প্রতীকী ছবি।
কেন্দ্রীয় সরকারের মুখ্য বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা কে বিজয়রাঘবনের দফতরের তরফে সম্প্রতি এক নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, বাতাসে ভাইরাস ১০ মিটার পর্যন্ত ভেসে বেড়াতে পারে। আগে ২ মিটার দূরত্বের কোভিড-বিধি বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু নতুন গবেষণায় দেখা গিয়েছে, শুধু ড্রপলেটের মাধ্যমে নয়, অ্যারোসোলের মাধ্যমেও ছড়াচ্ছে এই ভাইরাস। যা হাওয়ায় ১০ মিটার দূরত্ব পর্যন্ত ভেসে বেড়াতে পারে। কী এই অ্যারোসোল? ড্রপলেটের তুলনায় কতটা আলাদা, জেনে নেওয়া যাক।
ড্রপলেটে কী ভাবে ছড়ায় করোনাভাইরাস
করোনাভাইরাস কোনও মানুষের শরীরে প্রবেশ করার পর বহু গুণে বাড়তে থাকে। এবং তা সংক্রমিত ব্যক্তির মুখ, নাক দিয়ে বেরিয়ে আসে ড্রপলেটের মাধ্যমে। সেই ড্রপলেট হাওয়ায় খুব বেশি দূর যেতে পারে না। ভারী হওয়ায় দু-মিটারের মধ্যে পড়ে যায়। সংক্রমণের পরও দু’সপ্তাহ সময় লাগতে পারে কোনও ব্যক্তির মধ্যে উপসর্গ দেখা দিতে। তাই কোনও উপসর্গহীন ব্যক্তির সংস্পর্শে এলে যদি প্রচুর পরিমাণে ড্রপলেট আপনার মুখে, নাকে এসে পড়ে, এবং ভাইরাল লোড বেশি থাকে, তা হলে আপনিও সংক্রমিত হতে পারেন। তাই যে কোনও ব্যক্তির সামনেই মাস্ক পরতে বলা। এবং এক কারণে দু’মিটারের দূরত্ব বজায় রাখার নির্দেশ এতদিন বিশ্বজুড়ে মানুষ মানার চেষ্টা করছিলেন।
অ্যারোসোল কী? কী ভাবে ছড়ায়
কিন্তু এখন সেই নিময় পাল্টে গিয়েছে। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের নতুন কোভিড-নির্দেশিকা অনুযায়ী ১০ মিটার পর্যন্ত অ্যারোসোল হাওয়ায় ভেসে বেড়াতে পারে। অ্যারোসোল আসলে ড্রপলেটেরই আরও ক্ষুদ্র কণা। আমরা যখন কোনও ডিওড্র্যান্ট ব্যবহার করি, সেই তরলের ক্ষুদ্রতম কণা গ্যাসের আকারে প্রচন্ড প্রেশারে আমাদের গায়ে এসে পড়ে। ঠিক তেমনই কোনও সংক্রমিত ব্যক্তি কথা বললে, গান করলে, হাঁচলে বা কাশলে, তাঁর লালারসের মাধ্যমে ভাইরাস বেরিয়ে আসে। এবং সেই অ্যারোসোল হাওয়ায় প্রায় ১০ মিটার অবধি ভেসে বেড়াতে পারে। তার মধ্যে যদি অন্য কোনও ব্যক্তি থাকেন, তিনিও সংক্রমিত হয়ে পড়তে পারেন।
কী করণীয়
দু’টো মাস্ক পরার উপদেশ শোনা যাচ্ছে বেশ কিছুদিন ধরে। হাত ঘন ঘন স্যানিটাইজ করতে হবে। তা ছাড়াও বেশি কিছু জিনিস মাথায় রাখা প্রয়োজন। ঘরের ভিতরে থাকলে, খেয়াল রাখুন যাতে হাওয়া বাতাস খেলে। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে না বসাই ভাল। জানলা-দরজা খোলা ঘরে থাকতে হবে। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত অফিসের মধ্যে দরজা খুলে রাখা প্রয়োজন। শীতাতপ নিয়ন্ত্রণের যন্ত্রে প্রয়োজন হেপা ফিল্টার। বাস-ট্রামে বসাতে হবে শক্তিশালী এগ্জস্ট ফ্যান। যাতে প্রত্যেকটা জায়গাতেই সারক্ষণ হাওয়া বাতাস খেলতে পারে।
তথ্য: স্বাস্থ্য মন্ত্রক