টিকা আবিষ্কার না হওয়া পর্যন্ত মাস্ক, সাবান ও স্যানিটাইজার জীবনের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হয়ে উঠছে।
করোনাভাইরাসের ভয়ে প্রায় গোটা বিশ্ব গৃহবন্দি। সপ্তাহে দু’-তিন দিন বাজার দোকান যাওয়া ছাড়া আমজনতার বেরনো নিষেধ। কিন্তু চিকিৎসক ও হাসপাতলের কর্মী, পুলিশ, সাংবাদিক, বিদ্যুৎ ও অগ্নিনির্বাপণ দফতরের কর্মী-সহ অনেককেই এই সময় বাইরে যেতে হচ্ছে। মুখে মাস্ক বেঁধে বাইরে বেরনো, বাড়ি ফিরে হাতে সাবান দেওয়া, হাতে স্যানিটাইজার দেওয়া এ সব সকলেরই রুটিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। লকডাউন উঠলেও এই রুটিন চলতেই থাকবে বলে মত চিকিৎসকদের। কিন্তু শুধু এটুকু করলেই যে কোভিড-১৯-এর কবল এড়িয়ে চলতে পারবেন তা কিন্তু নয়। সঙ্গে আরও কিছু নিয়ম মেনে চলারই পক্ষপাতী বিশেষজ্ঞরা।
প্রথমেই বলি, ভাইরাসের সঙ্গে যুদ্ধ করতে নিজের ‘ইনেট ইমিউনিটি’ অর্থাৎ শরীরের নিজস্ব রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার উপর যথেষ্ট গুরুত্ব দিতে হবে। বাড়িতে রান্না টাটকা, হালকা ও সহজপাচ্য খাবার খাওয়া দরকার। সকালে ঘুম থেকে উঠে চা পানের আগে গরম জলে একটা পাতিলেবুর রস ও সামান্য আদার রস মিশিয়ে খেলে গলা-সহ শ্বাসনালী পরিষ্কার থাকবে একই সঙ্গে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে।
এক নজরে জেনে নেওয়া যাক লকডাউন উঠে গেলেও বাড়ির বাইরে গেলে ও বাড়ি ফিরে কী কী নিয়ম মেনে চলতে হবে।
আরও পড়ুন: করোনা রুখতে আয়ুর্বেদে আস্থা আয়ুষ মন্ত্রকের, কী কী নিয়ম মেনে চললে দূরে থাকবে রোগ?
সোশ্যাল ডিসট্যান্স। প্রতীকী চিত্র। ছবি: শাটারস্টক।
• সার্জিকাল মাস্ক না থাকলে তিনটি লেয়ার-যুক্ত মাস্ক বাড়িতে বানিয়ে পরুন। অফিসে যাওয়ার পর মাস্ক খুলে রাখবেন না। কেননা, ইদানীং এমন মানুষের সংখ্যা যথেষ্ট বেশি যাঁদের শরীরে কোভিড-১৯ ভাইরাস থাকলেও সর্দি-জ্বর বা কোনও উপসর্গ থাকে না। তাই এই সাবধানতাটুকু মেনে চলা দরকার।
• মাস্ক পরেই কথা বলুন, গলায় নামিয়ে রাখা ঠিক নয়। কথা বলার সময় অদৃশ্য ভাইরাস নাকে-মুখে চলে যেতে পারে।
• অফিসে গেলে বাড়ি থেকে খাবার নিয়ে যান। গোটা ফল নিয়ে যেতে পারেন। কলা, আপেল, আঙুর, খোসা-সহ সেদ্ধ ডিম ইত্যাদি। খাওয়ার আগে মাস্ক খুলে গলায় ঝুলিয়ে রেখে হাত মুখ সাবান দিয়ে ভাল করে ধুয়ে ফল থাকলে তাও ধুয়ে নিন।
• এখন সহকর্মীদের সঙ্গে ভাগ করে না খেয়ে একা খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন। বাইরের খাবার খাবেন না।
• টাকাপয়সা ও মোবাইল থেকে ভাইরাসের ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি খুব বেশি।
• অফিস যাওয়ার সময় মোবাইল প্লাস্টিকের মধ্যে পুরে ব্যাগে ঢুকিয়ে রাখাই শ্রেয়।
• বাজারে বা বাইরে টাকাপয়সা ফেরত নিলে তা আলাদা প্লাস্টিকে রাখে দিন। সাবানজলে চুবিয়ে শুকিয়ে নিয়ে ব্যবহার করুন।
আরও পড়ুন: আইসোলেশন, লকডাউন সবই ছিল তিন হাজার বছর আগের ভারতে
• বাড়ি ফিরে জুতো হাতে নিয়ে সোজা বাথরুমে গিয়ে বালতিতে সাবানজলে পোশাক ও ভিজিয়ে দিন, জুতো-মোজা ধুয়ে নিতে হবে। মোবাইলের খাপ আলাদা করে ধুয়ে নিন। মোবাইল বন্ধ করে স্যানিটাজার দিয়ে পরিষ্কার করে মুছে নিন।
• স্নান করে ঘরে ঢুকুন। বাজার যেতে হলেও বাইরের পোশাক ছেড়ে, কেচে এবং হাত-পা-মুখ সাবান দিয়ে পরিষ্কার তবেই ঘরে যান।
• রোজ বাড়ি ফিরে মাস্ক সাবান দিয়ে কেচে নিতে হবে।
• কম্পিউটার বা ল্যাপটপের কি বোর্ড থেকেও সংক্রমণ ছড়াতে পারে। অন্যের ব্যবহার করা কম্পিউটার ব্যবহার না করাই ভাল। অফিসে সে সুযোগ না থাকলে স্যানিটাইজার দিয়ে পরিষ্কার করে নিন।
লকডাউন উঠে যাওয়ার পরেও বরাবরের জন্য পরিচ্ছন্নতার অভ্যাস থাকলে ভাল হয়। কেননা, লকডাউন উঠে গেলেও টিকা বা ওষুধ না আবিষ্কার হওয়া পর্যন্ত করোনা কিন্তু থেকে যাবে।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)