নিজের চেহারা-রূপ নিয়ে নানা পরীক্ষানিরীক্ষার রোমাঞ্চ এই খ্যাতনামাদের কম ছিল না। তাই বার বার শরণ নিয়েছেন প্লাস্টিক সার্জারির। কোথাও বা শরীরের মাপজোক নিখুঁত করার ইচ্ছা, কেউ চেয়েছেন মেদ বিদায় দিতে। আবার কেউ আগের অস্ত্রোপচারের ভুল ঢাকতে ব্যস্ত হয়েছেন। কিন্তু তার ফলাফল কী হল জানেন?
বিপুল অর্থব্যয় করে কোথাও অনভিজ্ঞ সার্জেনের হাতে পড়ে বা চিকিৎসকের বারণ না শুনে জোর করে সার্জারির নেশায় কারও নাকই গেল উড়ে, কারও বা মুখের উপর চেপে বসল তাল তাল চর্বি, আগের সুন্দর চেহারা বদলে এমন কদাকার হলেন যে নিজেরাই চমকে গেলেন! জানেন পৃথিবীর ভয়ঙ্কর সব প্লাস্টিক সার্জারির নমুনা? দেখে নিন সে সব।
সার্জারিতে সায় ছিল না তাঁর সার্জেনের। তাই নিজেই ব্যবস্থা করলেন নিজের অপারেশনের। কোরিয়ার মডেল হ্যাং মিওকুর বয়স যখন ২৮, তখনই তিনি প্রথম ঝুঁকি নেন। তার পর সার্জারির নেশায় পেয়ে বসল তাঁকে। ৪৮ বছর পর্যন্ত লাগাতার ছুরি-কাঁচিতে নিজের চেহারা বদলান। এমনকি, রান্নার তেলও ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে মুখে দিতেন তিনি!
১৫ বছর বয়সে সার্জারির মাধ্যমে নিজের লিঙ্গ পরিবর্তন করা দিয়ে শুরু। তার পর থেকেই মুখ ও চেহারায় বদল আনতে একাধিক বার কসমেটিক সার্জারির শরণ নেন আমেরিকার গায়িকা ও মডেল আমান্দা লেপোরে। আর তাতেই চেহারা ভয়ানক হয়ে ওঠে তাঁর। চোখ, ঠোঁট বদলে ভয়াবহ দেখতে হয়ে ওঠেন লেপোরে।
আমেরিকান অভিনেতা ও পরিচালক সিলভেস্টার স্টালোনের মা জ্যাকি স্টালোনের কথাই ধরুন না। প্লাস্টির সার্জারির সঙ্গে তাঁর ‘গভীর প্রেম’। মুখের ত্বককে টানটান রাখতে ফেস আপলিফমেন্টের শরণ নেন তিনি। রাইনোপ্লাস্টি, ব্লোলিফট ইত্যাদি পদ্ধতির ফলে মুখের চেহারার এতটাই পরিবর্তন হয়েছে যে তাঁকে আর চেনাই যায় না!
প্লাস্টিক সার্জারি নিয়ে কথা হবে আর মাইকেল জ্যাকসনের নাম উঠবে না তা আবার হয়? আশির দশকে বিশ্ববন্দিত এই পপ গায়ক নজর কেড়েছিলেন তাঁর কণ্ঠ ও রূপের জেরে। কিন্তু তার পর দু’দশক ধরে চেহারায় নানা পরিবর্তন আনতে ১০টির বেশি প্লাস্টিক সার্জারি করান তিনি। এক সময় তাঁর চেহারায় নাকের অস্বিস্তই প্রায় টের পাওয়া যেত না।
জন্মসূত্রে ব্রাজিলীয় টিভি তারকা রডরিগো অ্যালভেস সোশ্যাল সাইটে ‘হিউম্যান কেন ডল’ নামেই পরিচিত। গোটা শরীরে ৫১টি প্লাস্টিক সার্জারি ও ১০৫টি সৌন্দর্য্যবর্ধক চিকিৎসায় তাঁর খরচ হয় প্রায় সাড়ে ৩ কোটি টাকা! এই বিপুল অর্থের বিনিময়েও নিজের নাকটিকে রক্ষা করতে পারেননি রডরিগো।
‘দ্য ব্রাইড অব উইল্ডারস্টেন’ জোসেলিন উইল্ডারসন এক জন মার্কিন সমাজবিদ। প্লাস্টিক সার্জারির প্রতি দুর্বলতাই তাঁকে বেশি খ্যাতি এনে দিয়েছে। প্রায় ২৯ কোটি টাকা খরচ করে শতাধিক কসমেটিক সার্জারি করান তিনি। এর ফলও পান হাতেনাতে। চোখ মিশে যায় গালের চামড়ার সঙ্গে। ঠোঁটের আকারও কদাকার হয়ে ওঠে।
নিজের চেহারায় বদল আনার নেশায় আমেরিকান ডেনিস অ্যাভনকে টেক্কা দেওয়া মুশকিল! গাল, চোখ, ঠোঁট, দাঁত, চিবুক, নখ-সহ শরীরের নানা অঙ্গের পরিবর্তন আনেন। ফলে তাঁর মুখটাই বিড়ালের মতো হয়ে গিয়েছে। এতটাই পরিবর্তন এসেছে যে ‘ক্যাটম্যান’ বা ‘স্টকিং ক্যাট’ নামেই পরিচিত এখন তিনি। শরীরে নানা ট্যাটু আরও বিচিত্র করেছে তাঁকে।
ইতালীয় ফ্যাশন ডিজাইনার দোনাতেল্লা ভেরসেস নিজের শরীরে একাধিক রাইনোপ্লাস্টি ও লিপ সার্জারি করান। চিকিৎসকদের বারণ না শুনে পেটের চর্বি কমানো, স্তনের আকার বৃদ্ধি ইত্যাদি করাতে গিয়ে গোটা চেহারাই হাস্যাস্পদ করে তুলেছেন ইনি। তাতেও সাবধান হননি। এখনও বলিরেখা ঢাকতে কোলাজেনের যথেচ্ছ ব্যবহার করেন ত্বকে।