করোনায় জেরবার মানুষকে ভয় দেখাচ্ছে মারাত্মক ঘূর্ণিঝড়।
বিপদ কখনও একা আসে না। করোনার দাপট নিয়ে জেরবার মানুষকে ভয় দেখাচ্ছে মারাত্মক এক ঘূর্ণিঝড়। ওড়িশা আর বাংলার বুকে আছড়ে পড়ার জন্য শক্তি সঞ্চয় করছে সুপার সাইক্লোন ‘আমপান’। এই ঝড় কি কোভিড-১৯ ভাইরাসকে তছনছ করে দিতে পারবে? নাকি ভাইরাস আরও শক্তিশালী হয়ে স্পাইকে শান দেবে? ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর বায়ো মেডিক্যাল জেনোমেটিক্স-এর অধিকর্তা বিজ্ঞানী পার্থপ্রতিম মজুমদার জানালেন, ঘূর্ণিঝড়ের সঙ্গে কোভিড-১৯ ভাইরাসের সরাসরি সম্পর্ক নিয়ে এখনও কোনও বিজ্ঞানসম্মত প্রমাণ তাঁদের কাছে নেই। সম্পূর্ণ নতুন এই ভাইরাসকে চিনে নিতে আরও সময় লাগবে। তাই ঝড় হোক বা গরম পড়ুক, ভাইরাসের দাপট কমার কোনও আশা আপাতত নেই।
পার্থপ্রতিমবাবু জানালেন, কোভিড-১৯ ভাইরাসটি অত্যন্ত ছোঁয়াচে। শরীরে ভাইরাসের উপস্থিতি জানা না থাকলে অন্যের সঙ্গে কথা বললে বা কাছাকাছি থাকলে সংক্রমণের ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়। কোভিড-১৯ মূলত ড্রপলেট, অর্থাৎ হাঁচি, কাশির বা কথা বলার সময় এক জনের থেকে অন্যের শরীরে চলে যাওয়ার ঝুঁকি খুব বেশি। তাই ঘূর্ণিঝড়ের জন্য একসঙ্গে অনেক মানুষকে যদি কোনও নির্দিষ্ট শেল্টারে রাখা হয় এবং তাঁদের মধ্যে যদি কোনও সংক্রমিত মানুষ থাকেন, তার থেকে রোগ ছড়িয়ে পড়ার একটা ঝুঁকি থেকেই যায়।
বৃষ্টি কিংবা তাপমাত্রার বাড়া-কমায় কোভিড-১৯ ভাইরাসকে আটকানো যায় না, বললেন মোহালির ইসার (আইআইএসইআর)-এর হিউম্যান প্যাথোজেনিক ভাইরাসের সংক্রমণজনিত অসুখের গবেষক ইন্দ্রনীল বন্দ্যোপাধ্যায়। কোভিড-১৯ ভাইরাস ড্রপলেট ইনফেকশন মারফৎ ছড়ায়। তাই মানুষে মানুষে দূরত্ব বজায় রেখে এবং সাধারণ স্বাস্থ্যবিধি মেনে না চললে রোগ ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি থেকেই যায়। ঝড়বৃষ্টি হলেই যে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাবে তা নয়। কিন্তু এই সময় শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা ও ভিড় এড়িয়ে চলার নিয়ম মানতেই হবে। ঝড়ের জন্য অনেক মানুষকে নির্দিষ্ট জায়গায় সরিয়ে আনা হলে উদ্ধারকারীদের এই ব্যাপারটার উপর গুরুত্ব দিতে হবে বলে জানালেন ইন্দ্রনীলবাবু। কারণ কোভিড-১৯ ভাইরাস অত্যন্ত ছোঁয়াচে, ঝড়বৃষ্টি বা কোনও প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলে এর সংক্রমণ ক্ষমতা কোনও ভাবেই কমবে না। তাই দুর্যোগের মোকাবিলা করার সময় কোভিড-১৯-এর অতিমারির কথা মাথায় রেখেই করা উচিত বলে মনে করেন ইন্দ্রনীলবাবু। ঘূর্ণিঝড় উদ্ধারকেন্দ্রে প্রত্যেককে যথাযথ মাস্ক পরে থাকতে হবে। অসুস্থ মানুষদের জন্য আলাদা ব্যবস্থা রাখা উচিত। নইলে করোনার প্রকোপ আরও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকবে।
আরও পড়ুন: আমপান আছড়াবে সুন্দরবনকে কেন্দ্র করে, তাণ্ডব চালাবে ৭ জেলায়