অ্যালঝাইমার্স নিয়ে আলোচনায় মনোবিদ। ছবি: সংগৃহীত।
বয়স বাড়লে স্মৃতি মাঝেমাঝেই বিশ্বাসঘাতকতা করে। প্রয়োজনীয় জিনিস সকালে হয়তো কোথাও রেখেছেন, দুপুর গড়াতেই তা মনে করতে না পারা। দীর্ঘ দিনের প্রতিবেশীকে সামনে দেখেও চিনতে না পারা। বয়স বাড়লে স্মৃতি মাঝেমাঝে লুকোচুরি করে। বয়সজনিত কারণেই যে সব সময়ে ভুলে যাওয়ার সমস্যা দেখা দেয়, তা নয়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় চেনা মুখ, নিজের জিনিস, সহজ কথা মনে রাখতে না পারার নেপথ্যে রয়েছে অ্যালঝাইমার্স। ভুলে যাওয়ার সমস্যা অনেকেরই হয়। কিন্তু কেউ অ্যালঝাইমার্সের শিকার কি না, তা বোঝা সহজ নয়।
রোগের লক্ষণগুলি নিয়েই আনন্দবাজার অনলাইনের ফেসবুক এবং ইউটিউব গত সপ্তাহে আলোচনা করেছিলেন অনুত্তমা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ পর্বে অ্যালঝাইমার্স প্রতিরোধ সম্ভব কি না, সেই বিষয়টি নিয়ে আলোচনায় বসলেন মনোবিদ। গত পর্বের মতো এ সপ্তাহেও মনোবিদের সঙ্গে ছিলেন চিকিৎসক আবির মুখোপাধ্যায়। প্রতি পর্বের আগেই অনুত্তমার কাছে পাঠানো যায় প্রশ্ন। আলোচনার বিষয় ভুলে যাওয়া হলেও প্রতি সপ্তাহের এ পর্বে ই-মেলে তেমন মনোবিদকে প্রশ্ন পাঠাতে ভোলেননি অনেকেই। সুব্রত নামে এক ব্যক্তি জানতে চেয়ে চিঠি লিখেছেন, ‘‘অ্যালঝাইমার্স প্রতিরোধ করতে কি দৈনিক জীবনযাপনের কোনও ভূমিকা আছে? ইদানীং দেখছি এই সমস্যা আরও বেড়ে গিয়েছে। আমাদের কি কিছু করণীয় আছে?’
চিকিৎসকের উত্তর, ‘‘অতিরিক্ত মানসিক চাপের কারণেও কগনিটিভ ডিসফাংশন হতে পারে। মানসিক উদ্বেগের সঙ্গে ভুলে যাওয়া ওতপ্রোত ভাবে জড়িত। তবে এই অসুখ ঠেকাতে আমাদের জীবনযাপনের দিকে নজর দিতে হবে। যে ধরনের জীবনযাপন আমাদের হৃদ্রোগের ঝুঁকি কমাবে, সেই একই ধরনের জীবনযাপন ডিমেনশিয়াও কমাবে। কেউ যদি ধূমপান করেন, তা হলে সেই অভ্যাস বন্ধ করতে হবে। মদ্যপানের ক্ষেত্রেও পরিমিত মদ্যপান করা জরুরি। একসঙ্গে ওজনও নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে অ্যালঝাইমার্সের ঝুঁকি কমাতে হলে। ওজন বশে রাখলে ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি অনেকাংশে কমে যায়। ডিমেনশিয়া তো আসলে বার্ধক্যের অসুখ। তাই ডিমেনশিয়া যদি আটকে অন্তত ৮০ বছর পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া যায়, তা হলেও তো সুস্থ থাকা যায়। এ ছাড়াও ‘কগনিটিভ ফাংশন’ আরও সক্রিয় করে তোলার ক্ষেত্রে কয়েকটি দিকে নজর দেওয়া জরুরি। মানসিক ভাবে ভাল থাকতে হবে। মনের যত্ন নিতে হবে। পছন্দের কাজ করতে হবে। মস্তিষ্ককে নিস্তরঙ্গ ভাবে বয়ে যেতে দিলে চলবে না। মাথা খাটাতে হবে।’’