‘লিপ প্লামপিং গ্লস’ কী? ছবি: সংগৃহীত।
এমনিতে লিপস্টিক পরতে ভালই বাসেন। তবে দিনের বেলা খুব বেশি মেকআপ করেন না। ‘নো মেকআপ’ লুকের জন্য তাই লিপ গ্লসই ভরসা। পুজোর আগে অনলাইনে তেমনই একটি লিপ গ্লস কিনতে গিয়ে হঠাৎ অপর্ণার চোখ আটকে গিয়েছিল ‘লিপ প্লামপিং গ্লস’ প্রসাধনীটির দিকে। লিপগ্লস সাধারণত তিন প্রকার। ‘ম্যাট’, ‘স্যাটিন’ এবং ‘গ্লসি’। তবে এই ‘প্লামপিং গ্লস’ বিষয়টি কিন্তু অপর্ণার কাছে একেবারেই নতুন। মনে প্রশ্ন জাগে, সাধারণ লিপ গ্লসের চেয়ে এই প্রসাধনীটি কি একেবারেই আলাদা? কেন ব্যবহার করবেন এটি?
রূপটানশিল্পীরা বলছেন, এই প্রসাধনীটি সাধারণ গ্লসের থেকে একেবারেই আলাদা। এর কাজও ভিন্ন। বলিউড অভিনেত্রী প্রিয়ঙ্কা চোপড়া কিংবা মৌনি রায়ের মতো পুরু ঠোঁটের শখ অনেক মহিলারই থাকে। সেই ইচ্ছা পূরণ করতে কখনও লিপ-লাইনার দিয়ে মোটা করে ঠোঁট এঁকে, আবার কখনও ‘আপার লিপ’, অর্থাৎ ঠোঁটের উপরের অংশে গাঢ় রঙের ‘শ্যাডো’ দিয়েও পুরু দেখানোর চেষ্টা করেন অনেকে। কিন্তু তাতে খুব একটা লাভ হয় না। ঠোঁটে সেই পুরু ভাব এনে দিতে পারে ‘লিপ প্লামপিং গ্লস’। তবে তা একেবারেই অস্থায়ী।
তবে পাতলা ঠোঁট নিয়ে খুঁতখুঁতানি বলিউড অভিনেত্রীদেরও রয়েছে। শিল্পা শেট্টি, ক্যাটরিনা কাইফ, শ্রুতি হাসন থেকে জাহ্নবী কপূর— অনেকেই একাধিক বার ঠোঁটে ‘ফিলার’ কিংবা ‘অগমেন্টটেশন’ করিয়েছেন। সে সব চিকিৎসা বেশ ব্যয়সাপেক্ষ। আবার, এই ধরনের ট্রিটমেন্টের কিন্তু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও রয়েছে। মডেল অভিনেত্রী উরফি জাভেদ সমাজমাধ্যমে জানিয়েছিলেন, কম খরচে পুরু ঠোঁট পাওয়ার আশায় স্বল্পপরিচিত একটি ক্লিনিক থেকে ‘ফিলার্স’ করিয়েছিলেন। অনেক কষ্ট সহ্য করেও আশানুরূপ ফল মেলেনি। উল্টে ঠোঁটের এক দিক ফুলে বিশ্রী আকার ধারণ করেছিল। সেই সব ঝক্কি পোহাতে না চাইলে বিশেষ ধরনের এই গ্লসটি কিন্তু ব্যবহার করা যেতেই পারে।
‘প্লামপিং লিপ গ্লস’ আসলে কী?
এই প্রসাধনীটি এমন ভাবে তৈরি করা হয়েছে, যাতে আপাত ভাবে পাতলা ঠোঁট পুরু দেখায়। প্লামপিং গ্লসের মধ্যে এমন কিছু উপাদান থাকে, যেগুলি ঠোঁটের মধ্যে হালকা চিনচিনে বা ঠান্ডা অনুভূতি এনে দিতে পারে। যার ফলে ঠোঁটের রক্তবাহিকাগুলি আরও বড় হয়ে ওঠে। সাময়িক ভাবে ঠোঁট দু’টি ফোলা দেখায়।
এই প্রসাধনীটি এমন কী কী উপাদান দিয়ে তৈরি হয়?
একেবারে ভেষজ উপাদানে তৈরি ‘প্লামপিং লিপ গ্লস’-এ দারচিনি, পুদিনা, এমনকি ঝাল লঙ্কার নির্যাসও ব্যবহার করা হয়। যা ঠোঁটের রক্তপ্রবাহের গতি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। অস্থায়ী ভাবে ঠোঁটে ফোলা ভাব আনতে বেশ কিছু সংস্থা এই প্রসাধনীটিতে মৌমাছির হুলের মধ্যে থাকা বিষও ব্যবহার করে থাকে।
বিশেষ ধরনের এই গ্লসটি কি ঠোঁটের জন্য ক্ষতিকর?
ত্বকের চিকিৎসকেরা বলছেন, ‘প্লামপিং লিপ গ্লস’ সাধারণত ঠোঁটের কোনও ক্ষতি করে না। তবে এই ধরনের প্রসাধনী নিয়মিত মাখা যায় না। আবার, স্পর্শকাতর ত্বকের জন্য সব ধরনের প্রসাধনী উপযুক্ত নয়। তাই বিশেষ ধরনের এই গ্লস থেকে ত্বকের অ্যালার্জি-জনিত সমস্যাও দেখা দিতে পারে।
‘প্লামপিং লিপ গ্লস’ মাখার পর ঠোঁটে কত ক্ষণ ফোলা ভাব থাকে?
রূপটানশিল্পীরা বলছেন, এই ধরনের প্রসাধনীর মেয়াদ দীর্ঘস্থায়ী হয় না। বড়জোর ঘণ্টাখানেক। তবে ঠোঁটের পুরু ভাব কত ক্ষণ থাকবে, তা গ্লসের মধ্যে থাকা উপাদানের উপরেও নির্ভর করে।
এই ধরনের গ্লস কোথায় কিনবেন? দামই বা কত?
অনলাইন ই-কমার্স সাইটগুলিতে নানা ধরনের প্লামপিং লিপ গ্লস পাওয়া যায়। কোনওটি স্বচ্ছ, কোনওটিতে আবার হালকা রঙের ছোঁয়াও থাকে। দামও সাধ্যের মধ্যেই। তবে কেনার আগে অবশ্যই গ্লসের মধ্যে কোন কোন উপাদান রয়েছে, তা দেখে নিতে হবে।