নাসিকাগ্র দৃষ্টি। ছবি: শৌভিক দেবনাথ।
নাসিকাগ্র দৃষ্টি
‘নাসি’ মানে ‘নাক’, ‘অগ্র’ শব্দের অর্থ ‘ডগা’ এবং ‘দৃষ্টি’ মানে ‘একদৃষ্টে দেখা’। প্রতীকী ভাবে বলা যায় নাসিকাগ্র দৃষ্টির সাহায্যে নাকের সঙ্গে শিরদাঁড়া অর্থাৎ কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের এক সেতুবন্ধন করা যায়।
কী ভাবে করব?
• ম্যাটের উপর শিরদাঁড়া সোজা করে আরামদায়ক ভাবে বসুন। দুই হাত রাখতে পারেন দুই হাঁটুর উপর বা কোলের উপর। মাটিতে বসতে অসুবিধে হলে একই ভাবে চেয়ারে পা ঝুলিয়ে বসতে পারেন।
• চশমা থাকলে তা খুলে রাখতে হবে। এ বার চোখ বন্ধ করে ধীরে ধীরে কয়েক বার শ্বাস-প্রশ্বাস নিন। সমস্ত শরীর ও মন রিল্যাক্সড হয়ে যাবে।
আরও পড়ুন: ‘ডক্টর শপিং’-এর প্রবণতা কি বাড়ছে আতঙ্কের শহরে
• এ বার চোখ খুলে নাকের অগ্রভাগের দিকে তাকান। খেয়াল রাখবেন, চোখে যেন বেশি চাপ না পড়ে।
• দুই চোখ দিয়ে নাকের দু’দিকের প্রান্তরেখা বা আউটলাইনের দিকে একদৃষ্টে তাকিয়ে থাকুন। তবে কোনও অবস্থাতেই চোখের উপর বেশি চাপ না পড়ে লক্ষ্য রাখতে হবে।
• নাকের দিকে তাকিয়ে থাকলে দু’টি প্রান্তরেখা দেখতে পাবেন। মনোনিবেশ বাড়লে প্রান্তরেখা উল্টোনো ‘ভি’ অক্ষরের মত দেখতে লাগবে। তবে টেনশন করলে লক্ষ্য স্থির থাকবে না, ফলে ভি দেখতে পাবেন না।
• এ বারে উল্টোনো ‘ভি’-এর দিকে মনোনিবেশ করুন। মন চিন্তা শূণ্য করার চেষ্টা করুন। মনে যদি কোনও ভাবনা আসে তাকে গুরুত্ব দেবেন না।
• আসনটি অভ্যাস করার সময় স্বাভাবিক শ্বাসপ্রশ্বাস নেবেন এবং চোখে স্ট্রেন দেবেন না।
• কিছু ক্ষণ আসনটি অভ্যাস করার পর রিল্যাক্স করুন, চোখ বন্ধ করে বসুন। ৫–৭ বার অভ্যাস করুন। প্রতি বার অভ্যাসের পর চোখ বন্ধ করে বিশ্রাম নেবেন।
• অভ্যাস শেষ হলে দুই হাতের করতল ঘষে গরম করে নিয়ে দুই চোখে আলতো করে চাপা দিন। আরাম বোধ করবেন।
সতর্কতা
যাঁদের গ্লকোমা আছে, অথবা চোখের কোনও জটিল ও ক্রনিক সমস্যায় ভুগছেন, তাঁরা এই আসনটি করবেন না। চোখের যে কোনও সার্জারির পরে আসনটি করা অনুচিত। যাদের অতিরিক্ত ডিপ্রেশন আছে তাঁরা কখনওই এই আসন করবেন না।
আরও পড়ুন: করোনার সঙ্গে যৌথ জীবনযুদ্ধে জিততে বদলাতে হবে নিজেকে
কেন করব?
নাসিকাগ্র দৃষ্টি রাগ ও মনের নানা ওঠাপড়া ও সমস্যা দূর করতে কার্যকর ভূমিকা নেয়। নিয়মিত নাসিকাগ্র দৃষ্টি অভ্যাস করলে স্নায়ুতন্ত্রের ভারসাম্য বজায় থাকে, ফলে একাগ্রতা বাড়ে। মানসিক অবসাদ, উৎকণ্ঠা, দুশ্চিন্তা কমিয়ে অনিদ্রা দূর করতে সাহায্য করে। নিয়মিত অভ্যাস করলে স্মৃতিশক্তি ও ইচ্ছাশক্তি বাড়ে। এই অভ্যাস মেডিটেশন বা ধ্যানের প্রস্তুতি পর্ব।