ডায়াবেটিক কিটো-অ্যাসিডোসিসে শ্বাসকষ্ট হয়, সতর্ক থাকুন। ফাইল ছবি।
বিভিন্ন গবেষণা থেকে জানা গেছে, কোভিডের বাড়াবাড়ির মূলে প্রায় ২৫ শতাংশ ক্ষেত্রে অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবিটিসের হাত থাকে। এবং তার ফলে অনেক রোগীই মারা যান।
ব্যাপারটা চিন্তার। কারণ, আমাদের দেশে ডায়াবিটিসের প্রকোপ খুব বেশি। অনিয়মিত জীবনযাপনের ফলে ৩০ পেরতে না পেরতেই বহু মানুষ এর কবলে পড়েন। কাজেই কোভিড নিয়েও চিন্তা আমাদেরই বেশি।
কেন এমন
হরমোন বিশেষজ্ঞ সতীনাথ মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, "ডায়াবিটিস নিয়ন্ত্রণে না থাকলে একদিকে যেমন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায় বলে সংক্রমণের আশঙ্কা বাড়ে, অন্য দিকে রক্তে সুগারের মাত্রা বেশি থাকলে বাড়ে কোভিডের জটিলতাও। তার হাত ধরে আবার বাড়ে ডায়াবিটিসের জটিলতা। আর এইসব পাকেচক্রে ডায়াবেটিক কিটো অ্যাসিডোসিস বা ডিকেএ নামের সমস্যা একবার হয়ে গেলে কোভিডের দরুন যেসব জটিল পরিস্থিতি উদ্ভূত হয়, তা সামলানো কঠিন হয়ে যায়। অর্থাৎ বিপদের উপর বিপদ।"
আরও পড়ুন: সারা ক্ষণ মুখে মাস্ক বাড়াচ্ছে ব্রণ ও ত্বকের সমস্যা, কী করবেন
ইদানীং আবার আরেকটা সমস্যা হচ্ছে। ডায়াবিটিসের এমন এক ওষুধ বাজারে এসেছে, যা খেলে সুগার স্বাভাবিক থেকে যায় বলে ডিকেএ হলেও অনেক সময় তা বোঝা যায় না বলে চিকিৎসা বিভ্রাটের আশঙ্কা থাকে। কাজেই ডায়াবিটিসের রোগী যদি এই ওষুধ খান, কোভিডের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি হলে আগেই তা ডাক্তারকে জানিয়ে দেবেন।
বিপদ সামলাতে
কোভিডের সুরক্ষাবিধি মেনে চলার পাশাপাশি ডায়াবিটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে, এটাই হল আসল কথা। তার জন্য যা যা করা দরকার, করতে হবে সব। যেমন-
• রোগ বশে থাকলে যেভাবে চলছিলেন, সেভাবেই চলুন।
• ব্যায়াম করুন। এতে ওজন-সুগার বশে থাকবে, বাড়বে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা।
• জল খাওয়ার ব্যাপারে কার্পণ্য করবেন না। কারণ সুগারের কিছু ওষুধ আছে, যা খেলে জল বেশি না খেলে সমস্যা হতে পারে।
• ধূমপান করবেন না।
আরও পড়ুন: করোনা আবহে গড়ে ওঠা নতুন অভ্যাসে অজান্তেই এই সব উপকার হচ্ছে, জানতেন!
• অনেক ডায়াবেটিক রোগীরই রক্তচাপ বেশি থাকে। এবং কোভিডের আশঙ্কা বাড়তে পারে বলে যেসব ওষুধের নামের শেষে ‘প্রিল’ বা ‘সার্টান’ আছে, তাঁরা তা খাওয়া বন্ধ করে দেন। এতে মারাত্মক বিপদ হতে পারে। কারণ কোনও গাইডলাইনেই এখনও পর্যন্ত বলা হয়নি যে, এই সব ওষুধ খেলে কোভিডের আশঙ্কা বাড়ে।
রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়মিত মাপতে হবে। ছবি: শাটারস্টক
• স্ট্রেস ম্যানেজ করার চেষ্টা করুন। না হলে সুগার যেমন বেড়ে যেতে পারে, কমতে পারে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা।
• ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কোনও ওষুধ খাবেন না। কারণ, নানান ওষুধের নানান বিরূপ প্রতিক্রিয়া আছে সুগারের উপর।
• সুগার হঠাৎ বেড়ে গেলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
• ডায়াবেটিক কিটো-অ্যাসিডোসিস হলে অনেক সময় শ্বাসকষ্ট হয়। সেটাকে কোভিডের উপসর্গের সঙ্গে গুলিয়ে ফেলবেন না। যদিও ডিকেএ-ও যথেষ্ট বিপজ্জনক।
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)