সিটেড পবনমুক্তাসন অর্থাৎ চেয়ারে বসে পবনমুক্তাসন। অলঙ্করণ: শৌভিক দেবনাথ।
চেয়ার যোগ– সিটেড পবনমুক্তাসন অর্থাৎ চেয়ারে বসে পবনমুক্তাসন
অ্যাসিডিটি আর হজমের সমস্যা বাঙালির যেন নিজস্ব। এর জন্য মুঠো মুঠো অ্যান্টাসিড তার নিত্য সঙ্গী। অথচ নিয়ম করে কিছু যোগাসন অভ্যাস করলে হজমের সমস্যার হাত থেকে রেহাই মেলে। অ্যান্টাসিডের থেকে বহু গুণ শক্তিশালী এবং হজম সহায়ক পবনমুক্তাসন। এই আসনটি মূলত শুয়ে অভ্যাস করতে হয়। কিন্তু শুয়ে পা ভাঁজ করে পেটের ওপর আনার ক্ষেত্রে অনেকেরই অসুবিধে হয়। এদের কথা ভেবেই চেয়ারে বসে পবনমুক্তাসন অভ্যাস করার পরিকল্পনা। নামেই বোঝা যাচ্ছে, এই আসনটি নিয়মিত অভ্যাস করলে পবন মুক্ত হয়, অর্থাৎ পেটের গ্যাস বেরিয়ে যায়।
কী ভাবে করব
• মাটিতে দুই পা টানটান করে রেখে চেয়ারে সোজা হয়ে বসুন। দুই হাত থাকুক কোলের ওপর। চোখ বন্ধ করে ঘাড়, পিঠ ও মাথা সোজা করে বসুন। এটিই হল আসন শুরুর অবস্থান।
• এ বারে ডান পা হাঁটু থেকে ভাঁজ করে ঊরু বুকের কাছে আনার চেষ্টা করুন। দুই হাত দিয়ে ভাঁজ করা পা হাঁটুর ঠিক নীচ থেকে চেপে যতটা সম্ভব বুকে ঠেকানোর চেষ্টা করুন। দুই হাতের আঙুল ইন্টারলক করলে আসনটি অভ্যাস করতে সুবিধে হবে।
• শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে মাথা হাঁটুর কাছে আনতে হবে। এই অবস্থানে কয়েক সেকেন্ড থাকুন।
• শ্বাস নিতে নিতে দুই হাত ছেড়ে দিয়ে ঘাড় পিঠ সোজা করে ডান হাঁটু নীচে নামান।
• এ বারে একই পদ্ধতিতে বাম হাঁটু বুকের কাছে এনে দুই হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরে মাথা হাঁটুর কাছে এনে পবন মুক্তাসন অভ্যাস করুন। এক রাউন্ড সম্পূর্ণ হল। এই ভাবে ৫ রাউন্ড অভ্যাস করতে হবে। অর্থাৎ এক একটি পা ৫ বার করে বুকের কাছে আনতে হবে।
• অভ্যাস শেষ হলে শুরুর অবস্থানে ফিরে কিছু ক্ষণ স্বাভাবিক শ্বাস নিয়ে বিশ্রাম নিন।
সতর্কতা
পিঠে, কোমরে বা হাঁটুতে অল্প ব্যথা থাকলে যেটুকু পারবেন অভ্যাস করতে হবে। তবে অতিরিক্ত ব্যথায় এই আসন করা উচিত নয়।
কেন করব
রোজ পবন মুক্তাসন অভ্যাস করলে হজম সংক্রান্ত অসুবিধে দূর হয়। বিশেষ করে যাদের গ্যাস ও অ্যাসিডিটির সমস্যা আছে, তাদের জন্য এই আসনটি অত্যন্ত উপযোগী। একই সঙ্গে এই আসন করলে ঘাড় পিঠ-সহ মেরুদণ্ড সংলগ্ন পেশী উজ্জীবিত হয়, স্থবিরতা চলে যায় ও সচল থাকে। পেটের পেশী সুঠাম হয়ে ওঠে। নির্দিষ্ট ছন্দে শ্বাস প্রশ্বাস নিতে নিতে পেটের ওপর পা চেপে ধরায় হজম সংক্রান্ত সমস্যার হাত থেকে নিষ্কৃতি পাওয়া যায়। সুতরাং সুস্থ থাকতে নিয়মিত আসন করুন, ভাল থাকুন।