খাওয়াদাওয়ায় অনিয়ম, শরীরচর্চায় অনীহা, এক জায়গায় দীর্ঘ ক্ষণ বসে থাকার কাজ— এ সব কারণে দিন দিন শরীরের মধ্যপ্রদেশ বেড়েই যাচ্ছে। ওজন কমানোর জন্য তাই কেউ জিমে ভর্তি হচ্ছেন, কেউ আবার কড়া ডায়েট শুরু করেছেন। তবে নানা রকম কসরত করেও দিনের শেষে ওজনের কোনও হেরফের হয় না!
সারা ক্ষণ মাথায় চলতে থাকে এত পরিশ্রম করেও ফল মিলছে না কেন? আসলে রোজের কিছু অভ্যাস অজান্তেই আমাদের ওজন বাড়িয়ে দেয়। জেনে নিন রাতের কোন অভ্যাসগুলি মেদ ঝরাতে হলে এড়িয়ে চলা উচিত।
রাতে কোন সময়ে খাচ্ছেন, ওজন ঝরাতে হলে সে বিষয়ে নজর রাখতে হবে। রাতে অনেক দেরিতে খাবার খেলে সবার আগে সেই অভ্যাসে বদল আনুন। চেষ্টা করুন রাতের খাওয়াদাওয়া ৮টার মধ্যেই সেরে ফেলার। আর তা সম্ভব না হলে খাওয়াদাওয়ার অন্তত ঘণ্টা দুয়েক পরে ঘুমোতে যান।
রাতে কী খাচ্ছেন, সেটাও নজরে রাখা জরুরি। রাতে খেতে বসে জমিয়ে ভূরিভোজ করা চলবে না। রাতের খাবার যত হালকা খাবেন, ততই ভাল। পুষ্টিবিদদের মতে ওজন ঝরাতে হলে প্রাতরাশ হবে ভারী, রাতের খাবার হবে হালকা। রাতের বেলা কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ কম খাওয়াই ভাল।
খাওয়াদাওয়া সেরেই বিছানায় চলে যান অনেকে। সঙ্গে সঙ্গে না ঘুমলেও বিছানায় শুয়ে হোয়াট্সঅ্যাপ, ইনস্টাগ্রাম, ফেসবুক ঘাঁটতে থাকেন। এতে কিন্তু বিপাকহার কমে যায়। চেষ্টা করুন খাওয়াদাওয়া করে একটু হাঁটাহাঁটি করতে। মিনিট ১৫-২০ হাঁটলেই হবে। হাঁটলে খাবার দ্রুত হজম হবে, বিপাকহারও বেড়ে যাবে।
রাতে খাওয়াদাওয়ার পর মিষ্টি খান? এই অভ্যাস বন্ধ করে ভেষজ চা খাওয়া শুরু করুন। ভেষজ চা বিপাকহার বৃদ্ধি করে, হজমেও সাহায্য করে। তাই নিয়ম করে রাতে ভেষজ খাওয়া শুরু করতে পারেন।
রাতে বেশি ক্ষণ জেগে থাকলে মাঝরাতে খিদের পেটে চিপ্স, নরম পানীয়, মিষ্টিজাতীয় খাবার খাওয়ার প্রবণতা বাড়ে। এই অভ্যাস ওজন বেড়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ হতেই পারে। তাই একান্তই যদি রাত জাগতে হয়, তা হলে মাখানা, ড্রাইফ্রুটসের মতো স্ন্যাকক্সের উপর ভরসা রাখুন।
রাতে ঘুমের অভাবে মানসিক চাপ বেড়ে যায়, সেই কারণেও ওজন বাড়ে। তাই ঘুমের সঙ্গে কোনও রকম আপস করা চলবে না। রাত জেগে ওয়েব সিরিজ় বা সিনেমা দেখার অভ্যাস থাকলে সেই অভ্যাসে রাশ টানতে হবে। একটা ওয়েব সিরিজ় দেখতে শুরু করলে কখন রাত থেকে ভোর হয়ে যায়, টের পাওয়া মুশকিল। তাই এই অভ্যাসেও লাগাম টানতে হবে।
শরীরের পর্যাপ্ত ঘুম চাই। কম ঘুমোলে শরীরে হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হয়। তাই অসময়ে, উল্টোপাল্টা খাবার খাওয়ার প্রবণতা বেড়ে যেতে পারে। ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে পর্যাপ্ত ঘুমের প্রয়োজন রয়েছে। রাতে ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমোতেই হবে।
মানসিক চাপ বাড়লে সহজে ঘুম আসতে চায় না। তাই ঘুমোনোর আগে মন শান্ত করতে খানিক ক্ষণ ধ্যান করতে পারেন। এর ফলে মন চাঙ্গা থাকবে। মেজাজও ফুরফুরে হবে। সব মিলিয়ে তাড়াতাড়ি ঘুম আসবে। ভাল ঘুম না হলে কিন্তু ওজন কখনই ঝরবে না।