ঠোঁটের চারপাশে ব্রণ হয় কেন? সারবে কী ভাবে? ছবি: ফ্রিপিক।
ঠোঁটের কোনায় বা থুতনিতে ঠিক ঠোঁটের নীচের অংশতেই গুটি গুটি ফুস্কুড়ি বা ব্রণ হলে কষ্টের শেষ থাকে না। তাতে যেমন জ্বালা-যন্ত্রণা হয়, তেমনই হাত লেগে তা পেকে গিয়ে পুঁজও হতে পারে। ‘লিপ অ্যাকনে’ বা ঠোঁটের চারপাশে ব্রণ হতে দেখা যায় অনেকেরই। বিশেষ করে বয়ঃসন্ধি কালে হরমোনের ওঠানামার সময়ে এমন ব্রণ বা র্যাশ দেখা দেয় কিশোরীদের। ঠিকমতো মুখ পরিষ্কার না করলে, মৃতকোষ জমে বা ব্যাক্টেরিয়ার সংক্রমণেও এমন হতে পারে। আবার ওষুধের জেরে বা ভুল প্রসাধনী ব্যবহারের কারণেও এমন হয়।
ঠোঁটের চারপাশে ব্রণ কেন হয়?
ঠিকমতো মেকআপ না তুললে বা প্রতি দিন গাঢ় রঙের লিপস্টিক ব্যবহার করলে তার থেকে ঠোঁটের চারপাশে সংক্রমণ হতে পারে। ব্যাক্টেরিয়ার সংক্রমণের কারণে র্যাশ বা ব্রণর সমস্যা হতে পারে।
ত্বকের পরিচর্যা ঠিকমতো না হলে, মৃতকোষ জমে তা থেকে ব্রণ হতে পারে।
হরমোনের তারতম্যের কারণেও ঠোঁটের চারদিকে ব্রণ হয় অনেকের। আবার অ্যালার্জির কারণেও ব্রণ হতে পারে।
ঘাম জমে তা থেকে ব্রণ-ফুস্কুড়ি হতে পারে। খাবার খাওয়ার পরে মুখের চারপাশ ঠিকমতো পরিষ্কার না করলে বা বারে বারে ঠোঁটে হাত দিলে হাতের ঘাম, ময়লা লেগেও সংক্রমণ হতে পারে।
কর্টিকোস্টেরয়েড, অ্যান্ড্রোজেন, লিথিয়ামের মতো ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কারণেও ঠোঁটের চারপাশে ব্রণ বা র্যাশ দেখা দিতে পারে।
ত্বকের উপর রোমের গোড়ায় থাকে ‘সেবাসিয়াস গ্ল্যান্ড’, যেখান থেকে তেল উৎপাদন হয়। ফ্যাটি অ্যাসিড, শর্করার মতো প্রাকৃতিক কিছু যৌগের মিশ্রণে তৈরি সেবাম আসলে ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে। কিন্তু ত্বকের রোমকূপে অতিরিক্ত তেল জমে রোমকূপ বন্ধ হয়ে গেলে সেখানে ব্রণ হতে পারে।
সারবে কী ভাবে?
টি ট্রি তেল
অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টে ভরপুর টি ট্রি তেলের অ্যান্টি-ব্যাক্টেরিয়াল ও অ্যান্টি-ফাঙ্গাল গুণ রয়েছে। কয়েক ফোঁটা টি ট্রি তেল নারকেল তেল বা হোহোবা অয়েলের সঙ্গে মিশিয়ে ঠোঁটের চারপাশে মাখতে হবে। তুলো দিয়ে অল্প অল্প করে ব্রণ বা ফুস্কুড়ির উপর লাগিয়ে রাখতে হবে। প্রতি দিন ব্যবহার করলে খুব তাড়াতাড়ি ব্রণ থেকে নিষ্কৃতি পাওয়া যাবে।
লেবু-মধুর মাস্ক
ত্বকের রন্ধ্রে জমে থাকা তেল বার করতে হলে এই মাস্ক কার্যকরী হতে পারে। এক চামচ লেবুর রসের সঙ্গে দুই চামচ মধু মিশিয়ে তা ভাল করে মুখে মাখতে হবে। ১৫ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলতে হবে।
ওট্মিলের সঙ্গে মধুর স্ক্রাব
ত্বকের প্রদাহ নাশ করতে ও ব্রণের সমস্যা দূর করতে ওট্মিলের জুড়ি মেলা ভার। ২ চামচ ওট্সের গুঁড়োর সঙ্গে ১ চামচ মধু মিশিয়ে মাস্ক বানিয়ে নিতে হবে। এই মাস্ক সপ্তাহে তিন দিন ভাল করে মুখে মেখে ১৫ মিনিট রেখে ধুয়ে নিতে হবে। এই স্ক্রাব উন্মুক্ত রন্ধ্রের সমস্যা দূর করবে এবং ব্রণ থেকে রেহাই দেবে।
আপেল ও শসার মাস্ক
আপেল খাওয়ার পাশাপাশি ত্বকে প্রলেপের মতো লাগিয়ে রাখলেও সুফল মেলে। বিশেষ করে আপেল আর শসাকে একসঙ্গে মিলিয়ে তৈরি করা রূপটান যদি সপ্তাহে কয়েক বার ত্বকে লাগানো যায়, তবে ব্রণ বা র্যাশের সমস্যা হবেই না। একটি পাত্রে এক টেবিল চামচ আপেলের ক্বাথ এবং এক চা- চামচ শসার রস মিশিয়ে মুখে লাগিয়ে নিন। ১৫-২০ মিনিট পর্যন্ত অপেক্ষা করে ঠান্ডা জলে মুখ ধুয়ে ফেলুন।
ময়দা ও সয়া মিল্ক
সয়া মিল্কের প্রদাহনাশক গুণ রয়েছে। ময়দার সঙ্গে সয়া মিল্ক মিশিয়ে মাখলে ত্বক যেমন জেল্লাদার হবে, তেমনই রোমকূপে জমে থাকা ধুলো-ময়লাও বেরিয়ে যাবে। সপ্তাহে দু’দিন এই মাস্ক ব্যবহার করলে ব্রণের সমস্যা অনেক কমে যাবে।