ফলস উইডো মাকড়সার কামড়ে ছেলের প্রাণ নিয়ে টানাটানি। ছবি: সংগৃহীত।
হঠাৎ ছেলের পায়ে ব্যথা। কী হয়েছে দেখতে গিয়ে ছেলের পায়ে ক্ষতটি প্রথম দেখতে পেয়েছিলেন তার মা। প্রথমে তাঁর মনে হয়েছিল, ঘরে বা শৌচালয়ের দেওয়ালে ঝুলে থাকা মাকড়সা কামড়েছে। সেই মতো ঘরোয়া ওষুধও লাগিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু কে জানত যে, ওই ছোট্ট ক্ষতই তাঁর ছেলের প্রাণসংশয়ের কারণ হয়ে দাঁড়াবে! কয়েক ঘণ্টায় দুর্বিষহ হয়ে উঠবে তাঁদের জীবন!
ব্রিটেনের সারে শহরের ঘটনা। ক্রিসমাসের পরের দিন বছর এগারোর ম্যাথিউসের পায়ে ব্যথা শুরু হয়। মাকে তা জানিয়েছিল ওই খুদে। কিন্তু প্রথমে ছেলের কথায় তেমন গুরুত্বই দেননি সারা। কিন্তু পরদিন তিনি দেখেন, ছেলে পা নাড়াতেই পারছে না। ব্যথার পাশাপাশি লাল হয়ে ফুলে গিয়েছে পা। শরীরে জ্বরের কোনও লক্ষণ নেই। পায়ের ক্ষততে চাপ দিতেই হাতের ভিতর থেকে বার হয়ে আসছে পুঁজ ও রক্তাভ তরল। এর পর আর দেরি করেনি সারা। সোজা হাসপাতালে ছোটেন ছেলেকে নিয়ে। সেখানে চিকিৎসকেরা পরীক্ষা করে জানান, তাঁর ছেলেকে কোনও সাধারণ মাকড়সা নয়, কামড়েছে ফলস উইডো স্পাইডার।
পাঠকদের বনবিহারীবাবুকে মনে আছে তো? ‘বাদশাহী আংটি’র সেই বনবিহারীবাবু! লখনউতে যাঁর বাড়িতে ব্যক্তিগত চিড়িয়াখানা ছিল! সেই বনবিহারীবাবুর কাছে আফ্রিকার বিষাক্ত ‘ব্ল্যাক উইডো’ ছিল। যার বিষকে নিউরোটক্সিক বলেছিলেন তিনি। মানে এক কামড়ে একটা আস্ত মানুষকে মেরে ফেলার শক্তি রাখে ওই বিষধর সন্ধিপদী। তারই প্রায় সমবিষাক্ত এই ফলস উইডো স্পাইডার। ব্রিটেনে এই মাকড়সা প্রথম দেখতে পাওয়া যায় ১৮৯৭ সালে। এখন মূলত ব্রিটেনের দক্ষিণ দিকেই এই প্রজাতির মাকড়সা পাওয়া যায়। চিকিৎসা না করানো হলে, এই মাকড়সার কামড়ে প্রাণ নিয়েও টানাটানি হতে পারে। ম্যাথিউস অবশ্য এ যাত্রায় প্রাণের রক্ষা পেয়েছে। এক দিন পরেই তাকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। তবে পুরোপুরি সুস্থ হতে আরও বেশ কিছু দিন লেগেছিল ম্যাথিউসের।