কোনও কোনও কোভিড রোগীর মধ্যে একটি ফাঙ্গাল সংক্রমণ চোখে পড়ছে। এই রোগের নাম মিউকোরমাইকোসিস। ফাইল চিত্র
দিল্লি, আমদাবাদ এবং বেঙ্গালুরুর কিছু হাসপাতালের চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, কোনও কোনও কোভিড রোগীর মধ্যে একটি ভয়ঙ্কর ফাঙ্গাল সংক্রমণ চোখে পড়ছে। এই রোগের নাম মিউকোরমাইকোসিস। গত বছরও কিছু কোভিড রোগীর মধ্যেই এই রোগ ধরা পড়েছিল। বেশির ভাগই তাঁরা কোভিড সেরে উঠছিলেন, বা হাসপাতালে তাঁদের কোভিডে চিকিৎসা চলছিল। তাই কোভিডের সঙ্গে এই রোগের একটি যোগ থাকতে পারে বলেই সন্দেহ করছেন চিকিৎসকেরা।
মিউকোরমাইকোসিস কী
আগে এই রোগের নাম ছিল জাইগোমাইকোসিস। মিউকোরমাইসিটিস নামে এই রকম ছত্রাক থেকে এই রোগ ছড়ায়। কোনও কঠিন রোগের পর যাঁদের শরীরের রোগ-প্রতিরোধক ক্ষমতা অনেকটা কমে গিয়েছে বা যাঁরা এমন ক়়ড়া ওষুধ খাচ্ছেন, যাঁর জন্য রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা কমে এসেছে, তাঁদের শরীরের এই রোগ সহজে আক্রমণ করতে পারে। সাধারণত ফুসফুস, মস্তিস্ক এবং সাইনাসে প্রভাব ফেলে এই রোগ। তাই করোনার সঙ্গে এই রোগের যোগ থাকাটা স্বাভাবিক মনে করছেন বহু চিকিৎসক।
কোভিডের সঙ্গে যোগ কী ভাবে
করোনা ভাইরাস শরীরের রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা কমজোরি করে দেয়। কোভিড-রোগীদের চিকিৎসায় অনেক সময় খুব কড়া অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ বা স্টেরয়েড দেওয়া হয়, যার ফলে রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা কমে আসে। যাঁদের ডায়েবিটিস রয়েছে, তাঁদের রক্তেও গ্লুকোজের মাত্রার হেরফের হতে পারে স্টেরয়েডের জন্য। এই কারণে শরীরে দ্রুত আক্রমণ করতে পারে এই ফাঙ্গাস।
কার হতে পারে
যাঁদের ডায়েবিটিস রয়েছে কিংবা যাঁরা চিকিৎসার জন্য স্টেরয়েড নেওয়ার ফলে রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা কমজোরি হয়ে এসেছে। তবে এই রোগ বিরল। এখনও পর্যন্ত খুব বেশি কোভিড রোগীদের মধ্যে এটা দেখা যায়নি।
উপসর্গ কী
কোভিডের সঙ্গে অনেক উপসর্গ মিলে যায়। যেমন জ্বর, শ্বাসকষ্ট, বুকে ব্যথা। কিন্তু পাশাপাশি মুখ ফোলা, চোখ ফোলা, নাক দিয়ে চাপা রক্তের মতো বা বাদামি রঙের পুঁজ বেরনো, নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া বা সাইনাসের সমস্যাও দেখা দিতে পারে। এই ধরনের উপসর্গ যদি দেখতে পান, দ্রুত চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করা উচিত।
চিকিৎসা
চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী অ্যান্টি ফাঙ্গাল ওষুধ খাওয়া প্রয়োজন। তবে অনেক গুরুতর ক্ষেত্রে অস্ত্রোপচার করে সংক্রমিত মাংসপেশীগুলি বাদ দেওয়া হয়। ঠিক সময় ধরা পড়লে এই রোগের চিকিৎসা হওয়া সম্ভব।