EAR BUDS

কটন বাড ব্যবহার করেন? কী ক্ষতির দিকে নিজেকে ঠেলে দিচ্ছেন জানেন?

স্বভাবজাত কারণে প্রায়ই কটন বাড নিয়ে কানে সুড়সুড়ি দিতে দেখা যায় অনেককেই। কিন্তু জানেন কি, সাধারণ দেখতে নরম এই বাডগুলি আমাদের কানের কী কী ক্ষতি করে?

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০১৮ ১৫:১২
Share:

বাডস ব্যবহারের অভ্যাস থাকলে এখনই সচেতন হন। ছবি: শাটারস্টক।

অবসর সময়ে নিছক আরামের জন্য কিংবা স্বভাবজাত কারণে প্রায়ই কটন বাড নিয়ে কানে সুড়সুড়ি দিতে দেখা যায় অনেককেই। এই আরামের নেশায় বাইরে বেরোলেও অনেকেই কটন বাড সঙ্গে রাখেন। মানুষের চাহিদার কথা মাথায় রেখে নানা নামী ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থাও কটন বাড তৈরি করে। কিন্তু জানেন কি, সাধারণ দেখতে নরম এই বাডগুলি আমাদের কানে আরাম দিলেও আসলে ক্ষতি করে মারাত্মক।

Advertisement

সম্প্রতি মার্কিন চিকিৎসক ক্রিস্টোফার চ্যাং এই অভ্যাসের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। কান পরিষ্কারের জন্য বাডের উপর নির্ভর করার স্বভাব নিয়ে সম্প্রতি একটি মেডিক্যাল ওয়েবসাইটে সচেতনও করেছেন তিনি। তাঁর মতে, কটন বাডের তুলো অসাবধানতাবশত কানের ভিতর ঢুকে যাওয়ার ঘটনা তো আকছার হয়। তা হলে অনেক সময়ই তা অস্ত্রোপচার করে বার করতে হয়। এ ছাড়া কানের ভিতরের তরুণাস্থিগুলি এই বাডের আঘাতে নষ্ট হয়। ফলে শ্রবণশক্তি দুর্বল হওয়ার সঙ্গে পর্দার ক্ষতি হয়। অকালে চলে যেতে পারে শ্রবণক্ষমতাও।

কানের বাড ও তার ব্যবহার নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা একটি সমীক্ষা চালায়। তাতেই আশঙ্কিত হয়ে পড়েন চিকিৎসকরা। দেখা যায়, কানে নরম বাজ ব্যবহার করার ‘বাতিকে’ প্রতি বছর গোটা দুনিয়ায় মারা যান প্রায় সাত হাজার মানুষ। বিশ্বের লোকসংখ্যার নিরিখে এ সংখ্যা নগণ্য হলেও ভয়টা অন্যত্র। সমীক্ষায় উঠে এসেছে, প্রায় ৩৬ শতাংশ মানুষ এই অভ্যাসের ক্ষতিকারক দিক সম্পর্কে অবগত। প্রায় ২৯ শতাংশ মানুষ জেনেশুনে কানের বাড ব্যবহার করে কানের পর্দার নানা ক্ষতি করেছেন।

Advertisement

আরও পড়ুন: অ্যান্টিবায়োটিক খান? এ সব সাবধানতা না মানলে বিপদে পড়বেন কিন্তু

চ্যাংয়ের মতকে সম্পূর্ণ সমর্থন করছেন কলকাতার নাক-কলা-গলা বিশেষজ্ঞরাও। ‘‘কানে যেটুকু নোংরা জমে তা শরীরের স্বাভাবিক কম্পন, হাঁচি-কাশি, স্নান, ঘুম ইত্যাদি শারীরবৃত্তীয় কাজে বার হয়ে যায়। এর বাইরেও কানে ময়লা রয়েছে এবং তা পরিষ্কার করা প্রয়োজন— এই ধারণাটাই আসলে ভুল।’’ জানাচ্ছেন চিকিৎসক শীর্ষক দত্ত। তাঁর মতে, আসলে কানের ভিতরের আঠালো পদার্থ আমাদের কানের জন্য ভাল। তা কানের পর্দাতে বাইরের সংক্রমণ ও ধুলোবালি থেকে রক্ষা করে। তাই তাকে জোর করে খুঁচিয়ে টেনে বার করার কোনও অর্থই নেই।

তাঁর সুরে সুর মিলিয়েছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দেবাশিস দাসও। তাঁর মতে, ‘‘কানের ভিতরে থাকা যে ময়লা টেনে বার করেন তা বরং কানের পর্দাকে রক্ষা করছিল। শরীর একটা নির্দিষ্ট ওজনের পর আর ময়লা নিজের ভিতরে রাখে না, তাকে নানা জৈবিক উপায়ে বার করে দেয়। সুতরাং কানের ভিতরের ময়লাকে ইয়ার বাড দিয়ে খোঁচানো যত কমবে ততই ভাল থাকবে কান। এই অভ্যাসের জেরে অকালে শ্রবণশক্তি হারিয়ে ফেলাও আশ্চর্যের নয়।’’

আরও পড়ুন: ঘাড় গুঁজে মোবাইলে সারা ক্ষণ? কী বিপদ ডেকে আনছেন জানেন?

তা হলে উপায়?

কান পরিষ্কার করা দরকার, এই ধারণা থেকে আগে সরুন। বিশেষজ্ঞদের মতে, কানে খুব অস্বস্তি হলে বা কানের ময়লা ঠিক মতো বার হচ্ছে না মনে হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। কানের ড্রপ সরাসরি কানে না দেওয়াই ভাল। অনেক সময় চিকিৎসকরাই তা নাকের মাধ্যমে নিতে বলেন, সেই পরামর্শ মেনে চলুন ও ড্রপ নেওয়ার দরকার হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement