কীটদংশনে গোড়ায় সাবধান হওয়া জরুরি। কারণ কিছু পোকামাকড়ের কামড়ে ইনফেকশন হতে পারে।
প্রথমে যা দেখবেন
এই সমস্যাকে দু’ভাবে দেখা জরুরি। জেনারেল ফিজ়িশিয়ান ডা. সুবীরকুমার মণ্ডলের কথায়, ‘‘ধরুন মাকড়সা বা আরশোলা কাউকে যদি কামড়ায় বা চেটে দেয়, তা হলে তার স্যালাইভা চামড়ার উপরে ক্ষত তৈরি করে। কিন্তু সে যদি কোনও ভাইরাস বহন করে, তখন কিন্তু তা প্রাণঘাতীও হতে পারে। ভেক্টর-বোর্ন ডিজ়িজ় নিয়ে সচেতনতা জরুরি। যেমন ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গি। এ ক্ষেত্রে এডিস মশা খুব ভয়ঙ্কর। এই মশার গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায় যে, সে একটা ঘরে ঢুকলে প্রায় সকলকেই কামড়ায়। ফলে খুব দ্রুত সংক্রমণ হয়। তাই অন্য জীবাণু বহনকারী কীটপতঙ্গ দ্বারা যদি কেউ সংক্রমিত হন, েস বিষয়ে বেশি সাবধান হতে হবে।”
তবে আদৌ পোকার কামড়? নাকি অন্য কোনও রোগ, সেটাও বুঝতে হবে। মেডিসিনের চিকিৎসক অরুণাংশু তালুকদার বললেন যে, “পোকামাকড় সাধারণত ক্রল করে শরীরের কোনও অংশের উপর দিয়ে চলে যায়। ফলে তার দংশনের চিহ্নের একটা ধারা থাকবে। ধরুন, আপনি সকালে উঠে দেখলেন যে, হাতে, পায়ে বা মুখের কোনও অংশে এমন কীটদংশনের চিহ্ন। দিনের বিভিন্ন সময়ে সেই জায়গাটা আরও কয়েক বার ভাল করে পর্যবেক্ষণ করে দেখুন, সেই ক্ষত বা দাগ বেড়েছে কি না। কারণ হার্পিস জস্টারেও এমন চিহ্ন দেখা যায়। পোকামাকড়ের কামড় হলে তা এক জায়গায় থাকবে। আর রোগের ক্ষেত্রে তা কিন্তু বাড়বে।” তাই এ ক্ষেত্রে পর্যবেক্ষণ জরুরি।
কী করবেন?
পোকামাকড় কামড়ালে সাধারণত তা আপনা থেকেই সেরে যায়। কিন্তু শরীরের কোনও অংশে কীটদংশনের চিহ্ন দেখলে কখনও চুলকাবেন না। তা হলে পোকামাকড়ের কামড় থেকে ইনফেকশন হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যাবে। হয়তো সাধারণ কীটদংশন নিজে থেকে সেরে যেত। কিন্তু চুলকানোর ফলে নখ লেগে ইনফেকশন হয়ে গেলে তা সারতে সময় লাগবে।
অ্যান্টিসেপটিক মলম লাগানো যেতে পারে ক্ষতস্থানে, কিন্তু চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিকস খাবেন না। কীটদংশনের স্থান থেকে যদি দেখেন পুঁজ বেরোচ্ছে, ক্ষত কিছুতেই কমছে না, সে ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। বিশেষজ্ঞের পরামর্শ মতো ওষুধ খেতে হবে এবং চিকিৎসা করতে হবে।
ডায়াবিটিস, ক্যানসার ও এইচআইভি রোগীদের ক্ষেত্রে সামান্য কীটদংশন থেকেও ইনফেকশন হতে পারে। তাই এ ধরনের রোগীদের ক্ষেত্রে আরও সাবধানতা প্রয়োজন।
খেয়াল রাখবেন
পোকার ধরনের উপরে চিকিৎসা নির্ভর করে। তাই পোকার কামড়ের পর থেকে আক্রান্ত ব্যক্তির শারীরিক সমস্যা দেখা দিলে সতর্ক হন। শ্বাসকষ্ট, জ্বরের মতো লক্ষণ দেখা দিলে তৎক্ষণাৎ হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। আর কখনওই ক্ষতস্থান মুড়ে বেঁধে রাখবেন না।
বেড়াতে গিয়েও খুব সাবধান। জঙ্গল বা পাহাড়ি এলাকায় গেলে একটা মশারি অবশ্যই সঙ্গে রাখুন। ছোট বাচ্চা সঙ্গে থাকলে তাকে ফুলস্লিভ জামাকাপড় পরানোই ভাল। যে হোটেলে থাকবেন, সেখানে পেস্ট কন্ট্রোল নিয়মিত হয় কিনা খোঁজ নিন।