৩০ শয্যার ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্র পাঁচ জন চিকিৎসক নিযুক্ত রয়েছেন। নার্স–স্বাস্থ্য কর্মী মিলিয়ে রয়েছেন প্রায় ৩০ জন। কিন্তু বুধবার সকাল থেকেই চিকিৎসক ছিল না ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্র। এমনকী সর্পদষ্ট এক রোগীকে অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার সুপারিশ জানিয়েই দায়িত্ব ঝেড়ে ফেলতে চাইছিলেন স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কর্মীরা। আর তাতেই ছড়াল বিক্ষোভ। রোগীর পরিজনরা স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ভিতরে কর্মীদের আটকে রেখে দরজায় তালা দিয়ে দেন। জেলা স্বাস্থ্য দফতররের এক কর্তা দুই চিকিৎসক নিয়ে হাজির হলে তবে বিক্ষোভ ওঠে। বুধবার এমন ঘটনারই সাক্ষী রইল পাঁশকুড়া ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র।
জেলা স্বাস্থ্য দফতর ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পাঁশকুড়ার উত্তর মেচগ্রামে ৩০ শয্যা বিশিষ্ট ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে বর্তমানে ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক, একজন আয়ুর্বেদ চিকিৎসক-সহ মোট পাঁচজন চিকিৎসক রয়েছেন। এদের মধ্যে এক মহিলা চিকিৎসক মাতৃত্বকালীন ছুটিতে রয়েছেন। অন্য তিনজন চিকিৎসকও অসুস্থতার কারণে ছুটিতে রয়েছেন। আর ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক কানাইলাল দোলাই নিজেও এ দিন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আসেননি। ফলে বুধবার সকাল থেকেই ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কোনও চিকিৎসক ছিলেন না। এ দিন সকালে সর্পদষ্ট হয়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যান মেচগ্রামের গৃহবধূ শামিমা বিবি। কিন্তু হাসপাতালে কোনও চিকিৎসক ছিলেন না। স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এসেও চিকিৎসার ব্যবস্থা না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন ওই পরিবারের লোকজন। বর পেয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সামনে জড়ো হয়। ক্ষুদ্ধ বাসিন্দারা অবিলম্বে চিকিৎসকদের আসার দাবি তুলে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ভিতরে থাকা নার্স-স্বাস্থ্যকর্মীদের আটকে দরজায় তালা মেরে দেন। সকাল ৯ টা থেকে শুরু হওয়া বিক্ষোভ চলে দুপুর আড়াইটে পর্যন্ত।
অসুস্থ শামিমার শ্বশুর শেখ রফিক মহম্মদ বলেন, ‘‘ হাসপাতালে এসে পরিষেবা পাব না! বাধ্য হয়ে অন্য জায়গায় নিয়ে যেতে হয় শামিমাকে।’’এ দিন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আসা গৃহবধূ সুমি সরকার প্রসব যন্ত্রনায় কাতরাচ্ছিলেন। চিকিৎসক না থাকায় পরিবারের লোকজন বাধ্য হয়ে তাঁকে অন্যত্র যান। স্থানীয় বাসিন্দা শামিম আখতারের কথায়, ‘‘ এখানে নিয়মিত চিকিৎসক না থাকায় আমাদের বহু দিন ফিরে যেতে হয়েছে। বাধ্য হয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চেয়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে তালা দিয়েছি।’’ বিক্ষোভের জেরে পরিস্থিতি সামাল দিতে দুই চিকিৎসককে নিয়ে ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যাওয়া জেলা উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক কিশলয় দত্ত বলেন, ‘‘এই ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসক নিযুক্ত রয়েছেন। তবে তাঁরা অনেকে অসুস্থ থাকায় ছুটিতে রয়েছেন। ফলে সমস্যা হয়েছে।’’ কিন্তু ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক নিজেও এদিন অনুপস্থিত ছিলেন কেন? ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক কানাইলাল দোলুইয়ের সঙ্গে মোবাইল বন্ধ থাকায় কোনও উত্তর মেলেনি।