হাসপাতালের মহিলা মেডিসিন ও শিশু বিভাগের গেটের সামনে রোগীদের নিয়ে যাওয়ার ট্রলির উপরে খোলা অবস্থায় পড়ে ছিল রোগীদের দুপুরের খাবার। স্বাস্থ্যকর্মীরা ওয়ার্ডে ঢুকতেই একটি বেড়াল লাফিয়ে ট্রলিতে উঠে একটি থালা থেকে মাছের টুকরো মুখে নিয়ে দৌড়ে ওয়ার্ডে ঢুকে গেল। চোখের সামনে এই দৃশ্য দেখে ক্ষোভ সামলাতে পারলেন না রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের ডেপুটি ডিরেক্টর বরুণ সাঁতরা। রোগী ও তাঁদের পরিবারের লোকজনের সামনেই তিনি ভর্ৎসনা করলেন দুটি বিভাগের কর্তব্যরত নার্স ও খাবার সরবরাহের দায়িত্বে থাকা স্বাস্থ্যকর্মীদের। শনিবার দুপুরে এই ঘটনার জেরে রীতিমত অস্বস্তিতে পড়লেন রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালের সুপার ও সহকারি সুপার।
এদিন আচমকাই হাসপাতাল পরিদর্শনে যায় রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের হসপিটাল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন কোয়ালিটি অ্যাসুয়েরেন্স দল। বরুণবাবুর নেতৃত্বে ওই দলে ছয়জন প্রতিনিধি ছিলেন।
প্রতিনিধি দলের সদস্যরা এদিন বিভিন্ন ওয়ার্ড পরিদর্শন করার পর মহিলা মেডিসিন ও শিশুবিভাগের সামনে দাঁড়িয়ে হাসপাতালের সুপার অনুপ হাজরা ও সহকারি সুপার গৌতম দাসের সঙ্গে কথা বলছিলেন। তখনই বরুণবাবুর নজরে পড়ে সেখানে একটি ট্রলির উপরে রোগীদের দুপুরের খাবার সমেত একাধিক থালা একটি অপরটির উপর ঢাকাহীন অবস্থায় রাখা রয়েছে। সেই সময় লাফিয়ে ট্রলিতে উঠে একটি বেড়াল একটি থালা থেকে মুখে করে মাছের টুকরো নিয়ে পালিয়ে যেতেও দেখেন তিনি। বিষয়টি দেখার পরেই মেজাজ হারান বরুণবাবু। সঙ্গে সঙ্গে তিনি সহ প্রতিনিধি দলের সদস্যরা মহিলা মেডিসিন ও শিশুবিভাগে ঢুকে পড়েন। বরুণবাবু কর্তব্যরত নার্স ও খাবার সরবরাহের দায়িত্বে থাকা স্বাস্থ্যকর্মীদের কাছে জানতে চান, ‘‘কেন রোগীদের খাবার ঢাকাহীন অবস্থায় ফেলে রাখা হয়েছে?
সেইসঙ্গে, রোগীদের সকাল, দুপুর ও রাতের খাবারের সাপ্তাহিক তালিকা বিভিন্ন ওয়ার্ডে কেনও লাগানো হয়নি, তাও জানতে চান তিনি। কর্তব্যরত নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীরা সেইসব প্রশ্নের সদুত্তর দিতে না পারায়, এর পর বরুণবাবু তাঁদেরকে রোগীদের খাবার ঢেকে রাখা ও বিভিন্ন ওয়ার্ডে খাবারের তালিকা লাগানোর নির্দেশ দিয়ে দলের বাকি সদস্যদের নিয়ে হাসপাতাল থেকে চলে যান। বরুণবাবু বলেন, ‘‘রোগীদের খাবার সরবরাহের ব্যাপারে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ভূমিকায় আমি অসন্তুষ্ট। এই বিষয়ে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরে যা রিপোর্ট দেওয়ার দেব।’’হাসপাতাল সুপার অনুপবাবু বলেন, ‘‘ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। এরপর থেকে ঠিকঠাক যাতে রোগীদের খাবার সরবরাহ করা হয়, সেইদিকে নজর রাখছি।’’