কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রু়ডো অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রাজেনেকার প্রতিষেধক নিয়েছিলেন। ছবি: সংবাদ সংস্থা
অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রাজেনেকার (যা পুণের সিরাম ইনস্টিটিউটে ‘কোভিশিল্ড’ নামে তৈরি হচ্ছে) প্রতিষেধক নেওয়ার পর কিছু মানুষের মধ্যে রক্তে জমাট বেঁধে যাওয়ার একটি বিরল সমস্যা দেখা গিয়েছিল। যদিও সেই সংখ্যাটা হাতেগোনা, তা-ও ইউরোপের বেশ কিছু দেশে এই প্রতিষেধক সাময়িকভাবে দেওয়া বন্ধ হয়ে যায়। কানাডার একদল গবেষক দাবি করেছেন, তাঁরা এই সমস্যার সমাধান বার করতে পেরেছেন।
কানাডার ম্যাকমাস্টার প্লেটলেট ইমিউনোলজি ল্যাবোরেটরির গবেষকেরা জানিয়েছেন, দু’ধরনের চিকিৎসার মিশেলে এই বিরল রোগ অতিক্রম করা সম্ভব। অ্যান্টি ক্লটিং ওষুধ এবং ইন্ট্রাভেনাস ইমিউনোগ্লোবিউলিনের খুব কড়া ডোজ একসঙ্গে দিলে প্রতিষেধক নেওয়ার পর যে রক্তে জমাট বেঁধে যেতে পারে, তার সমাধান করা সম্ভব।
অ্যাডেনোভাইরাল ভেক্টর প্রতিষেধকের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় যে ধরনের জমাট রক্তে বাঁধছে তা অ্যান্টিকোয়াগুলেন্ট এবং ইন্ট্রাভেনাস ইমিউনোগ্লোবিউলিনের কড়া ডোজের মিশেলে ঠিক করা সম্ভব’, গবেষকদের কথা অনুযায়ী বলছে এই রিপোর্টে। ‘নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অফ মেডিসিন’এ এই রিপোর্ট প্রকাশিত হয়। ম্যাকমাস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফ থেকে এই গবেষণাকে ‘জীবনদায়ক’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
কানাডায় মোট ২৮ জনের প্রতিষেধক নেওয়ার পর এই সমস্যা দেখা গিয়েছিল। তাঁদের মধ্যে ৫ জনের অবস্থা যথেষ্ট বিপজ্জনক হয়ে ওঠে। তাই কানাডার স্বাস্থ্যব্যবস্থা থেকে ম্যাকমাস্টার প্লেটলেট ইমিউনোলজি ল্যাবরেটরিকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছিল এই বিরল রোগের চিকিৎসা নিয়ে গবেষণা করার। এর আগেও তারা এই ধরনের বিরল সমস্যা নিয়ে গবেষণা করেছিল। হেপারিন নেওয়ার ফলে যে ধরনের রক্তে জমাট বাঁধার সমস্যা হতে পারে, সেই গবেষণাই এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা। এবং প্রতিষেধক নেওয়ার পর যে ধরনের জমাট বাঁধতে পারে রক্তে, তার সমাধান খুঁজতে আগের গবেষণাকে কাজে লাগিয়েছিলেন তাঁরা।
৩ জন কানাডার বাসিন্দা যাঁদের মধ্যে এই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছিল, তাঁদের রক্তের নমুনা পরীক্ষা করে গবেষণা চালানো হয়। এই মুহূর্তে গবেষকেরা, কেন এই ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হচ্ছে, সেটা খোঁজার চেষ্টা করছেন বলে জানানো হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফ থেকে।