করোনার ভয়ে কাঁপছে বিশ্ব। ছবি: আইস্টক।
করোনা-শঙ্কা দিনকে দিন বাড়ছে। প্রতি দিনই আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা দেখে ভয় দানা বাঁধছে সকলের মনে। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে, রোগী ভর্তি হচ্ছেন অনেক দেরিতে, ফলে প্রাণ বাঁচানো কঠিন হয়ে পড়ছে। এনআরএসে মঙ্গলবার রাতে মৃত্যু হওয়া প্রৌঢ় , হাওড়া জেলা হাসপাতালে সোমবার মৃত্যু হওয়া প্রৌঢ়া ও হাওড়ার বেসরকারি হাসপাতালে মৃত বৃদ্ধের বেলাতেও দেখা গিয়েছে, অনেক দেরিতে রোগ নির্ণয় হয়েছে। পরীক্ষার রিপোর্ট আসার আগেই মৃত্যু হয়েছে রোগীদের। অনেক ক্ষেত্রে রোগীর পরিবার ও রোগী বুঝতেই পারছেন না কখন বিপদ ঘনাচ্ছে।
কোভিড-১৯-এর উপসর্গ খুবই জটিল। কারও কারও শরীরে এমন উপসর্গ মারাত্মক হয়ে দেখা দিচ্ছে। কারও ক্ষেত্রে আবার সে ভাবে কিছুই বোঝা যাচ্ছে না। অল্প উপসর্গেই আটকে থাকছে তা।
‘‘আর এই বোঝা না যাওয়া বা অল্প উপসর্গে সচেতন না হওয়াটাই কাল হচ্ছে আমাদের,’’— মত জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ সুবর্ণ গোস্বামীর। ঠিক কী কী হলেই সচেতন হতে হবে? জানালেন ওই চিকিৎসক।
আরও পড়ুন: করোনার জেরে মিলছে না শিশুর অন্য রোগের ভ্যাকসিন! কী বিপদ ধাওয়া করছে এর পর?
আরও পড়ুন: কবে বেরবে করোনার টিকা, ওষুধ? এখনও অন্ধকারে চিকিৎসক-বিজ্ঞানীরা
গ্রাফিক্স: শৌভিক দেবনাথ।
• এই ভাইরাসের প্রধান ও অন্যতম উপসর্গ জ্বর। তবে সব ক্ষেত্রেই যে জ্বর আসছে তা নয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, ৮৮ শতাংশ ক্ষেত্রে জ্বর এলেও জ্বর আসছে না ১২ শতাংশের। সে ক্ষেত্রে কেবল শ্বাসকষ্ট বা কাশির উপসর্গ থাকবে।
• এ বার প্রশ্ন কেমন সর্দি? দেখা গিয়েছে, ‘রানিং নোজ’ অর্থাৎ নাক দিয়ে কাঁচা জল ঝরে চলা অতটা ভয়ের নয়। বরং কফ নেই, কিন্তু সর্দির জন্য অস্বস্তি আছে ও গলা জ্বালা ও গলা ব্যথা আছে— এমন হলে সতর্ক হতে হবে। হাঁচি কোনও কোনও ক্ষেত্রে থাকলেও সব ক্ষেত্রে ভয়ের নয়।
• কাশির বেলাতেও খুকখুকে শুকনো কাশি ভয়ের। ঘঙঘঙে কাশি হলেও সাবধান। অনেকেই দিনে দু’-এক বার কাশলে তাকে স্বাভাবিক ভাবেই আমল দেন না। তবে যদি এই কাশি দিনের মধ্যে মাঝে মাঝেই হয় বা প্রতি দিনই অল্প করেও হয়, তা হলেও সচেতন থাকতে হবে। তখন দেখতে হবে শ্বাসকষ্ট বা জ্বর আসছে কি না। তবে এমন সর্দির জন্য গলা ব্যথা বা কাশি হলেও নিজের জিনিসপত্র আলাদা করে আলাদা থাকুন। হোম কোয়রান্টাইনের বেলায় নিয়মবিধিতে কঠোর হোন।
• বেশির ভাগ সময় দেখা যাচ্ছে, গলা ব্যথা-কাশির উপসর্গ দিয়ে শুরু হলেও এই ধরনের ভাইরাসের কারণে তা দ্রুত বাড়ে ও প্রবল জ্বর ডেকে আনে। সঙ্গে শ্বাসকষ্টও থাকে। শ্লেষ্মাজনিত অসুখ বেড়ে নিউমোনিয়ার দিকে বাঁক নেয় ও সিভিয়ার নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত করে। নতুন করে দেখা যাচ্ছে, ডায়রিয়া আর এক উপসর্গ হয়ে দেখা দিচ্ছে। হঠাৎই শুরু হয়ে যাচ্ছে ডায়রিয়া। তবে সাধারণ ডায়রিয়া কি না তা বুঝতে পরের দুটো দিন খেয়াল রাখুন। এর দিন দুয়েকের মধ্যে যদি শ্বাস নিতে অস্বস্তি বা শর্টনেস অব ব্রিদ শুরু হয়, তবে সাবধান।
• শ্বাসকষ্ট প্রথম থেকে না থাকলে যে কোনও একটি উপসর্গ দেখা দেওয়ার সাত-আট দিনের মাথায় প্রবল শ্বাসকষ্ট শুরু হচ্ছে।