নীতার পছন্দের শাড়ি পাবেন কোথায়? ছবি: সংগৃহীত।
হিরে-জহরতের গয়না থেকে ঐতিহ্যপূর্ণ সাবেক শাড়ি— নীতা অম্বানীর অসাধারণ সংগ্রহের দিকে চোখ থাকে সকলেরই। পুত্র, কন্যার বিয়ে হোক বা প্রাক্-বিবাহের অনুষ্ঠান, সকলকে ছাপিয়ে নীতা ধরা দেন মোহময়ী রূপে। গয়না, শাড়ি এবং সাজগোজের অপূর্ব মিশেলে প্রতি বারই সকলে মোহিত হন। একধারে তিনি অম্বানী পরিবারের বৌ তথা মুকেশ অম্বানীর স্ত্রী। অন্য দিকে, রিলায়্যান্স ফাউন্ডেশনের চেয়ারপার্সন নীতা। তাঁর অধরা এমন কিছুই নেই। তা সে যত মূল্যবানই হোক, পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে জহুরির মতো সেরার সেরা জিনিসটি বাছাই করে এনে নিজের সংগ্রহে রাখেন তিনি। তবে, শাড়ির ব্যাপারে নীতা খুবই বিচক্ষণ। তাঁর সবচেয়ে পছন্দের শাড়ি হল কাঞ্চিপট্টু সিল্ক। বিশ্বের দরবারে নীতা ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেন এই সাবেক শাড়ি পরেই।
নীতার পছন্দের এই শাড়িটির জন্ম কোথায়?
ভারতের ইতিহাস, ঐতিহ্য বহনকারী কাঞ্চিপট্টু শাড়ি বোনা হয় দক্ষিণ ভারতের তামিল নাড়ুর কাঞ্চিপুরম শহরে। শুধু সিল্কের গুণমান নয়, শাড়ির উজ্জ্বল রং, তার সূক্ষ্ম কারুকাজের জন্যই দক্ষিণ ভারতের সিল্কের পৃথিবীজোড়া নাম। প্রায় ৪০০ বছর আগে চোল রাজত্বের সময়ে এই কাঞ্চিপট্টু শাড়ির জন্ম। শোনা যায়, তামিলনাড়ুর পাশের রাজ্য অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে আসা পরিযায়ী তাঁতিদের হাতেই প্রথম এই শাড়ি বোনা হয়। বিভিন্ন বংশের রাজত্ব, কালের বিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে শাড়ি এবং তার কারুকাজেও নানা পরিবর্তন এসেছে। ক্রমে এই কাঞ্চিপট্টু শাড়ি হয়ে উঠেছে তামিল নাড়ুর নিজস্ব সম্পদ। বহন করে চলেছে রাজ্যের ইতিহাস।
শাড়ির ব্যাপারে নীতা খুবই বিচক্ষণ। ছবি: সংগৃহীত।
কাঞ্চিপট্টু শাড়ির বৈশিষ্ট্য কী?
দক্ষিণ ভারতের সিল্ক শাড়িগুলি দেখতে অনেকটা একই রকম। শাড়িতে রঙের ব্যবহার এবং জরির কারুকাজ দেখে তা কোন রাজ্যের আলাদা করে বোঝা মুশকিল। তবে কাঞ্চিপুরম শাড়িটি অন্যান্য সিল্কের চেয়ে আলাদা তার বুননশৈলির জন্য। এই শাড়ি বোনার বিশেষ একটি পদ্ধতি রয়েছে। যার নাম হল ‘কোরভাই’। শাড়ির জমি, আঁচল এবং পাড় আলাদা করে বোনার রীতিই ‘কোরভাই’ নামে পরিচিত। প্রতিটি অংশ আলাদা করে বুনে, ইন্টারলক পদ্ধতিতে জুড়ে গোটা একটি কাঞ্চিপট্টু শাড়ি তৈরি করা হয়। শাড়ি তৈরিতে ব্যবহার করা হয় আসল মালবেরি সিল্ক এবং জরি। শাড়ির আঁচল, জমি এবং পাড়ে যে কারুকাজ থাকে, তার সঙ্গে অঙ্গাঙ্গী ভাবে জড়িয়ে রয়েছে ভারতের পুরাণ। তবে কালের নিয়মে অনেক শাড়ির কারুকাজেই নতুনত্বের ছোঁয়া দেখা যায়। অনেকের কাছেই এই কাঞ্চিপট্টু শাড়ি অধিক পরিচিত কাঞ্চিপুরম বা কাঞ্জিভরম শাড়ি নামে।