Coronavirus

আতঙ্ক নয়, জ্বর-সর্দিতে প্রয়োজন ডাক্তারের পরামর্শ

সকলকেই মাথায় রাখতে হবে যে, রাতের দিকে ঠান্ডা পড়তে পারে ভেবে দুপুরেই যেমন গরম পোশাক গায়ে চাপানো যাবে না, তেমনই সকালে গরম পোশাক গায়ে চাপিয়ে বেলা পর্যন্ত তা নিয়ে ঘোরাও অনুচিত হবে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০২০ ০৩:৩২
Share:

প্রতীকী ছবি।

একে কোভিডে আক্রান্ত হওয়ার ভয়, তার মধ্যেই সকালে এবং রাতের দিকে তাপমাত্রা হঠাৎ কমে যাওয়ায় ঘরে ঘরে সর্দি, কাশি এবং জ্বর! এই পরিস্থিতিতে ঠিক কী হয়েছে, তা না বুঝেই আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন অনেকে। চিকিৎসকেরা যদিও অযথা আতঙ্কিত না হওয়ারই পরামর্শ দিচ্ছেন! তাঁরা জানাচ্ছেন, জ্বর এবং সর্দি-কাশির মতো উপসর্গ থাকলে বিভ্রান্ত না হয়ে নিজেকে কয়েক দিন অন্যদের থেকে পৃথক রাখুন। তার পরে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী শারীরিক পরীক্ষা করান।

Advertisement

কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিনের চিকিৎসক অরুণাংশু তালুকদার যেমন বলছেন, ‘‘অযথা বিভ্রান্ত হওয়া এবং বিভ্রান্তি ছড়ানো রোগ ছড়ানোর থেকে কম নয়। প্রতি বছরই এই সময়টায় তাপমাত্রা দিনের বেলায় এক রকম থাকে, রাতে অন্য রকম। সেটা মাথায় রেখে প্রথমেই কোভিড হয়েছে ধরে না নিয়ে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।’’ তাঁর কথায়, ‘‘তবে কোনও রকম জ্বর-সর্দি-কাশিকেই হাল্কা ভাবে নেওয়া যাবে না। এটা ইনফ্লুয়েঞ্জাও হতে পারে, কোভিডও হতে পারে। ফলে যথাযথ পরীক্ষা করিয়ে নিশ্চিত হওয়া প্রয়োজন।’’

চিকিৎসক শ্যামাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় আবার জানালেন, তাপমাত্রার এই ওঠানামার সময়ে নিজেকে ভাল রাখার পদ্ধতি এক-একটি বয়সের জন্য এক-এক রকম। সকলকেই মাথায় রাখতে হবে যে, রাতের দিকে ঠান্ডা পড়তে পারে ভেবে দুপুরেই যেমন গরম পোশাক গায়ে চাপানো যাবে না, তেমনই সকালে গরম পোশাক গায়ে চাপিয়ে বেলা পর্যন্ত তা নিয়ে ঘোরাও অনুচিত হবে। শ্যামাশিসবাবু বললেন, ‘‘কোভিড পরিস্থিতিতে সংক্রমণ এড়াতে আগের চেয়ে জলের ব্যবহার অনেকটাই বেড়েছে। ফলে তাপমাত্রা পরিবর্তনের এই সময়ে কতটা উষ্ণ জল ব্যবহার করা হবে, সেটাও মাথায় রাখা দরকার। সেই সঙ্গে যাঁদের অ্যাজ়মার সমস্যা বা ডায়াবিটিস রয়েছে, তাঁদেরও আরও বেশি করে সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। কোভিডের টিকা কবে আসবে, সে জন্য অপেক্ষা না করে যাঁর যা ভ্যাকসিন নেওয়ার কথা, সেটাও দ্রুত নিয়ে নেওয়া প্রয়োজন।’’

Advertisement

চিকিৎসক কুণাল সরকার আবার বললেন, ‘‘জ্বর-সর্দি-কাশি দেখলেই ভূত দেখার মতো করার দরকার নেই। সচেতন হওয়া মানে কিন্তু আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়া নয়। অনেকেই জ্বর হলেই কোভিড ভেবে হাসপাতালে হাসপাতালে ভিড় করছেন। কিন্তু মনে রাখতে হবে, ইনফ্লুয়েঞ্জা বা কোভিড চরিত্রগত ভাবে এতটাই কাছাকাছি যে, পরীক্ষা ছাড়া কিছুই বলা সম্ভব নয়। তাই পরীক্ষার আগেই কী রোগ ধরে নিয়ে এই মুহূর্তে পথ চললে বড় মুশকিল।’’

ভাইরোলজিস্ট অমিতাভ নন্দীও মনে করেন, কোনও ভাবেই জ্বর-সর্দি বা কাশির লক্ষণ নিয়ে এই মুহূর্তে বসে থাকা যাবে না। তাঁর কথায়, ‘‘আতঙ্কিত না হওয়াটা অবশ্যই দরকার। কিন্তু কোনও রকম লক্ষণ দেখা গেলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে কয়েক দিনের মধ্যেই করোনা পরীক্ষা করিয়ে নিতে হবে। পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ এলেও পরের অন্তত দু’সপ্তাহ বিষয়টিকে হাল্কা ভাবে নেওয়া চলবে না। আতঙ্ক নয়, যে কোনও ধরনের সংক্রামক ব্যাধি এড়িয়ে ভাল থাকার এটাই উপায়।’’

চিকিৎসক অরিজিৎ চৌধুরীর মতে, ‘‘যতটা পারা যায়, ঠান্ডা না লাগানোর ব্যবস্থা করতে হবে। গরম পোশাক পরার পাশাপাশি দিনের কিছুটা সময় গায়ে রোদ লাগানো গেলে ভাল। জ্বর-সর্দি যদি কোভিড থেকে না হয়, তা হলে গলা ব্যথা, নাক দিয়ে জল পড়া বা গায়ে-হাতে-পায়ে ব্যথা থাকে। এত দিন ধরে কোভিড রোগী দেখার পরে চিকিৎসকদের এ ব্যাপারে বুঝতে সমস্যা হওয়ার কথা নয়। তাই নিজেরা আগাম ধরে না নিয়ে চিকিৎসকদের পরামর্শ নিন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement