স্বাস্থ্য শিবিরে। —নিজস্ব চিত্র।
জমা জল কিছুটা কমতেই কালনা মহকুমার বিভিন্ন জায়গায় শুরু হয়েছে আন্ত্রিকের প্রকোপ। পরিস্থিতি সামলাতে স্বাস্থ্য দফতরের তরফে বন্যা দুর্গত এলাকার বাসিন্দাদের বিভিন্ন পরামর্শও দেওয়া হচ্ছে।
সম্প্রতি অতি বৃষ্টির জেরে মহকুমার বেশির ভাগ এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়ে। এর জেরে পানীয় জলের কূপগুলিও জলের তলায় চলে যায়। খোলা হয় ত্রাণ শিবিরে। এলাকা ঘুরে দেখা গিয়েছে, নান্দাইয়ের নতুনগ্রাম-সহ একাধিক শিবিরে অবাধে ঘুরে বেড়াচ্ছে গবাদি পশুর দল।
শিবিরে আসা দুর্গতরা জানান, শুক্রবার রাত থেকেই শুরু হয়েছে আন্ত্রিকের প্রকোপ। ওই দিনই নান্দাই এলাকায় ২ জন পেটের অসুখে মারা যান। ওই শিবিরেই পেটের অসুখে আক্রান্ত হন আরও ১১ জন। এদের মধ্যে এক শিশু-সহ চার জনকে ভর্তি করতে হয় কালনা মহকুমা হাঁসপাতালে। পরিস্থিতি সামাল দিতে ওই শিবিরে খোলা হয় স্বাস্থ্য দফতরের ক্যাম্প। শনিবার থেকে পূর্বস্থলীর ডাঙাপাড়া ও হাটসিমলা এলাকায় আন্ত্রিকের প্রকোপ দেখা যায়। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রাত পর্যন্ত ওই দুই এলাকার ৫ জন শিশু-সহ মোট ২২ জনকে মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। তবে ভর্তি হওয়া রোগীদের বেশিরভাগকেই রবিবার হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। বেশ কয়েক জনের এলাকাতেই চিকিৎসা চলছে।
ডাঙাপাড়া এলাকার তাঁত শ্রমিক শিকাবত শেখ বলেন, ‘‘এখনও অনেক জায়গায় জল নামেনি। তিন বছরের মেয়ে সাকিনা খাতুন পেটের রোগে ভুগছে।’’ পাশের এলাকা পারুলডাঙাতেও একই ছবি দেখা গেল। কালনার মোমিনপুরের বাসিন্দা ইসমাতরা বিবি জানান, তাঁর ন’মাসের শিশুকে রবিবার হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছে।
পেটের অসুখে ভোগা রোগীর সংখ্যা যে ক্রমশ বাড়ছে তা স্বীকার করে নেওয়া হয়েছে কালনা মহকুমা হাসপাতালের তরফে। হাসপাতাল সুপার কৃষ্ণচন্দ্র বরাই বলেন, ‘‘পেটের অসুখে ভোগা বেশির ভাগ রোগীই আন্ত্রিকে আক্রান্ত। ত্রাণ শিবিরগুলিতে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হচ্ছে।’’ কৃষ্ণচন্দ্রবাবুর আশঙ্কা, বেশ কয়েকদিন ধরে ডুবে থাকা কূপগুলির জলও দূষিত হয়ে পড়েছে। জমা জলে নিয়মিত ব্লিচিং পাউডার ছড়াতে এবং জল ফুটিয়ে খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।