো আলো খুলতে শুরু করবেন অনেক গৃহস্থ। এ ছাড়াও রোজনামচায় বিদ্যুতের নানা কাজে অংশ নিতেই হয় আমাদের। তাই সাবধানতা না নিলে এ সব সময়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা থেকেই যায়।
মানবদেহ তড়িতের সুপরিবাহী। তাই বিদ্যুৎপ্রবাহ আছে এমন কোনও খোলা তার বা বোর্ডের সংস্পর্শে এলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন অনেকেই। বিদ্যুতের প্রাবল্যের উপর মানুষের বেঁচে থাকাও নির্ভর করে। খুব কম সময়ে শরীরে অনেকটা বিদ্যুৎ চলে গেলে সেই মানুষের তৎক্ষণাৎ মৃত্যুও অসম্ভব নয়।
তখন সামনে দাঁড়িয়ে থাকলেও অনেক সময় প্রায় কিছুই করে উঠতে পারি না আমরা। কারণ, ঠিক কী উপায় অবলম্বন করলে সহজেই এমন পরিস্থিতির সঙ্গে লড়া যায় তা নিয়ে কোনও স্পষ্ট ধারণা আমাদের অনেকেরই নেই। দেখে নিন, হঠাৎ বিদ্যুৎ আক্রান্ত কাউকে কী ভাবে বাঁচাবেন।
আরও পড়ুন: ডেঙ্গির চরিত্র বদল, নানা অঙ্গে বৈকল্য
কোনও ভাবে কেউ বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হলে কোনও ভাবেই তার গায়ে হাত দেবেন না। গায়ে জলও দেবেন না। বরং ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিন। ধাক্কা দেওয়ার সময় শুকনো উলের পশাক, কাঠের টুকরো, খবরের কাগজ অথবা রাবার জাতীয় তড়িৎ অপরিবাহী বস্তু দিয়ে সজোরে আঘাত করে সরান। তাতে বিদ্যুতের উৎস থেকে সেই ব্যক্তির ছিটকে যাওয়া সম্ভব হবে। দ্রুত মেন সুইচ বন্ধ করতে বলুন কাউকে। অনেক সময় এই মেন সুইচ বন্ধ করতে গিয়ে যে সময় নষ্ট হয়, তাতেই প্রাণ চলে যায় বিদ্যুস্পৃষ্ট ব্যক্তির। তাই সামনে থাকলে তাকে বিদ্যুতের উৎস থেকে সরানোর চেষ্টাই প্রথম করুন, সঙ্গে অন্য কাউকে নির্দেশ দিন মেন সুইচ বন্ধ করার। একান্ত সে উপায় না থাকলে বা হাতের কাছে তড়িৎ অপরিবাহী কিছু না মিললে দ্রুত মেন সুইচ বন্ধের দায়িত্ব নিন। বিদ্যুৎ থেকে মুক্তি পেলেও অনেক সময় ব্যক্তির শ্বাসপ্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায়। তেমন হলে বুকের উপর জোরে চাপ দিয়ে হৃদযন্ত্র চালু করুন। রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করুন। বিদ্যুতের উৎস থেকে সরাতে পারলে সঙ্গে সঙ্গে গরম দুধ ও গরম জল খাওয়ান আক্রান্ত ব্যক্তিকে। এতে শরীরের রক্ত সঞ্চালন দ্রুত স্বাভাবিক হবে।
আরও পড়ুন: কোথায় থাকেন তার উপর নির্ভর করবে হার্টের রোগ হতে পারে কি না!
গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
কী কী সাবধানতা
বিদ্যুতের কাজ করার সময় মেন সুইচ বন্ধ করে নিন আগেই। পায়ে রাবারের জুতো দিয়ে বিদ্যুতের কাজ সারুন, খালি পায়ে এমন কাজে না হাত দেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ। কোনও ভাবেই জল হাতে বাড়ির বৈদ্যুতিক সুইচে হাত দেবেন না। খোলা তার এড়িয়ে চলুন, বর্ষায় জল জমে থাকা রাস্তার ভিতরে খালি পায়ে বা রাবার, স্পঞ্জ ভিন্ন অন্য উপাদানের জুতো পরে হাঁটাচলা করবেন না। বাড়ির সব ক’টি বৈদ্যুতিক তার ও আর্থিং ঠিক আছে কি না খতিয়ে দেখে নিন।