চুল যত্নে রাখবে গাছ। ছবি: ফ্রিপিক
ঘন চুলে ঢেউ খেলবে, কার না স্বপ্ন থাকে! কিন্তু ঘন চুল দূরের কথা, আয়নার সামনে দাঁড়ালেই কি মনখারাপ হয়ে যায়? ঋতুভেদে এক এক জনের সমস্যা এক এক রকম। কখনও মাথায় হাত বোলালে গোছা গোছা চুল উঠে আসে, কখনও খুশকির চোটে মাথায় চুলকানি। কারও সমস্যা ডগা ফাটার, কারও আবার তেলচিটে ভাবের। সমস্যা জানা থাকলেও সমাধান কোথায়?
তেল, শ্যাম্পু বদলে সাময়িক হয়তো সুরাহা হয়, কিন্তু স্থায়ী সমাধান কোথায়? চুলের সমস্যার সমাধানে ব্যবহার করতে পারেন ৩ ভেষজ ও ফুল। এতে থাকা ভিটামিন ও খনিজে ঘন হবে কেশরাশি। রাসায়নিকের জেরে ক্ষতির সম্ভাবনাও থাকবে না।
অ্যালো ভেরা
শুধু চুলের পরিচর্যা নয়, ত্বকের যত্নেও অ্যালো ভেরার ব্যবহার হয়ে আসছে দীর্ঘ দিন ধরে। অ্যালো ভেরা গাছটিকে আয়ুর্বেদে বলা হয় ‘ঘৃতকুমারী’। এতে রয়েছে ভিটামিন এ, সি এবং ই। জ়িঙ্ক এবং ম্যাগনেশিয়ামও থাকে এতে। অ্যালো ভেরা প্রদাহ কমানোর পাশাপাশি ত্বক ও চুলের আর্দ্রতা বজায় রাখতে সাহায্য করে। অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। জ়িঙ্ক চুলের ভেঙে যাওয়া, ঝরে পড়া রোধ করে।
কী ভাবে ব্যবহার করবেন?
অ্যালো ভেরা গাছের পাতা থেকে সরাসরি শাঁস বার করে ব্যবহার করা যায়। তবে এতে যেন সবুজ টুকরো বা গাছের অংশ লেগে না থাকে। অ্যালো ভেরার শাঁসের সঙ্গে ২ থেকে ৩ চা-চামচ নারকেল তেল মিশিয়ে নিন। চুলে শ্যাম্পু করার পর মিশ্রণটি কন্ডিশনার হিসাবে লাগিয়ে নিতে পারেন। কন্ডিশনার চুলে কয়েক মিনিট রেখে ভাল করে ধুয়ে ফেলতে হয়।
জবা
চুলের পরিচর্যায় জবাফুলের ব্যবহারও চলে আসছে প্রাচীন কাল থেকেই। এতে রয়েছে ফ্ল্যাভনয়েডস এবং অ্যামাইনো অ্যাসিড। জবাফুলে চুলের ফলিকলের স্বাস্থ্য ফেরাতে ও নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে। চুলের অন্যতম জরুরি উপাদান কেরাটিন প্রোটিন। অ্যামাইনো অ্যাসিড কেরাটিন তৈরিতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। খুশকি ও ডগা ফাটার সমস্যাতেও জবাফুল কাজে আসে।
কী ভাবে ব্যবহার করবেন?
৩-৪টি জবাফুল জলে ফুটিয়ে নিন। তারপর ছেঁকে সেই জল বোতলে ভরে রাখুন।
চুলে জবাফুলের জল স্প্রে করতে পারেন। আবার তেলের সঙ্গে মিশিয়েও নিতে পারেন।
ব্রাহ্মী
শরীর ভাল রাখতে ব্রাহ্মী শাক খেতে বলা হয়। কিন্তু জানেন কি, চুল মজবুত করতেও এর ভূমিকা কিছু কম নয়? চুলের গোড়ায় রক্ত সঞ্চালনে, চুলের বাড়-বৃদ্ধিতে সহায়ক এই ভেষজটি। ডগা ফাটা কমাতে, চুলে ঔজ্জ্বল্য আনতে, মাথার ত্বকের সংক্রমণ ঠেকাতে সাহায্য করে ব্রাহ্মী।
কী ভাবে ব্যবহার করবেন?
ব্রাহ্মী শাক শুকিয়ে গুঁড়িয়ে নিন। এর সঙ্গে মেশাতে হবে কেরিয়ার অয়েল, যেমন নারকেল তেল, অলিভ অয়েল, জবার তেল।
আরও ভাল পেতে এর সঙ্গে তুলসী, আমলকি কিংবা নিমপাতাও বেটে মিশিয়ে নিতে পারেন।
সমগ্র মিশ্রণটি পরিষ্কার চুলে ভাল করে মেখে ঘণ্টাখানেক রেখে ধুয়ে ফেললেই মিলবে একরাশ ঘন চুল। তবে এক বার ব্যবহারে নয়, বেশ কয়েক বার মাখার পরেই ধীরে ধীরে চুলের সমস্যার সমাধান সম্ভব।