দেখতে সুন্দর পানপাত্র বাড়তি মেজাজ তৈরি করে। ছবি : সংগৃহীত।
‘পান-ভোজন’ বা ‘খানা-পিনা’— চলতি লব্জের ব্যবহারই বলছে, পানীয় ছাড়া ভোজের আসর অসম্পূর্ণ। পুজোয় বন্ধুবান্ধব বা আত্মীয়স্বজনকে সঙ্গে নিয়ে যদি ভোজনের সঙ্গে পানের পরিকল্পনা থাকে, আর সেই আসরে যদি সুন্দর পানপাত্রে পানীয় পরিবেশন করে অতিথিদের সামনে আপনার রুচিবোধ প্রকাশের ইচ্ছে থাকে, তবে কয়েকটা বিষয় জেনে নিন।
উপযুক্ত পানপাত্র
মনে হতে পারে, পানীয় থাকলে আর পানপাত্র নিয়ে এত ভাবনার কী আছে। পানীয় তো নিজগুণেই যথেষ্ট! বিভিন্ন হোটেল বা রেস্তরাঁয় অতিথির খাবারের অভিজ্ঞতার বিষয়ে যাঁরা খেয়াল রাখেন, তাঁরা বলছেন, পানপাত্রের আকার-আকৃতি কী রকম, তার উপরে অনেকটাই নির্ভর করে পানের অভিজ্ঞতা। শুধু তা-ই নয়, কিছু কিছু পানীয়ের জন্য নির্দিষ্ট গ্লাস তৈরিই করা হয়েছে, যাতে সেই গ্লাসের আকার পানীয়ের সেরা স্বাদ এবং গন্ধ ধরে রাখতে পারে। এমনকি, কিছু পানপাত্র পানীয়ের উপযুক্ত তাপমানও বজায় রাখতে পারে দীর্ঘ ক্ষণ। আর দেখতে সুন্দর পানপাত্র বাড়তি মেজাজ তৈরি তো করেই।
জরুরি কিছু পানপাত্র
কেতাদুরস্ত পানের আসর বসিয়ে বাড়তি মেজাজ আনতে চাইলে কোন পানপাত্রটি কোন পানীয়ের জন্য উপযুক্ত, তা জেনে নেওয়া দরকার। পানের আসরে যে সমস্ত পানীয় বেশি জনপ্রিয়, তার জন্য উপযুক্ত পানপাত্র যেমন জানা জরুরি, তেমনই কেউ যদি বিভিন্ন পানীয় মিশিয়ে ককটেল তৈরি করতে চান, তবে তার জন্যও উপযুক্ত পানপাত্রের সন্ধান রইল।
ছবি: সংগৃহীত
১। রেড ওয়াইন গ্লাস: বড় গোল বাটির মতো আকার। যাতে বাতাসের সংস্পর্শে এসে ওয়াইন আরও সুবাসিত হতে পারে। নীচের কাচের লম্বা ডাঁটিটি হাতে ধরার জন্য। যাতে হাতের তাপমাত্রা কোনও ভাবেই ওয়াইনের তাপমানকে প্রভাবিত করতে না পারে।
ছবি: সংগৃহীত
২। হোয়াইট ওয়াইন গ্লাস: হোয়াইট ওয়াইনের গ্লাসের বাটির মতো আকৃতিটি হবে ছোট। কানার পরিধিও হবে ছোট। কারণ, হোয়াইট ওয়াইনের সুগন্ধ চড়া নয়। অনেকটাই হালকা। তাই বাতাস লাগিয়ে তাকে আরও হালকা করা যাবে না। বরং তার সুগন্ধ বাঁচিয়ে রাখা জরুরি। তাই গ্লাসের মুখ ছোট। তাতে ওয়াইনের জন্য উপযুক্ত তাপমাত্রাও বজায় থাকবে।
ছবি: সংগৃহীত
৩। গ্লেনসেয়ার্ন গ্লাস: হুইস্কির পানপাত্র। সাধারণত হুইস্কি খাওয়া হয় রক গ্লাস বা টাম্বলার নামের পানপাত্রে। আকারে গোল কিন্তু কোথাও কোনও ঢাল নেই। গ্লাসের নীচের অংশটি মোটা কাচের। বেঁটেখাটো গ্লাসের চারপাশটা সাধারণত থাকে ঋজু। গ্লেনসেয়ার্নে কিন্তু বেশ একটা নরম-সরম ব্যাপার আছে। অনেকটা কাচের লম্ফের মতো দেখতে। নীচে মোটা কাচের স্ট্যান্ড। এই গ্লাস হুইস্কির সুবাস ধরে রাখতে সাহায্য করে। তবে সঠির গ্লেনসেয়ার্ন গ্লাস হয় ক্রিস্টালের। অন্য গ্লাসের তুলনায় কিছুটা দামিও।
ছবি: সংগৃহীত
৪। বিয়ার গ্লাস: পাঁইট, টিউলিপ, ওয়েইজেন— বিয়ারের নানা রকম গ্লাস আছে। তবে এদের মধ্যে ওয়েইজেন গ্লাসটি বিয়ারের ফেনা এবং গন্ধ দীর্ঘ ক্ষণ যথাযথ রাখতে সাহায্য করে।
ছবি: সংগৃহীত
৫। মার্টিনি গ্লাস: পানীয়প্রেমীরা অল্পবিস্তর প্রত্যেকেই এই পানপাত্রের সঙ্গে পরিচিত এর অন্য রকম আকৃতির জন্যই। ইংরেজি ‘ভি’ অক্ষরের মতো দেখতে এই পানপাত্রটি ব্যবহার করা যেতে পারে সেই সমস্ত ককটেলের জন্য, যেখানে পানীয়ের সঙ্গে বরফ মিশিয়ে ঝাঁকানো হয়েছে।
ছবি: সংগৃহীত
৬। হাইবল গ্লাস: এর আরও একটি নাম হল কলিনস। সাধারণ গ্লাসের থেকে সরু, দীর্ঘকায় এবং ঋজু হাইবল গ্লাস সেই সমস্ত ককটেলের জন্য ভাল, যাতে ফলের রস, হার্বস, ফলের টুকরো, বরফের টুকরো মেশানো হয়ে থাকে।
ছবি: সংগৃহীত
৭। মার্গারিটা গ্লাস: কানার পরিধি অনেকটা চওড়া। হঠাৎ দেখলে মনে হবে একটি চওড়া বাটিকে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে একটি ছোট বাটির উপরে। তাই মার্গারিটা পানপাত্রকে ‘ডাবল বোল গ্লাস’ও বলেন অনেকে। বহু ককটেলই পরিবেশন করা হয় পানপাত্রের কানায় নুন বা চিনির মিশ্রণ লাগিয়ে। মার্গারিটা পানপাত্রে সেই মিশ্রণের সঠিক স্বাদ পাওয়া যায়। সহজে চুমুক দেওয়া যায়।
ছবি: সংগৃহীত
৮। হারিকেন গ্লাস: নামেই পরিচয়। দেখতে হারিকেন বাতির মতোই। হারিকেনে পরিবেশন করা হয় বিভিন্ন ফলের স্বাদ মেশানো ককটেল। যা সাধারণত জনপ্রিয় সৈকত অঞ্চলে।
ছবি: সংগৃহীত
৯। আইরিশ কফি গ্লাস: তাপমান সহজে বজায় রাখতে পারে এমন পানপাত্র। যা সাধারণত আইরিশ কফি বা হট চকোলেট খাওয়ার জন্য ব্যবহার করা হয়। তবে একই সঙ্গে ‘হট বাটারড রাম’-ও পরিবেশন করা হয় এমন গ্লাসে।