প্রতীকী ছবি।
মুরগির কষা মাংস। ইলিশ মাছের মাথা দিয়ে কচুর লতি। ট্যাংরার ঝাল।
করোনা আবহে হোয়াটস্অ্যাপ করলে এমনই সব রান্না করা পদ শহরবাসীর দরজায় পৌঁছে দিচ্ছে রাজ্য পঞ্চায়েত দফতরের অধীনস্থ সামগ্রিক এলাকা উন্নয়ন পর্ষদ (সিএডিসি)। লকডাউনের শুরু থেকে চলছে এই পরিষেবা। সেই কাজ করতে সল্টলেকের পঞ্চায়েত দফতরের হেঁশেলে হাতা-খুন্তি তুলে নিয়েছেন বিভিন্ন জেলার স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা।
অনলাইনে খাবার পৌঁছে দিতে সল্টলেকের মৃত্তিকা ভবনে ওই হেঁশেল সামলাচ্ছেন নদিয়ার হরিণঘাটার মাম্পি দাস, আভা রানি, অসীমা বিশ্বাস, বুদি সর্দার, ঊষারানি বালারা। মাম্পির কথায়, ‘‘গ্রামের মাঠে চাষ করতাম। এখন কলকাতায় এসে রান্নার প্রশিক্ষণ দিয়ে যে পদ্ধতিতে রান্না করা শেখানো হচ্ছে, তা আমাদের কাছে বিরাট অভিজ্ঞতা। কাজের সুযোগ পেয়ে রোজগারের পথও খুলে গিয়েছে।’’
ওই রাঁধুনিদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও করেছে পর্ষদ। বিদেশে অনলাইনে খাবার ডেলিভারির কাজ করেছেন, এমন এক মহিলাকে দিয়ে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মেয়েদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। পর্ষদের প্রশাসনিক সচিব সৌম্যজিৎ দাস বলেন, ‘‘বিদেশ থেকে আসা ওই মহিলা ছাড়াও শহরের দু’টি নামী রেস্তরাঁর পাচকদের দিয়েও সপ্তাহে দু’দিন প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।’’
কেন এমন উদ্যোগ? রাজ্যের পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কলকাতায় অনেক প্রবীণ মানুষই একা থাকেন। তাঁদের নিরাপত্তার কথা ভেবেই রান্না করা খাবার বাড়ি বাড়ি পাঠানোর ব্যবস্থা করেছি। আগামী দিনে এই পরিষেবা আরও বাড়ানো হবে।’’
পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, নদিয়া, বর্ধমান, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, শিলিগুড়ি, মালদহ-সহ বিভিন্ন জেলায় পর্ষদের খামারে জৈব আনাজ চাষ হয়। সেই সঙ্গে রয়েছে ছাগল, টার্কি, মুরগির চাষও। রান্না করা খাবার সরবরাহে ব্যবহার করা হয় এ সবই। আর বাড়িতে রান্না করা খাবার পেয়ে খুশি ক্রেতারাও। একটি বহুজাতিক সংস্থার পদস্থ কর্তা সায়ন্তন চৌধুরী বলেন, ‘‘আমরা প্রবীণ দম্পতি একা থাকি। ছোঁয়াচ বাঁচাতে এই সংস্থা যে ভাবে রান্না করা খাবার বাড়িতে পৌঁছে দিয়েছে, তাতে খুবই উপকৃত হয়েছি।’’