গায়ে জল ছিটিয়ে দিলে বা জোর করে স্নান করাতে গেলে এরা রেগে যায়। তেমন হলে আঁচড়ে-কামড়েও দিতে পারে! জলে এতটাই ভয় বিড়ালের। সাধারণ গৃহপালিত কুকুর বা বিড়ালদের একটু নজর করলেই দেখবেন, কুকুর জল ঘাঁটতে ভালবাসলেও, বিড়াল শরীরে জল লাগাতে পছন্দ করে না একেবারেই। এদের এই অদ্ভুত স্বভাবের নেপথ্যে আছে কিছু কারণ! জানেন এমনটা কেন হয়?
শুধু কুকুর নয়, বেশির ভাগ গৃহপালিত পশুরই শরীরে জল লাগানো নিয়ে কোনও সমস্যা নেই, একমাত্র ব্যতিক্রম বিড়াল। ব্যবহারিক বিদ্যার বিশেষজ্ঞরা বিড়ালের এমন স্বভাব নিয়ে বেশ কিছু বৈজ্ঞানিক কারণ খুঁজে পেয়েছেন।
তাঁদের মতে, বিড়ালের থাবার আকার ও গঠন অনুয়ায়ী তা সমতলে চলাচলের উপযুক্ত। জলে ভেসে থাকতে গেলে তারা শরীরের ভারসাম্য হারায়। কিন্তু কুকুরের তা হয় না। তাদের থাবা জলে ভেসে বেড়ানোর ক্ষেত্রে উপযোগী।
এমনকি, সাঁতারে সক্ষম ডাক টোলিং রিট্রিভার ও আইরিশ ওয়াটার স্পেনিয়ালের মধ্যে সংকর ঘটিয়ে বিদেশে নতুন ‘ওয়াটার ডগ’ তৈরির পদ্ধতিও বেশ চালু।
বিড়ালের জলের প্রতি ভীতি তৈরি হওয়ার আর একটি কারণ তাদের গায়ের লোম। কুকুর ও বিড়ালের লোমের প্রকৃতির তফাতের জন্যও জলের প্রতি তাদের ভিন্ন দুই আচরণ দেখা যায়।
বিড়ালের লোম এক বার ভিজে গেলে সহজে শুকোতে চায় না। ভিজে লোমে থাকতে অসুবিধা হয় তাদের। উল্টো দিকে ভিজে গেলেও সহজেই শুকিয়ে যায় কুকুরের লোম।
কুকুর ও বিড়ালের চামড়ার প্রকৃতিও আলাদা। বিড়ালের চামড়া স্পর্শকাতর বেশি। জল বা অন্য কোনও তরলের সঙ্গে তা খুব একটা মানিয়ে নিতে পারে না। তেলা হয়ে ভিজেই থাকে। তার উপর বিড়াল শীতকাতুরে প্রাণী। ভিজে লোম ও চামড়ায় সারাটা দিন বিপর্যস্ত হয়ে থাকে। তাই জল একেবারে পছন্দ করে না তারা।
সুতরাং, বাড়ির পোষ্য বিড়ালকে জোর করে রোজ স্নান করানো বা ঘন ঘন গায়ে জল দিয়ে পরিষ্কার করানোর আগে দু’বার ভাবুন, বরং শুকনো নরম কাপড়ে ঝেড়ে দিন তাদের গা। তাতেই পরিষ্কার থাকবে বিড়ালের দেহ। দু’ সপ্তাহ অন্তর হালকা গরম জলে ধুইয়ে দিন গা।