ছবি: গেটি ইমেজেস।
আপনার বাচ্চা কি অনলাইনে গেম খেলতে ভালবাসে? দিন কে দিন কি ওজন বাড়চ্ছে বাচ্চার? আচ্ছা যদি বলি আপনার বাচ্চার খিদে বাড়ানোর জন্য এই অনলাইন গেমই দায়ী। তবে কী বলবেন? ভাবছেন ভুল বলছি। না একদম ভুল বলছি না। নেদারল্যান্ডসের এক দল গবেষক দাবি করেছেন অনলাইন গেম শিশুদের মধ্যে বেশি বেশি খাবার খাওয়ার প্রবণতা বাড়িয়ে দেয়।
নেদারল্যান্ডসের রাডবাউড বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে গবেষক দলের নেতা ফ্রান্স ফকভোর্ড জানিয়েছেন, প্রাইমারি ক্লাসের স্কুল পড়ুয়াদের নিয়ে তাঁরা গবেষণাটি করেন। হাজার খানেক পড়ুয়ার উপর পরীক্ষা নিরীক্ষা চালানো হয়। প্রথমে পড়ুয়াদের অনলাইনে গেম খেলতে দেওয়ার হয়। ক্যান্ডি অথবা ফলের উপরই বেশিরভাগ গেমগুলি। কয়েক জনকে আবার বিভিন্ন ধরণের খেলার সরঞ্জামের উপর খেলতে দেওয়া হয়। প্রতিটি গেম খেলার পর পাঁচ মিনিটের বিরতি দেওয়া হয় বাচ্চাদের। এই বিরতিতে উঠে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। জানা যায়, ক্যান্ডি গেমের খেলাতে মগ্ন বাচ্চাগুলি স্বাভাবিক অবস্থার চেয়ে বেশি খেয়ে ফেলছে। স্বাভাবিক অবস্থার চেয়ে প্রায় ৭২ শতাংশ বেশি খেয়েছে তারা। যে সব বাচ্চারা খেলার সরঞ্জামের উপর গেম খেলেছে তাদের চেয়ে ৫৫ শতাংশ খাবার বেশি খেয়েছে ক্যান্ডি গেম খাওয়া বাচ্চারা।
কিন্তু কেন এই অস্বাভাবিকতা?
নেদারল্যান্ডসের গবেষণা আমাদের এক ভয়ঙ্কর সত্যির মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেয়। দর্শকদের প্রলুব্ধ হওয়া থেকে আটকাতে টিভিতে বিজ্ঞাপনগুলি অনেক সময় ব্লক করে দেওয়া হয়। কিন্তু অনলাইন গেমের ক্ষেত্রে খুব সুচতুর ভাবে বিষয়বস্তুর মধ্যেই ক্যান্ডির বিজ্ঞাপনের মতো শিশুমনকে আকৃষ্টকারী বিজ্ঞাপন ছড়িয়ে দেওয়া হয়। এর ফলে বাচ্চাগুলি অজান্তেই এই অস্বাভাবিকতার শিকার হয়ে পড়ে। অস্বাভাবিক আচরণ করতে শুরু করে তারা। হিতাহিত জ্ঞানশুন্য হয়ে খেলার পরই বেশি বেশি অস্বাস্থ্যকর খাবার খেয়ে ফেলে তারা। দেখা গিয়েছে অনলাইন গেম না খেলা বাচ্চার চেয়ে অন্তত ৫৫ শতাংশ খাবার বেশি খেয়েছে তারা। ফল যা হওয়ার তাই হয়। স্বাস্থ্যকর খাবার খেয়ে সুস্থ থাকার চেয়ে অস্বাস্থ্যকর খাবার খেয়ে ওজন বেড়ে চলে বাচ্চাগুলির। অকালেই বিভিন্ন রকম রোগ বাসা বাধে ছোট্ট ছোট্ট শরীরে।
তাই এখনই নিয়ন্ত্রণ করুন আপনার বাচ্চার অনলাইন গেম খেলার প্রবণতা। না হলে বিপদের আর বেশি বাকি নেই।