মাত্রাতিরিক্ত প্যারাসিটামল ডেকে আনতে পারে বিপদ। ছবি: সংগৃহীত
প্রচণ্ড গরমের মাঝে হঠাৎ করে বৃষ্টি! আবহাওয়া ঠান্ডা হয়ে যাওয়ায় জ্বর জ্বর ভাব! আর এই অল্প জ্বরে ভরসা সেই প্যারাসিটামল। এর সঙ্গে এখন জুড়েছে করোনার আতঙ্ক। সংক্রমণ হলে তো কথায় নেই, সংক্রমণের ভয়েই অনেকে গাদা প্যারাসিটামল খেয়ে চলেছেন। কিন্তু লাগামছাড়া প্যারাসিটামল কি নিরাপদ? একেবারেই নয়। এই ওষুধ খাবার বিষয়ে কিছু নিয়ম মেনে চলা উচিত। না হলে যকৃতের সমস্যা হতে পারে। বলছেন সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ দেবকিশোর গুপ্ত।
এমনিতে প্যারাসিটামল অত্যন্ত নিরাপদ ওষুধ। কিন্তু মাত্রা ছাড়ালেই বিপদ, বলছেন দেবকিশোর। বিশেষ করে যাঁরা নিয়মিত মদ্যপান করার পাশাপাশি এই ওষুধ খান, তাঁদের ‘সিরোসিস অব লিভার’ হওয়ার ঝুঁকি বেশি। অ্যালকোহল ও প্যারাসিটামল বিক্রিয়া করে অত্যন্ত বিষাক্ত পদার্থ তৈরি করে। সেটি লিভারের ক্ষতি করে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিভাষায় একে বলে হেপাটোটক্সিসিটি।
হালে ‘ব্রিটিশ জার্নাল অব ক্লিনিক্যাল ফার্মাকোলজি’তে প্রকাশিত গবেষণাপত্রে লেখা হয়েছে, আমাদের দেশে ‘সিরোসিস অব লিভার’-এ আক্রান্তদের মধ্যে বেশির ভাগের অসুস্থতার কারণ ইচ্ছে মতো প্যারাসিটামল খাওয়া। বলছেন অন্ত্ররোগবিদ চিকিৎসক সুনীলবরণ দাস চক্রবর্তী।
সুনীলবরণের কথায়, ‘‘যকৃৎ অত্যন্ত শক্তিশালী অঙ্গ। অল্পবিস্তর সমস্যা হলে, তা নিজেই মেরামত করে নিতে পারে। কিন্তু লাগাতার মদ্যপান ও প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ খেতে থাকলে এই অঙ্গের কোষের ক্ষতি হতে শুরু করে।’’ প্রাথমিক অবস্থায় যকৃতের অসুখের নির্দিষ্ট কোনও উপসর্গ না থাকায় রোগী বুঝতে পারেন না। পরে যখন নানা সমস্যা শুরু হয়, তত দিনে যকৃতের যথেষ্ট ক্ষতি হয়ে গিয়েছে।
হালে এর সঙ্গে কোভিডের সমস্যা জুড়েছে। তার কারণেও অনেকেই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই প্যারাসিটামল খাচ্ছেন। এটিও অত্যন্ত বিপজ্জনক। প্যারাসিটামল খাওয়ার আগে অবশ্যই জিজ্ঞাসা করে নিতে চিকিৎসককে। না হলে বড় বিপদ হয়ে যেতে পারে।