পায়ের গাঁটে ব্যথার অন্যতম কারণ রক্তে ইউরিক অ্যাসিড বৃদ্ধি। ছবি: আইস্টক।
পায়ের আঙুলে ব্যথা, গোড়ালিতে জ্বালা কিংবা নানা অস্থিসন্ধি ফুলে গিয়ে তীব্র যন্ত্রণা— এই সব শারীরিক অসুবিধা আমাদের কাছে নতুন নয়। বরং কর্মব্যস্ত জীবন ও পরিবর্তিত খাদ্যাভ্যাস যে সব অসুখকে আরও বড় আকারে ডেকে আনছে, তার মধ্যে অন্যতম রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া। তবে অ্যাপেল সাইডার ভিনিগারের জাদুতে এই অসুখ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আনা যায়।
এমনিতে খাবার থেকে উৎপন্ন ইউরিক অ্যাসিড রক্তে মিশে তা কি়ডনিতে গিয়ে পৌঁছয়। কিডনি এই টক্সিক পদার্থকে ছেঁকে মূত্রের মাধ্যেম দেহের বাইরে বার করে দেয়। কিন্তু যকৃত যদি নির্গত ইউরিক অ্যাসিডের চেয়ে বেশি পরিমাণ ইউরিক অ্যাসিড তৈরি করে, তখন কিডনির পক্ষে সেই অতিরিক্ত অ্যাসিডকে বার করা সম্ভবপর হয় না। ফলে রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ বেড়ে যায়। অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাসই এর জন্য মূলত দায়ী।
যত দিন এগোয়, ততই হাঁটু-সহ নানা অস্থিসন্ধিতে ইউরিক অ্যাসিড জমা হতে থাকে এবং এতে অস্থিসন্ধি ফুলে গিয়ে ব্যথা হতে থাকে। চিকিৎসকদের মতে, ইউরিক অ্যাসিড বেড়ে গেলেই প্রাথমিক ভাবে ওষুধের শরণ নিতে হবে এমন নয়। বরং প্রথম অবস্থায় খাদ্যাভ্যাসে কিছু পরিবর্তন এনে একে নিয়ন্ত্রণ করার পথ বাতলান তাঁরা। একেবারেই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে তখনই ওষুধ প্রয়োজন হয়।
আরও পড়ুন: ভুঁড়ি বাড়ছে? প্রতি দিন নিয়ম করে খান এই স্মুদি, দ্রুত ঝরবে অতিরিক্ত মেদ
অস্থিসন্ধি ফুলে ব্যথা শুরু হয় এই ইউরিক অ্যাসিডের কারণে। ছবি: আইস্টক।
পুরুষের ক্ষেত্রে রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের স্বাভাবিক মাত্রা প্রতি ডেসিলিটারে ৩.৪–৭ মিলিগ্রাম এবং মহিলার ক্ষেত্রে প্রতি ডেসিলিটারে ২.৪–৬ মিলিগ্রাম। এর থেকে বাড়লেই প্রয়োজন সতর্কতার। নামমাত্র খরচে অ্যাপেল সাইডার ভিনিগারের মাধ্যমে এই অসুখ কী ভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়, জানেন?
প্রতি দিন দু’-তিন বার এক গ্লাস জলে এক চামচ অ্যাপেল সাইডার ভিনিগার যোগ করে খেলে শরীরের এই টক্সিক পদার্থ জমে থাকতে পারে না। অনেক চিকিঞসকও ইউরিক অ্যাসিডের রোগীদের এমন পরামর্শ দিয়ে থাকেন। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ সুবর্ণ গোস্বামীর মতে, ‘‘অ্যাপেল সাইডার ভিনিগারের ম্যালিক অ্যাসিডই এর জন্য মূলত দায়ী। ইউরিক অ্যাসিডের ক্রিস্টালগুলিকে ভেঙেচুরে দেয়। শরীরের গাঁটে গাঁটে সে সব জমতে দেয় না। তবে কেবল অ্যাপেল সাইডার ভিনিগার ছাড়াও শরীরের প্রয়োজন অনুযায়ী পর্যাপ্ত জলও খান। শরীর থেকে যত বেশি টক্সিক পদার্থ বের করতে পারবেন ততই ইউরিক অ্যাসিড থেকে দূরে থাকার সুযোগ বাড়বে।’’
আরও পড়ুন: নিরীহ টম্যাটোয় লঙ্কার ঝাল! এ বার তা-ও সম্ভব, বলছেন বিজ্ঞানীরা
অ্যাপেল সিডার ভিনিগারেই রয়েছে ইউরিক অ্যাসিড কমানোর জাদু। ছবি: আইস্টক।
ইউরিক অ্যাসিড হলে কিছু দানাশস্য, উচ্চ প্রোটিনযুক্ত খাবার, রড মিট, রেড ওয়াইন, সামুদ্রিক মাছ ইত্যাদি খাবারে নিষেধাজ্ঞা আসে। মেনে চলুন সে সব নিয়মও।
(ইতিহাসের পাতায় আজকের তারিখ, দেখতে ক্লিক করুন — ফিরে দেখা এই দিন।)