প্রতীকী ছবি।
ফিরে যাওয়ার জন্য আসেনি। চিনের শীর্ষ বিজ্ঞানীরা বলছেন, বছর-বছর মরসুমি রোগ হয়ে উঠতে চলেছে কোভিড-১৯। একই মত উঠে আসছে বিশ্বের অন্যান্য বিজ্ঞানীর কাছ থেকেও। তাঁদের বক্তব্য, নোভেল করোনাভাইরাসকে পুরোপুরি নির্মূল করা বোধ হয় সম্ভব হবে না। ফ্লু-এর মতো এটি প্রতি বছর ফিরে আসবে। কারণ, নতুন এই করোনাভাইরাস শরীরে ঢুকলেই যে জ্বর বা অন্য কোনও উপসর্গ ফুটে উঠছে, এমনটা নয়। সমাজে উপসর্গহীন বাহকেরা থেকেই যাচ্ছে।
১৭ বছর আগে আতঙ্ক হয়ে ওঠা সার্স-এর ক্ষেত্রে এমনটা হয়নি। এটিতে কেউ আক্রান্ত হলেই গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। এক বার সেই রোগীকে কোয়রান্টিনে নিয়ে রাখলেই সংক্রমণের শৃঙ্খলটা ভেঙে যায়। কিন্তু বিপুল আর্থিক ক্ষতি সয়ে দীর্ঘদিন লকডাউনে থাকার পরেও নোভেল করোনাভাইরাসের ছড়িয়ে পড়া রোখা যাচ্ছে না। অতিমারির সঙ্কট থেকে আপাত মুক্ত হলেও চিনকে এখন বেগ পেতে হচ্ছে এই উপসর্গহীন করোনা-বাহকদের খুঁজে বার করতে।
কিছু জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের মতে, ভারতের মতো যে সব দেশে নবীনেরা সংখ্যায় বেশি, সেখানে ভাইরাসটা ছড়িয়ে পড়লে সুবিধাই হবে। প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে উঠবে। কিন্তু ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন এই মতে বিশ্বাস রেখে দেশকে বিপদে ফেলেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। নিজেও বেশ ক’দিন হাসপাতালে কাটিয়ে সবে কাজে যোগ দিয়েছেন। অন্য দিকে সুইডেন হেঁটেছে কঠোর লকডাউনের পথে।
আরও পড়ুন: কোয়রান্টিন কেন্দ্রে না-গিয়ে প্রাথমিক পর্যায়ের কোভিড আক্রান্তদের বাড়িতে থাকা কতটা নিরাপদ?
আরও পড়ুন: দেশে হাজার ছুঁচ্ছে মৃত্যু, ট্রাম্পের সভাতেও প্রশ্ন
চিনের শীর্ষ চিকিৎসা গবেষণা কেন্দ্র অ্যাকাডেমি অব মেডিক্যাল সায়েন্সেসের ইনস্টিটিউট অব প্যাথোজেন বায়োলজির ডিরেক্টর চিন কাইয়ের কথায়, “সম্ভবত দীর্ঘ সময়ের জন্যই এই মহামারিকে সঙ্গে নিয়ে চলতে হবে।” আমেরিকার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব অ্যালার্জি অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজ়িজ়-এর ডিরেক্টর অ্যান্টনি ফাউচি গত মাসেই বলেছেন, কোভিড-১৯ বার্ষিক মরসুমি রোগ হয়ে উঠতে পারে। সোমবার তারই সমর্থন মিলল চিনা বিজ্ঞানীদের বক্তব্যে। ফাউচি অবশ্য তাপমাত্রার ওঠাপড়ার সঙ্গে ভাইরাসের থাকা-যাওয়ার বিষয়টিকে সম্পর্কিত মনে করছিলেন। তাঁর যুক্তি ছিল, উত্তর গোলার্ধে রোগটা ছড়িয়েছে শীতের সময়। এখন যখন দক্ষিণ গোলার্ধ শীতের দিকে এগোচ্ছে, সেখানে সংক্রমণ বাড়ছে। কিন্তু বেজিংয়ের ফার্স্ট হসপিটালের সংক্রামক রোগ বিভাগের প্রধান কুই ছ্যাংয়ের বক্তব্য, করোনাভাইরাসের উপরে তাপের প্রভাব পড়ে, এটা ঠিক। তবে ৫৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে টানা আধ ঘণ্টা থাকলে এগুলির মৃত্যু হয়। পৃথিবীর কোনও প্রান্তেই এতটা গরম পড়ে না, যার প্রভাবে ভাইরাসগুলি মারা পড়বে। তাই গ্রীষ্মে নিষ্কৃতি মেলার আশা খুবই কম। ফলে ভরসা এখন, কোনও প্রতিষেধক যদি বেরোয়।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)