প্রতীকী ছবি। ছবি: সংগৃহীত
চটজলদি বেশ কিছুটা ওজন কমাতে হবে। সে ক্ষেত্রে মানুষ কার্ডিয়ো এক্সারসাইজ করার দিকেই বেশি ঝোঁকেন। কার্ডিয়ো করলে বেশি ক্যালোরি ঝরে, এমনটাই প্রচলিত ধারণা। তাই ওজন কমানোর ক্ষেত্রে হাঁটা, জগিং, দৌড়ানো, স্কিপিং বা ফ্রি-হ্যান্ড কার্ডিয়ো এক্সারসাইজ বেছে নেন সকলে। বেছে নেওয়ার আরও একটি কারণ অবশ্য এগুলি যে কোনও জায়গায় খুব সহজে কোনও সরঞ্জাম ছাড়াই করে ফেলে যায়।
তা হলে মানুষ ওয়েট ট্রেনিং কখনও করেন? যখন তাঁদের মনে হয়, আর ওজন ঝরানোর প্রয়োজন নেই। বরং এবার একটু শরীরের মাংসপেশিগুলি শক্ত করা প্রয়োজন, যাকে বলে মাস্ল মাস, তখন তাঁরা ওয়েট ট্রেনিংয়ের কথা ভাবেন।
কিন্তু শরীরচর্চার এই নিয়ম যে মান্ধাতার আমলের তা অনেক আগেই জেনে গিয়েছে দুনিয়া। শরীর ফিট রাখতে গেলে এবং ঠিক মতো ওজন ঝরাতে গেলে দু’রকম এক্সারসাইজই মিলিয়ে মিশিয়ে করা প্রয়োজন। সপ্তাহে ৩ দিন কার্ডিয়ো করলে, ২ দিন ওয়েট ট্রেনিং করা প্রয়োজন। তবেই সঠিক পদ্ধতিতে ওজন কমবে।
প্রতীকী ছবি।
রোজ হাঁটলেই যদি ওজন কমে যায়, তা হলে আবার ওয়েট ট্রেনিংয়ের প্রয়োজন কোথায়? ওজন ঝরানোর সঠিক পদ্ধতি আবার হয় নাকি? একটু ভাবলেই বুঝতে পারবেন তা হয়। ঠিক যেমন বাজারে প্রচলিত ফাস্ট ডায়েট করে বেশ কিছু কেজি ওজন কমানোর পর ডায়েট করা ছে়ড়ে দিলেই তা ফিরে আসে, তেমনই শরীরচর্চার ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য।
সম্প্রতি আমেরিকার এক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে যাঁরা সপ্তাহে ২ থেকে ৩ দিন ওয়েট ট্রেনিং করছেন, তাঁদের ওবেসিটিতে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বাকিদের (যাঁরা শুধু কার্ডিয়ো করছেন) তুলনায় ২০ থেকে ৩০ শতাংশ কম। গবেষণা বলছে একবার ওজন বেড়ে গেলে, তা ঝরানো খুবই মুশকিল। কেউ যদি শরীরের মোট ওজেনর ৫ শতাংশ বেশি ঝরাতে সক্ষম হন, তা হলেও দেখা গিয়েছে ভবিষ্যতে সেই ওজন আবার বেড়ে যাচ্ছে। তাই ওবেসিটি রোগ হওয়ার আগেই সেটা আটকানো প্রয়োজন। শহরের ফিটনেস ট্রেনার সুমনা দত্ত বর্মন বললেন, ‘‘কার্ডিয়ো যেমন জরুরি, ওজন নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষেত্রে ওয়েট ট্রেনিংও ততটাই জরুরি। অনেকে ভাবেন তাঁদের উচ্চতা অনুযায়ী ওজন ঠিক ঠাক হলেই শরীর ফিট। কিন্তু বিএমআই ইন্ডিকেটর দেখে শুধু ওজন মাপলেই চলবে না। শরীরে ফ্যাট পারসেন্টেজই আসলে বলে দেবে আপনি কতটা ফিট। মাস্ল মাস তৈরি করার জন্য আপনাকে ওয়েট ট্রেনিংই করতে হবে। শুধু কার্ডিয়ো দিয়ে তা হবে না।’’
প্রতীকী ছবি।
ওয়েট ট্রেনিংয়ের মাধ্যমেও শরীরে যথেষ্ট ক্যালোরি ঝরানো সম্ভব। কিছু কিছু গবেষণায় দেখা গিয়েছে এক ঘণ্টায় কার্ডিয়োর তুলনায় ওয়েট ট্রেনিংয়ে বেশি ক্যালোরি ঝরছে। শরীরের বিপাক হারও ওয়েট ট্রেনিংয়ের ক্ষেত্রে অনেক বেশিক্ষণ বেড়ে থাকে। বিপাক হার বাড়লে খাবার হজম হয় তাড়াতাড়ি এবং ওজনও নিয়ন্ত্রণে রাখতে সুবিধা হয়।