Corona

একাধিক সমস্যার অব্যর্থ দাওয়াই, রোজ কতটা জল খাবেন? কেন?

জল কি শুধু প্রতিরোধ ক্ষমতাকেই সচল রাখে? বেশি জল পান করার ফলে আর কী কী উপকার মিলতে পারে করোনা আবহে?

Advertisement

সুজাতা মুখোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১৩:৪৬
Share:

জলে জোর দিয়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলুন। ছবি: শাটারস্টক।

করোনার ভয়ে চিরাচরিত রুটিনে ব্যাপক রদবদল হয়েছে। ডাক্তার বলা সত্ত্বেও আগে কেউ কেউ জল পান করত না তেমন। কেউ গলা ভেজাত নরম পানীয়ে, বিকেল গড়াতে না গড়াতেই বা ছুটির দুপুরে কারও হাতে হাতে থাকত অ্যালকোহলজাতীয় পানীয়ের মগ, সেই মানুষই এখন জল পান করছে ঘণ্টায় ঘণ্টায়।

Advertisement

আবার অন্য একটা দিকও আছে। নিউ নর্মাল জীবনে ভাইরাস আতঙ্ক থাকলেও সাবধানতা অবলম্বন করে বেরতে হবে। অফিস, পড়াশোনা বা পুজোর বাজার সবই শুরু হয়েছে। তাও একটা কিন্তু থেকেই যায়। নানা কাজে বাইরে বেরলেও মুখ ঢাকা থাকে মাস্কে। ফলে বাইরে গেলে খাওয়ার কোনও প্রশ্নই নেই, কারও কারও ক্ষেত্রে তাই জল খাওয়া কমে গিয়েছে।

পর্যাপ্ত জল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে আরও জোরদার করে তোলে, যা নানা ভাইরাস ঠেকানোর কাজে সাহায্য করে। কিন্তু জল কি শুধু প্রতিরোধ ক্ষমতাকেই সচল রাখে?

Advertisement

আরও পড়ুন: করোনা আবহে দোসর বৃষ্টি, হঠাৎ জ্বরে কী করবেন?

বেশি জল পান করার ফলে আর কী কী উপকার মিলতে পারে করোনা আবহে?

• পর্যাপ্ত জল খেলে ক্লান্তি, ঝিমুনিভাবের বদলে শরীরে ফিরে আসে তরতাজাভাব। এ সময় তো অনেকেই সকাল-বিকেল ব্যায়াম করছেন, ব্যায়ামের আগে ও পরে জল খেলে ভরপুর এনার্জি পাওয়া যাবে। শরীরে মাত্র ১-৩ শতাংশ জল কমে গেলে মুড সুইংয়ের সমস্যা হয়, ক্লান্ত লাগে, প্রভাব পড়ে স্মৃতিশক্তি ও মস্তিষ্কের কার্যকারিতাতেও, এমনই বলছে গবেষণা।

• সারা দিন জলের বদলে কোলা, কফি খেয়ে কাটিয়ে দিলে সন্ধ্যা হলেই মাথা যন্ত্রণা শুরু হয়, তার মূলে রয়েছে জল কম খাওয়া। পর পর কয়েক গ্লাস জল খেয়ে নিলেই মিটে যায় সমস্যা।

• কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা হঠাৎ মিটে গেলে বুঝবেন এর মূলেও আছে জল পানের অভ্যাস। নিয়মিত কম জল খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে। দিনে কয়েক গ্লাস জল বেশি খেলেই এই সমস্যার হাত থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

• পরিবারে কারও কিডনি স্টোন আছে? আপনার মধ্যেও থাকতে পারে প্রবণতা। বেশি করে জল পান করলে হয়তো সে আশঙ্কা কমে যাবে।

• মদ্যপানের অভ্যাস থাকলে প্রচুর পরিমাণে জল খেলে খানিকটা নিস্তার মিলতে পারে বলে, জানাচ্ছে গবেষণা।

জলের সঙ্গে পুদিনা পাতা কিংবা ফলের কুচি ভিজিয়েও পান করতে পারেন। ফাইল ছবি।

• ওজন নিয়ে চিন্তিত? কমে যাবে। কীভাবে? আমরা অনেকেই জানি না, শরীরে জল কমে গেলেও অনেক সময় খিদে পায়। তখন খাবার না খেয়ে এক গ্লাস জল খেয়ে একটু অপেক্ষা করলে চলে যায় খিদের বোধ। খাবার খাওয়ার আগে জল খেলে কম খাবারে পেট ভরে। গবেষণা বলছে, নিয়মিত যাঁরা খাবার খাওয়ার আগে আধ লিটার জল খান, তাঁদের ক্ষেত্রে ১২ সপ্তাহের মধ্যে অতিরিক্ত ৪৪ শতাংশ ওজন কমে। ঠান্ডা জল খেলে আরও ভাল। বেশ কয়েকটি গবেষণাপত্র বলছে, ঠান্ডা জলকে শরীরের তাপমাত্রায় নিয়ে আসতেও ক্যালোরি খরচ হয় শরীরের।

আরও পড়ুন: নাক ডাকার সমস্যায় নাজেহাল? রেহাই পেতে এই বিষয়গুলি জেনে রাখুন

সতর্কতা

কিডনি রোগ বিশেষজ্ঞ সুব্রত ভৌমিকের কথায়, “জল খেতে বলা হয়েছে বলে যেন সারাক্ষণ জল খাবেন না। সাধারণ অবস্থায় ২.৫-৩ লিটার জল খাওয়াই যথেষ্ট। খুব বেশি ব্যায়াম ও ঘরের কাজে ঘেমে নেয়ে গেলে প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ ৩.৫-৪ লিটার খেতে পারেন বড়জোর। তার বেশি নয়। কারণ অতিরিক্ত জল পানের আবার কিছু ক্ষতিকর দিকও আছে। এছাড়া কোনও রোগের কারণে যদি জল কম খাওয়ার নির্দেশ থাকে, যেমন কিডনির অসুখ, হার্ট ফেলিওর ইত্যাদি, ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া জল খাওয়া বাড়াবেন না।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement