এএফপি-র তোলা ছবি।
রাতে বিছানায় শুয়ে শুধু এ পাশ আর ও পাশ। ঘুমের ওষুধ খেয়েও কোনও লাভ হচ্ছে না। চোখে এক ফোঁটা ঘুম নেই। রাতে ঘুম নেই অথচ দিনের বেলায় ঘুমে ঢুলছেন।
ভাবছেন এ সব মামুলি সমস্যা! রাতে পর্যাপ্ত ঘুম না হওয়ায় দিনের বেলায় ঘুমিয়ে পড়ছেন। এতটা ছাড় কিন্তু দেবেন না। সময় থাকতে সাবধান হন। অজান্তেই ডায়াবেটিসের কবলে পড়ছেন না তো?
কারণ, দিনের বেলায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা ঘুম বাড়াচ্ছে টাইপ ২-ডায়াবেটিসের আশঙ্কা। টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের এক দল জাপানি গবেষকের সমীক্ষায় উঠে এসেছে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য।
তোমোহিদ ইয়ামাদা-র নেতৃত্বে এক দল জাপানি বিজ্ঞানী এই গবেষণা করেন।
দিনের বেলায় ঘুমের সঙ্গে কী সম্পর্ক ডায়াবেটিসের?
গবেষকরা জানিয়েছেন, অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপোনিয়া বা ওএসএ এমন একটি রোগ যার কারণে রাতে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে। আক্রান্ত ব্যক্তি রাতে ঘুমোতে পারেন না। পর্যাপ্ত ঘুম না হওয়ার কারণে দিনের বেলায় ঝিমোতে থাকেন রোগী। ওএসএ বাড়ায় ইস্কিমিয়া হার্ট ডিজিজ বা হৃত্পিণ্ডের ধমনীতে ব্লকেজের সম্ভাবনা। এ ছাড়াও স্ট্রোক বা বিভিন্ন কার্ডিওভাসকুলার রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও বাড়ে। মারণ রোগ তিলে তিলে ঠেলে দেয় মৃত্যুর দিকে। সেই সঙ্গে, দিনের বেলায় ঘুমের পুরো চক্র সম্পূর্ণ নাও হতে পারে। রোগটি পরিচিত স্লিপ ইনারসিয়া নামে। এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির ঘুমে আচ্ছন্ন ভাব, অস্থিরতা বৃদ্ধি পায়।
তবে হতাশ হবেন না। ভরসার কথাও শুনিয়েছেন টোকিওর গবেষকরা। তাঁরা জানিয়েছেন, দিনের বেলায় আধ ঘণ্টার ছোট্ট ঘুম বাড়ায় শরীরে চনমনে ভাব। তাই ক্ষতিকারক নয় ছোট্ট ঘুম। কিন্তু কোনও ভাবে যদি মিনিট তিরিশের বেশি ঘুমোন কেউ, তবে তা কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলার পক্ষে যথেষ্ট। দিনের বেলায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা ঘুমের জন্য ডায়াবেটিসের আশঙ্কা বৃদ্ধি পায় অন্তত ৫৬ শতাংশ। ঘণ্টাখানেকের কাছাকাছি ঘুমোলে ডায়াবেটিস হওয়ার আশঙ্কা অন্তত ৪৬ শতাংশ। আড়াই লাখের বেশি মানুষের উপর ৬৮৩টি সমীক্ষা চালানো হয়। সুইডেন, স্পেন, ফিনল্যান্ড, আমেরিকা, চিন এবং জার্মানিতে চালানো হয় সমীক্ষাগুলি।
প্রধানত তিনটি প্রশ্নের উপর জোর দেওয়া হয়। ১) দিনের বেলায় ঘুমে কোনও অসুবিধা হচ্ছে কি না? ২) দিনের বেলায় ঘুমোন কি? ৩) কত ঘণ্টা ঘুমোন দিনের বেলায়? সমীক্ষাটি সুইডেনের ইউরোপিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য স্টাডি অফ ডায়াবেটিস (ইএএসডি)-র বার্ষিক সন্মেলনে পাঠ করা হয়।